ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-বাংলাদেশ ইসলামিক সলিডারিটি এডুকেশন ওয়াক্ফ আইডিবি-বিআইএসইডব্লিউ ভোকেশনাল ট্রেনিং দেয় শিক্ষার্থীদের। এ জন্য দরখাস্ত আহ্বান করেছে। আইডিবি ১১ বছর ধরে ভোকেশনাল স্কলারশিপের অধীনে বিভিন্ন ট্রেডে ছয় মাস মেয়াদি কারিগরি শিক্ষা প্রদান করে আসছে।

আর্থিক কারণে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাওয়া দরিদ্র মুসলিম যুব সমাজকে দক্ষ ও পেশাদার পর্যায়ে উন্নীত করাই এ প্রোগ্রামের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৭৪১ জন এ স্কলারশিপের আওতায় ট্রেনিং করে দেশ-বিদেশে ২৪৮টির বেশি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন।

সুযোগ-সুবিধা

*ছয় মাস মেয়াদি (৭২০ ঘণ্টা) প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার সুযোগ;

*থাকা-খাওয়াসহ সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে ট্রেনিং;

*প্রশিক্ষণ চলাকালে মাসিক ৫০০ টাকা হাতখরচ;

*চাকরি উপযোগী সিলেবাস ও অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ;

*চাকরি পেতে সর্বাত্মক সহযোগিতা;

যেসব কোর্সে ট্রেনিং—

*ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্কস;

*ইলেকট্রনিকস;

*রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ার কন্ডিশনিং;

*ওয়েল্ডিং অ্যান্ড ফেব্রিকেশন;

*মেশিনিস্ট;

আবেদনকারীর জন্য নির্দেশাবলি—

*শুধু সুবিধাবঞ্চিত মুসলিম প্রার্থীদের জন্য;

*একজন প্রার্থী একবারই আবেদন করতে পারবেন;

*জন্মতারিখ সঠিকভাবে প্রদান করতে হবে;

আরও পড়ুনতুরস্কে বিলকেন্ট ইউনিভার্সিটির বৃত্তি, আইইএলটিএসে ৬.

৫ হলে আবেদন ০৮ মার্চ ২০২৫যেসব কাগজপত্র দরকার—

*জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসির ফল, ফল প্রকাশের বছর ও রোল নম্বর;

*ফরম পূরণে আবেদনকারীকে মুঠোফোন নম্বর দিতে হবে ও সেটি যাচাইয়ে দ্বিতীয়বার কনফার্ম মুঠোফোন নম্বরের ঘরে লিখতে হবে;

*পাসপোর্ট সাইজের ছবি আপলোড করতে হবে;

*প্রবেশপত্র ছাড়া পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হবে না;

*ফরম সাবমিটের পর প্রবেশপত্র প্রিন্ট করতে হবে;

মডেল: ইয়াসফি ও হাদী

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

অধ্যাপক ইউনূসের সংস্কারের অঙ্গীকারের এক বছর পরেও কারাগারে সাংবাদিকেরা: সিপিজে

সাংবাদিক ফারজানা রুপা চলতি বছরের ৫ মার্চ ঢাকার একটি জনাকীর্ণ আদালতে আইনজীবী ছাড়াই দাঁড়িয়েছিলেন। বিচারক তাঁর বিরুদ্ধে আরেকটি হত্যা মামলা নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করছিলেন। ইতিমধ্যে অন্য মামলায় কারাগারে থাকা এই সাংবাদিক শান্তভাবে জামিনের আবেদন জানান। ফারজানা বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমার বিরুদ্ধে এক ডজন মামলা দেওয়া হয়েছে। আমি একজন সাংবাদিক। আমাকে ফাঁসানোর জন্য একটি মামলাই যথেষ্ট।’

বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টসের (সিপিজে) এক নিবন্ধে এসব কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, বেসরকারি একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক প্রধান প্রতিবেদক ফারজানা রুপার বিরুদ্ধে ৯টি হত্যা মামলা রয়েছে। আর তাঁর স্বামী চ্যানেলটির সাবেক বার্তাপ্রধান শাকিল আহমেদের নামে রয়েছে আটটি হত্যা মামলা।

এক বছর আগে ছাত্রদের নেতৃত্বে কয়েক সপ্তাহের বিক্ষোভের পর পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই বিক্ষোভ চলাকালে দুজন সাংবাদিক নিহত হন। শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেন নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

অধ্যাপক ইউনূস গণমাধ্যম সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা সরকারের অধীন সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করতে ব্যবহৃত সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু ২০২৪ সালের নভেম্বরে ডেইলি স্টার পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ইউনূস বলেছিলেন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তাড়াহুড়ো করে হত্যার অভিযোগ আনা হচ্ছে। তিনি আরও বলেছিলেন, সরকার তখন থেকে এ ধরনের পদক্ষেপ বন্ধ করে দিয়েছে। মামলাগুলো পর্যালোচনা করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কিন্তু প্রায় এক বছর পর এখনো সাংবাদিক ফারজানা রুপা, শাকিল আহমেদ, শ্যামল দত্ত ও মোজাম্মেল হক বাবু কারাগারে আছেন। হত্যায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে পৃথক মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। বিগত সরকারের প্রতি সহানুভূতিশীল হিসেবে ব্যাপকভাবে পরিচিত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগের বারবার ব্যবহারকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সেন্সরশিপ বলেই মনে হচ্ছে।

এ ধরনের আইনি অভিযোগ ছাড়াও সিপিজে সাংবাদিকদের ওপর শারীরিক হামলা, রাজনৈতিক কর্মীদের কাছ থেকে হুমকি এবং নির্বাসনের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কমপক্ষে ২৫ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে তদন্ত করছে। এই অভিযোগ সাবেক শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের লক্ষ্যবস্তু করতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

সিপিজের আঞ্চলিক পরিচালক বেহ লিহ ই বলেন, ‘চারজন সাংবাদিককে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ ছাড়াই এক বছর ধরে কারাগারে আটকে রাখা অন্তর্বর্তী সরকারের সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষার ঘোষিত প্রতিশ্রুতিকে দুর্বল করে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রকৃত সংস্কার মানে অতীত থেকে বেরিয়ে আসা, এর অপব্যবহারের পুনরাবৃত্তি নয়। যেহেতু আগামী মাসগুলোতে দেশে নির্বাচন হতে চলেছে, তাই সব রাজনৈতিক দলকে সাংবাদিকদের খবর প্রকাশের অধিকারকে অবশ্যই সম্মান জানাতে হবে।’

আইনি নথি ও প্রতিবেদন নিয়ে সিপিজের এক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এফআইআর নথিভুক্ত হওয়ার অনেক পর সাংবাদিকদের নাম প্রায়ই এতে যুক্ত করা হয়। মে মাসে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, গত বছরের বিক্ষোভের পর ১৪০ জনের বেশি সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

শ্যামল দত্তের মেয়ে শশী সিপিজেকে বলেন, তাঁর বাবার বিরুদ্ধে এখন কতগুলো মামলা চলছে, পরিবার তার হিসাব রাখতে পারেনি। তাঁরা অন্তত ছয়টি হত্যা মামলার কথা জানেন, যেখানে শ্যামল দত্তের নাম আছে। মোজাম্মেল বাবুর পরিবার ১০টি মামলার কথা জানে। ফারজানা রুপা ও শাকিল আহমেদের পরিবার সিপিজেকে জানিয়েছে, তারা পাঁচটি মামলার এফআইআর পাননি, যেখানে একজন বা অন্য সাংবাদিকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এর মানে হলো তাঁদের কেউই জামিনের আবেদন করতে পারছেন না।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম ও পুলিশের মুখপাত্র এনামুল হক সাগরকে ই–মেইল করে সিপিজে। তবে তাঁরা সাড়া দেননি বলে সিপিজের নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ