যৌন হয়রানির তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানালেন অভিনেত্রী অবনীত
Published: 22nd, March 2025 GMT
একজন শিশুশিল্পী হিসাবে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন তিনি, আজ সিনেমায় প্রধান চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে। তবে এই যাত্রা মোটেই সুখকর ছিল না, একাধিকবার অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল অভিনেত্রী অবনীত কৌরের সামনে। দীর্ঘ এই অভিনয় ক্যারিয়ারে নানা সময় যৌন হয়রানির মুখোমুখি হতে হয়েছে তাকে। সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যম হাউটার ফ্লাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে এ প্রসঙ্গে কথা বলেছেন অবনীত।
অভিনেত্রী বলেন, ‘আমার তখন আট বছর বয়স। নাচের মহড়ায় আমাকে ইচ্ছাকৃতভাবে স্পর্শ করা হয়েছিল। আমি আমার মাকে গোটা বিষয় বলি। আমার মা আমাকে খারাপ স্পর্শ আর ভালো স্পর্শের মধ্যে পার্থক্য বোঝান। আট বছর বয়সে হয়তো এটা আমার না বুঝলেও চলত, কিন্তু আমার মা আমাকে সবকিছু খোলাখুলিভাবে জানান। মায়ের বলা কথা শোনার পর থেকে আমি সবকিছুর জন্য প্রস্তুত থাকতাম।’
অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘তবে শুধু যৌন নিগ্রহ নয়, একবার মানসিক নির্যাতনও করা হয়েছিল আমাকে। তখন ১১ কি ১২, একটা ঘটনা এমন ঘটেছিল, যা আমাকে সত্যিই ভয় পাইয়ে দিয়েছিল। শুটিং চলাকালে আমি একটা জিনিস বারবার ভুল করছিলাম, তখন হঠাৎ করে মাইক অন করে আমাকে কড়া ভাষায় তিরস্কার করতে শুরু করেন পরিচালক।’
অবনীত বলেন, ‘মাইক অন করে পরিচালক বলেন, আমি কিছুই করতে পারব না। ইন্ডাস্ট্রিতে কোনো দিন সফল হতে পারব না আমি। আমাকে গালিগালাজও করা হয়েছিল সেদিন। মা–বাবা সেটে না থাকায় আমি ভীষণভাবে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। পরে সবকিছু মা–বাবার কাছে খুলে বলেছিলাম, তবে আত্মবিশ্বাস ভেঙে গিয়েছিল অনেকটাই।’
আট বছর বয়সে রিয়ালিটি শো ‘ড্যান্স ইন্ডিয়া ড্যান্স লিটল মাস্টার’ শোয়ের হাত ধরে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন অবনীত। ২০১২ সালে ‘মেরি মা’ সিনেমায় অভিনেত্রী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। বেশ কয়েকটি টিভি শোয়ে শিশুশিল্পী হিসেবে কাজ করতে দেখা যায় তাকে।
২০১৪ সালে ‘মর্দানি’ সিনেমায় কাজ করে প্রথম বড় পর্দায় কাজ শুরু করেন অভিনেত্রী। ২০২৩ সালে ‘পিকু ওয়েডস শেরু’ সিনেমায় প্রথম প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন অভিনেত্রী। সূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য ন হয়র ন অভ ন ত র কর ছ ল ন অবন ত
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্ব আরোপ
কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এ পরস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বুধবার দুজনকে করা এ ফোন কলে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া দুই
ফোনালাপের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় মার্কো রুবিও বলেন, তিনি পেহেলগাম হামলায় নিহতদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তবে তিনি আরও বলেন, ভারত যেন পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করার আগে সতর্ক থাকে, কারণ এখনও পর্যন্ত ভারত এই হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার জন্য বলেছেন।
পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনালাপে রুবিও- ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।
তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রুবিও এই অযৌক্তিক হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ভারতের উস্কানিমূলক আচরণ শুধু উত্তেজনাই বাড়াচ্ছে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ভারতের ওপর দায়িত্বশীল আচরণ ও ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করে।
এর আগে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।
এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। বর্তমানে এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।
তাছাড়া, হামলার পরে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সূত্র-এএফপি