ফোন কেড়ে নেওয়ায় বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করল ছেলে
Published: 22nd, March 2025 GMT
মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ায় বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে ছেলে। শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে চুয়াডাঙ্গার পলাশপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত ছেলে রিফাতকে আটক করে পুলিশ।
নিহত দোদুল হোসেন চুয়াডাঙ্গা শহরের পলাশপাড়ার মৃত কাজী নূর মোস্তফার ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রিফাত মোবাইল গেমে আসক্ত। তাই দীর্ঘদিন ধরে ছেলে রিফাতকে ফোন ব্যবহার করতে নিষেধ করতেন বাবা দোদুল। কিন্তু সে নিষেধ উপেক্ষা করে ফোন ব্যবহার করত। শনিবার বিকেলে ছেলে ফোন ব্যবহার করছিল। তখন ছেলের কাছ থেকে ফোন কেড়ে নেন বাবা। এরই জেরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে নিজ বাড়িতে নামাজরত বাবা দোদুল হোসেনকে পেছন থেকে ধারাল ছুরি দিয়ে কোপায় ছেলে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেন পরিবারের সদস্যরা। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ৯টার দিকে মারা যান তিনি।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক তারেক হাসান সমকালকে বলেন, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে দোদুল মারা যান।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি খালেদুর রহমান সমকালকে জানান, ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত ছেলে রিফাতকে আটক করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক প য় হত য
এছাড়াও পড়ুন:
আজ মহাকাশে গিয়েছিল লাইকা
১৯৫৭ সালের ৩ নভেম্বরকে মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন এদিন তাদের দ্বিতীয় মহাকাশযান ‘স্পুটনিক ২’ উৎক্ষেপণ করে। সেই মহাকাশযানে করে লাইকা নামের একটি কুকুর মহাকাশ ভ্রমণ করেছিল। লাইকা ছিল মহাকাশে যাওয়া পৃথিবীর প্রথম প্রাণী।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে ১৯৫০ দশকে যুক্তরাষ্ট্র ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে মহাকাশে শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের প্রতিযোগিতা চলছিল। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৫৭ সালের ৪ অক্টোবর স্পুটনিক ১ উৎক্ষেপণ করে বিশ্বকে চমকে দেয়। এর পরপরই স্পুটনিক ২ দ্রুত তৈরি করে দেশটি। এই মহাকাশযানের মাধ্যমে মানুষের আগে প্রাণীকে মহাকাশের প্রতিকূল পরিবেশে বাঁচানো সম্ভব কি না, তা পরীক্ষা করা হয়। সেই পরীক্ষা ছিল ভবিষ্যতে মানুষের মহাকাশযাত্রার জন্য অপরিহার্য।
লাইকা ছিল মস্কোর রাজপথ থেকে ধরে আনা একটি মিশ্র জাতের স্ত্রী কুকুর। মূলত তার শান্ত স্বভাব, ছোট আকার ও প্রশিক্ষণে টিকে থাকার কারণে তাকে বেছে নেওয়া হয়। লাইকাকে একটি বিশেষ চেম্বারে বসে থাকার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। হৃৎস্পন্দন ও শ্বাস-প্রশ্বাস পরিমাপের জন্য তার শরীরে যুক্ত ছিল একাধিক সেন্সর। সেই সময়ে মহাকাশযানকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার কোনো প্রযুক্তি সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের হাতে ছিল না। আর তাই পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করা প্রথম প্রাণী লাইকা মহাকাশে থাকা অবস্থাতেই মারা যায়।
১৯৫৭ সালের ৩ নভেম্বর লাইকাকে বহন করা স্পুটনিক ২ মহাকাশযান কাজাখস্তান থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়। বিজ্ঞানীরা প্রথমে ঘোষণা করেছিলেন, লাইকা কয়েক দিন কক্ষপথে বেঁচে ছিল। কয়েক দশক পরে ২০০২ সালে, রাশিয়ার বিজ্ঞানী দিমিত্রি মালাশেনকভ প্রকৃত তথ্য প্রকাশ করেন। উৎক্ষেপণের সময় তীব্র শব্দ এবং কম্পনের কারণে লাইকা আতঙ্কিত হয়ে যায়। মহাকাশযান পৃথিবীর কক্ষপথে পৌঁছানোর পরপরই তাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় ত্রুটি দেখা দেয়। ফলে কেবিনের তাপমাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে চলে যায়। অতিরিক্ত চাপ ও তাপে উৎক্ষেপণের মাত্র পাঁচ থেকে সাত ঘণ্টা পরেই লাইকা মারা যায়।
লাইকার মহাকাশযাত্রা একাধিক কারণে মানব ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। স্পুটনিক ২ উৎক্ষেপণ সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রযুক্তিগত শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করলেও, লাইকার মৃত্যু বিশ্বের দরবারে দেশটিকে সমালোচনার মুখে ফেলে দিয়েছিল।
সূত্র: সায়েন্স ২০ ডটকম