আওয়ামী লীগ-জাপা ছাড়া নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না
Published: 22nd, March 2025 GMT
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে নির্বাচন থেকে বাদ দিলে সেটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না। শেখ হাসিনা প্রতিযোগী কমিয়ে দেওয়ার রাজনীতিতে সফল হয়নি। আপনারাও এ রাজনীতিতে সফল হবেন না। শনিবার সন্ধ্যায় রংপুর জেলা পরিষদ কমিউনিটি সেন্টার মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
জি এম কাদের বলেন, যেই ক্ষমতায় আসে আর ছাড়তে চায় না। ইলেকশন ম্যানিপুলেট করতে চায়। দেশবাসী ম্যানিপুলেট ইলেকশন মানবে না। তিনি বলেন, জিন-ভূতের আছরের মতো অনেকের ওপর ক্ষমতার আছর হয়েছে। ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য তারা নানা পলিসি নিয়েছে। তাই দোসর আখ্যা দিয়ে জাতীয় পার্টিকে রাজনীতি থেকে বের করে দেওয়ার পাঁয়তারা চলছে।
এক প্রশ্নের জবাবে সেনাবাহিনীকে ডিস্টার্ব করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। স্বাধীনতার পর থেকে অদ্যাবধি সব সরকারপ্রধান স্বৈরাচারী ছিলেন বলেও দাবি করেন কাদের।
এ সময় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, অতিরিক্ত মহাসচিব মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, ভাইস চেয়ারম্যান এস এম ইয়াসির আহমেদ, কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক আজমল হোসেন লেবু, মহানগর জাতীয় পার্টির সিনিয়র সহসভাপতি লোকমান হোসেন, পীরগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি নুরে আলম যাদু মিয়া, যুবসংহতির নেতা নাজিম উদ্দিনসহ জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ জ এম ক দ র
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’
ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।
হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।
আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’
গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’
আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই।