যুদ্ধ বিরতির চুক্তি ভঙ্গ করে ফিলিস্তিনে বর্বর ইসরায়েলী হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত। 

আজ ২১মার্চ ২০২৫ শুক্রবার বাদ জুমা নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব চত্বরে মহানগর সহ-সভাপতি হাফেজ মাওলানা আবু সাঈদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন রাকিব এর সঞ্চালনায় ফিলিস্তিনে বর্বর ইসরায়েলি হামলা ও ভারতে মুসলমানদের ওপর আগ্রাসনের প্রতিবাদে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে সিনিয়র সহ সভাপতি 
মাওলানা আবু সাঈদ বলেন, ‘আমরা বিশ্বসভ্যতাকে জানিয়ে দিতে চাই বেলফোর ঘোষণা ও ব্রিটিশ মেন্ডেডের মধ্য দিয়ে যে অবৈধ ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল, প্রথমেই সেই মেন্ডেডগুলা ও ঘোষণাগুলোকে বাতিল ঘোষণা করতে হবে। অর্ধকোটি জনসংখ্যার যে ফিলিস্তিন, যার ছিল ২৮ হাজার বর্গমাইলের একটি স্বাধীন ভূখণ্ড। অবৈধ দখলদার ইসরায়েল সেই ফিলিস্তিনকে দখল করতে করতে আজ তার আয়তন হচ্ছে মাত্র ৬ হাজার বর্গমাইল। আমরা বিশ্ববাসীকে বলতে চাই, ইসরায়েলের অবৈধ দখলদারিত্ব বন্ধ করতে হবে। সেখানে মানুষের যে মৌলিক অধিকার, তার কোনোটাই বাস্তবায়ন করতে দেয়া হচ্ছে না। আজকে সেখানে ত্রাণ পাঠানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে।’
আজকে সাধারণ মানুষ, শিশু, বৃদ্ধরাও ফিলিস্তিনে নিরাপদ নয়। আমরা জাতিসংঘ, বিশ্বের মানবতাকামী সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানাই অচিরেই ইসরায়েলকে বয়কট করুন। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী মানুষের যৌক্তিক দাবি মেনে নিন। অন্যথায় বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায় বসে থাকবে না। এ দেশের তৌহিদী জনতা বসে থাকবে না। আমরা ইসরায়েলের সেই বর্বরতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি। ফিলিস্তিনে বর্বরতম হামলা বন্ধের জন্য অবিলম্বে মধ্যপ্রাচ্যের সকল মুসলিম দেশকে সম্মিলিতভাবে ইসরায়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা ও প্রতিবাদ জানানোর আহবান জানাচ্ছি।
রমজান মাসে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে মুসলমানদের ওপর উগ্র হিন্দুদের আগ্রাসন ও মুসলিম হত্যার প্রতিবাদে  অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ভারতের বিরুদ্ধে নিন্দা জানানোর আহবান জানাচ্ছি। এছাড়াও দেশের সকল নাগরিককে ইসরায়েল ও ভারতের পণ্য বয়কট করার আহবান জানান বক্তারা। 
বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে মহানগরীর সহ-সভাপতি মুফতি রশীদ আহমদ, জনাব নূর আলম, মাওলানা মীর আহমাদুল্লাহ, সহ-সাধারণ সম্পাদক মাওলানা রবিউল ইসলাম, সহ-সাধারণ সম্পাদক মুফতি দেলোয়ার হোসাইন, মাওলানা নুরুজ্জামান, জনাব মনির হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি সাকিব সাইফী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা বাছির, সহ-প্রশিক্ষণ  সম্পাদক মাওলানা হাবীবুল্লাহ, বায়তুলমাল সম্পাদক হাফেজ মামুনুর রশীদ, সহ-প্রচার সম্পাদক মাওলানা শাহআলম জিমাম, সহ-প্রচার সম্পাদক মাওলানা লোকমান, সহ-দফতর সম্পাদক মাওলানা আব্দুল্লাহ, যুব মজলিস নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর সভাপতি মাওলানা ফাতীহ সোলাইমান, যুব মজলিস পঞ্চগড় জেলার দায়িত্বশীল মাওলানা ওমর ফারুক, ছাত্র মজলিস নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর সভাপতি নাজমুল হক রনি বক্তব্য প্রদান করেন।
এছাড়াও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর আওতাধীন বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড শাখার বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, যুব মজলিস ও ছাত্র মজলিসের দায়িত্বশীলরা উপস্থিত ছিলেন।
বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে মিছিলটি প্রেসক্লাব থেকে বের হয়ে চাষাড়া মোড় ঘুরে আবার প্রেসক্লাবের সামনে এসে মোনাজাতের মাধ্যমে কর্মসূচি সমাপ্ত হয়।

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ইসর য় ল র বর বর

এছাড়াও পড়ুন:

সিদ্ধিরগঞ্জে সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি খাল দখল করে চাঁদাবাজি!

সিদ্ধিরগঞ্জের হীরার্ঝিল আবাসিক এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি (ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা) খাল দখল করে দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে। এর ফলে ডিএনডি খালটি ফের সংকুচিত হতে শুরু করেছে। পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। 

এদিকে এই এলাকাটি শিমরাইল পাম্প স্টেশনের নিকটবর্তী এলাকা হওয়ায় দোকানগুলোর কারণে ঠিকমতোন পানি সরবরাহ হতে পারছে না। তবে প্রশাসনের ভাষ্য, খুব শিগগিরই এখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।  

বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে নাসিক ১নং ওয়ার্ডের হীরাঝিল আবাসিক এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বালু খালপাড় দখল করে হরেক রকমের ছোট-বড় প্রায় ২৫টি দোকান বসানো হয়েছে। হাবিবুল্লাহ হবুলের মালিকানাধীন হাবিবুল্লাহ টাওয়ার থেকে শুরু করে মোক্তার হোসেন সরকারের মালিকানাধীন বিএম ভবন, সিদ্দিকুর রহমানের মালিকানাধীন মমতাজ ভিলা, নূর মোহাম্মদ টাওয়ার, নুরুল হুদা’র বাড়ির সামনে এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। 

এর বিনিময়ে প্রতি দোকান থেকে টাকা তুলছেন স্ব স্ব বাড়ির মালিকরা। চাঁদা তোলার বিষয়টি কয়েকজন বাড়িওয়ালা অকপটে স্বীকারও করেছেন। 

এদিকে, দোকানগুলোর কারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নির্মিত ওয়াকওয়ে দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে পথচারীদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। পাশাপাশি হীরাঝিল এলাকাবাসীকেও ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, হীরাঝিল আবাসিক এলাকা একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। যানবাহন ও মানুষের চাপ বেশি থাকায় এই এলাকায় সবসময় যানজট লেগেই থাকে। চলাচলের সুবিধার্তে এলাকাবাসী ডিএনডি খালের পাড় দিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যস্থলে যেতেন। কিন্তু কয়েকজন বাড়িওয়ালা এহেন কর্মকান্ডের কারণে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। 

এসব দোকানের কারণে খালের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পানি নিষ্কাশন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং চাঁদাবাজি প্রশাসন বন্ধ করতে না পারলে আগামীতে ফের বন্যা হওয়ার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। তাই এ বিষয়ে প্রশাসনের দ্রুত প্রদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।

এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ‘কাবাব বাড়ি’ ভবনের মালিক মো. রফিক বলেন, আমার বাড়ির সামনে ডিএনডি খাল দখল করে আমি কোনো দোকান বসাই নি। আমি নিজেও চাই এখানে কোনো দোকান না বসুক। কিন্তু আমি যতটুকু শুনেছি টিএইচ তোফা নামের এক ব্যক্তি এই দোকানগুলো বসিয়েছেন। আমি অনেক চেষ্টা করেছে দোকানগুলো সরিয়ে দেওয়ার। আর এখানে দোকান বসিয়ে টাকা তোলার প্রশ্নই উঠে না।

একই অভিযোগ স্বীকার করে মমতাজ ভিলার মালিক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, অন্যসবাই দোকান বসিয়েছে। আমি তা দেখাদেখি ২টি দোকান বসিয়েছি। এটা আমার অপরাধ হয়েছে তা আমি নিজেও বুঝি। আমি মূলত সবার দেখাদেখি দোকান বসিয়েছি।

নুরুল হুদা নামের আরেক বাড়িওয়ালা বলেন, আমি দোকান বসিয়েছি। কিন্তু ওইখান থেকে কোনো অর্থ আদায় করি না। চাইলে এ বিষয়ে তদন্ত করা হতে পারে। আর এখানে দীর্ঘদিন ধরেই দোকান ছিল।

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনূর আলম বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়টি আমাদের জানা নেই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।  

নারায়ণগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুভ আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। তবে অভিযোগ যেহেতু পেয়েছি তাহলে অবশ্যই ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হবে। ডিএনডি খালপাড় থেকে স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রথমে আমরা একাধিকবার তাদের নোটিশ পাঠাবো।

যদি তারা কথা না শোনেন তাহলে আইন অনুযায়ী উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। খাল দখলের বিরুদ্ধে আমরা সবসময় জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি।

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন খাল পরিষ্কার করা শুরু করেছি। ডিএনডি খালসহ যেকোনো খাল এভাবে দখল হয়ে থাকলে দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি শিগগিরই এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।  

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ৮ ডিসেম্বর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নে ডিএনডি প্রকল্প হাতে নেয় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শুরুতে প্রকল্পের বাজেট ৫৫৮ কোটি টাকা ধরা হলেও তা বাস্তবায়নে সবমোট ১৩০০ কোটি টাকা খরচ হয়। 

২০২৫ সালের জুন মাসে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর প্রকল্প বাস্তবায়ন করাকালে তখন খালটি দখল না হলেও প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর পরই হীরাঝিল এলাকার কয়েকজন বাড়িওয়ালা ডিএনডি খাল দখল করে দোকান বসানো শুরু করে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাইলস্টোন স্কুলে হতাহতদের স্মরণে দোয়া মাহফিল ও মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
  •  শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের স্বাধীনতা চান নাই : টিপু 
  • নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাথে গিয়াসউদ্দিনের মতবিনিময় সভা
  • সোনারগাঁয়ে ইসলামী আন্দোলনের পরিচিতি সভা ও শপথ গ্রহণ  
  • বন্দর ২০নং ওয়ার্ড বিএনপির প্রাথমিক সদস্য ফরম বিতরণ 
  • তেল চোর দেলোয়ারকে ধরে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করবেন : টিপু
  • নারায়ণগঞ্জে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ৫ বিএনপি নেতা বহিষ্কার
  • সিদ্ধিরগঞ্জে ইজিবাইকের ধাক্কায় শিশুর মৃত্যু
  • কলাগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির প্রাথমিক সদস্য নবায়ন ও সদস্য ফরম বিতরণ
  • সিদ্ধিরগঞ্জে সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি খাল দখল করে চাঁদাবাজি!