রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে এবার ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। আজ রোববার বিকেলে তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এই তথ্য জানিয়েছেন তিনি।

ঈদের জামাতের বিষয়ে আজ রোববার এক ভিডিও বার্তায় আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেছেন, হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের প্রধান জামাত হবে। তবে জাতীয় ঈদগাহ মাঠ ও পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে ঈদ উদ্‌যাপনের দিক থেকে পার্থক্য থাকবে। পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে ঈদ জামাতের পাশাপাশি মেলা, আনন্দমিছিল ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকবে।

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, ‘এবারের ঈদকে নতুনভাবে, সুন্দরভাবে উদ্‌যাপন করতে চাচ্ছি। দেখা যায় ঈদের দিন টিভি দেখে অথবা ঘুমিয়ে এই প্রজন্ম সময় কাটাচ্ছে। সেই জায়গা থেকে এবারের ঈদটা নতুনভাবে আয়োজন করার, উদ্‌যাপন করার উদ্যোগ নিচ্ছি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে বাণিজ্য মেলার যে পুরাতন মাঠ আছে, সেখানে এবার কেন্দ্রীয়ভাবে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।’

গ্রামের ঈদগাহের পাশে ছোট করে যেমন মেলা থাকে, বাণিজ্য মেলার মাঠেও এবারের ঈদ আয়োজনে তেমন মেলা থাকবে বলে জানিয়েছেন আসিফ মাহমুদ। তিনি বলেন, যেখানে বাচ্চারা ও শিশু–কিশোরেরা কেনাকাটা করতে পারবে।

আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘পুরাতন ঐতিহ্য যেটা সুলতানি আমলে হয়েছে, ১৮০০ সালের দিকেও এই অঞ্চলের মানুষ ঈদের নামাজের পর একটা র‍্যালি করত, মিছিল করত, সেই ঐতিহ্যকে আবার রিভাইভ (পুনরুজ্জীবিত) করতে চাই। এবারের ঈদের নামাজের পর একটা ঈদ র‍্যালি আয়োজন করা হবে। বর্ণাঢ্য ঈদ আনন্দমিছিল হবে। সেই আয়োজনে নগরবাসীকে আহ্বান জানাব আসুন, এবার একসঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিই।’

আনন্দমিছিলের পরে একটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন থাকবে। এ বিষয়ে সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা।

জাতীয় ঈদগাহের পাশাপাশি কেন এবার পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে, এরও একটা ব্যাখ্যা দিয়েছেন আসিফ মাহমুদ। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দান ঢাকার দক্ষিণ পাশে পড়ে যায়। সে ক্ষেত্রে দেখা যায় মোহাম্মদপুর, মিরপুর ও উত্তর ঢাকার অধিকাংশ মানুষ দূরত্বগত কারণে এখানে আসতে পারেন না। জায়গা সংকুলান নিয়েও একটা ব্যাপার আছে। সেই জায়গা থেকে মনে হয় পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে ঈদের জামাত হলেও জাতীয় ঈদগাহ মাঠের ঈদের জামাত কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত হবে না।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ ত য় ঈদগ হ ঈদ র জ ম ত য় ঈদগ হ ম অন ষ ঠ আনন দ

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ