আগামী ৭ এপ্রিল থেকে ঢাকায় শুরু হচ্ছে ৪ দিনব্যাপী বিনিয়োগ সম্মেলন। সম্মেলনে ৫০টিরও বেশি দেশের ৫৫০ জন বিদেশি বিনিয়োগকারী অংশ নেবেন। এর বড় অংশই চীনের বিনিয়োগকারী। এ ছাড়া যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও ভারতের বিনিয়োগকারীরা আসবেন।

বাংলাদেশ থেকে ২ হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করবেন। তবে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে ৯ এপ্রিল। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড.

মুহাম্মদ ইউনূস অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন। এদিন স্টারলিংকের ইন্টারনেটের পরীক্ষামূলক ব্যবহার শুরু হবে। খবর বাসসের

রোববার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। বিডা এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে।

আশিক মাহমুদ বলেন, বিদেশিদের কাছে বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ সরেজমিনে তুলে ধরার মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানো এই আয়োজনের প্রধানতম উদ্দেশ্য। এই আয়োজনের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের জন্য একটি বিনিয়োগ পাইপলাইন তৈরি হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। 

বিডার চেয়ারম্যান বলেন, চারদিনব্যাপী সম্মেলনের প্রথম দুই দিন অর্থাৎ ৭ ও ৮ এপ্রিল বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ঢাকার বাইরে থাকবেন। এর মধ্যে ৭ এপ্রিল চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জাতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করবেন। ৮ এপ্রিল তারা নারায়নগঞ্জের আড়াইহাজারে জাপান অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করবেন। 

আগামী ৯ এপ্রিল সকালে ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। এদিন স্টারলিংকের ইন্টারনেট পরীক্ষামূলকভাবে চালু হবে। 

এই ইন্টারনেট সেবা ব্যবহার করে ৯ তারিখ থেকে সম্মেলনের সবগুলো ইভেন্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভ সম্প্রচার হবে। একইদিন বাংলাদেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জানাতে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হবে।

চৌধুরী আশিক জানান, সম্মেলনে ৫০টির বেশি দেশ থেকে ৫৫০জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করবেন। বাংলাদেশ থেকে ২ হাজার প্রতিনিধি থাকবেন। 

তিনি বলেন, আয়োজনে ব্যাপক সাড়া মিলেছে। ইতোমধ্যে নিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আশিক মাহমুদ বলেন, বিনিয়োগকারীরা স্টার্ট আপ থেকে শুরু করে বড় বিনিয়োগ সব কিছু নিয়ে কথা বলেন। পুরো আয়োজনে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, তৈরি পোশাক,কৃষিখাত, স্বাস্থ্য এবং হালকা প্রকৌশল খাত প্রাধান্য পাবে।

অনুষ্ঠানে বিশ্বের খ্যাতনামা কয়েকটি ব্রান্ডের বিনিয়োগকারীরা আসবেন। এ ছাড়াও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সঙ্গে বৈঠক হবে আয়োজক দেশের। 

আশিক মাহমুদ আরও বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) ১ বিলিয়ন ডলারের কম। এটি থাকা না থাকার মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য নেই। অর্থাৎ বিনিয়োগ আরও ১০গুণ হওয়ার কথা। সে কারণে বিনিয়োগ বাড়াতে এই আয়োজন। 

তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘমেয়াদী চিন্তা করে। ফলে দ্রুতই বিনিয়োগ বাড়ানো কঠিন। তবে আগামী ৩ থেকে ৬ মাসের মধ্যে পরিবর্তন দেখতে পাবেন। এ ছাড়াও এবারের সম্মেলনে বেশ কিছু এমওইউ স্বাক্ষর হবে। 

এক প্রশ্নের জবাবে আশিক মাহমুদ বলেন, আগামী ২৬ মার্চ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে চীনে যাবেন তিনি। সেখানে দেশটির বড় বড় বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বৈঠক হবে। সব মিলিয়ে ২ শতাধিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক হবে। আশা করা হচ্ছে, এতে বিনিয়োগে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসবে। 

তিনি বলেন, বিনিয়োগের জন্য যোগাযোগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা পরীক্ষামূলকভাবে চালু হবে। আর ৯০দিন পর এটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হবে। 

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ক ষ ম করব ন

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ