Prothomalo:
2025-09-18@06:53:16 GMT

সাধকের প্রাপ্তি

Published: 24th, March 2025 GMT

তখন বাদশাহ ছিলেন মনসুর বিল্লাহ। সে সময়ের বিখ্যাত সাধক জাফর সাদেকের অসাধারণ ব্যক্তিত্ব, জনপ্রিয়তা ও প্রভাব-প্রতিপত্তি দেখে বাদশাহ নিজের জন্য তাকে অকল্যাণকর মনে করলেন। বাদশাহ আশঙ্কা করলেন হয়তো এই সাদেক একদিন তার রাজত্বের দাবিদার হয়ে বসবেন।

 তাই একরাতে তিনি তার মন্ত্রীকে ডেকে বললেন, ‘যাও, জাফর সাদেককে ডেকে নিয়ে আসো, আমি তাকে হত্যা করব।’ বাদশাহর আদেশ শুনে মন্ত্রী চমকে উঠলেন। সবিনয়ে বললেন, ‘তিনি নিরীহ লোক, পৃথিবীর সব ভোগ-বিলাস ত্যাগ করে নির্জনে বসে ইবাদত-বন্দেগিতে মগ্ন থাকেন। তা ছাড়া তাঁকে দিয়ে তো আমি আপনার কোনো ক্ষতির সম্ভাবনা দেখছি না। তাহলে তাকে হত্যা করে আপনার কী লাভ হবে, জাহাঁপনা?’

 মন্ত্রীর কথায় বাদশাহের আদেশের বিন্দুমাত্র নড়চড় হলো না। অগত্যা মন্ত্রী বেড়িয়ে পড়েন সাদেককে ধরে আনার জন্য। এদিকে বাদশাহ তাঁর দাসদের উদ্দেশ্য করে বলে রাখলেন, ‘সাদেককে দরবারে হাজির করার পর তোমরা আমার দিকে খেয়াল করবে। আমি তখন আমার মাথার মুকুট নামিয়ে ফেলব, আর তোমরা ঠিক এই সময় তাকে হত্যা করবে।’

আরও পড়ুনজালালুদ্দিন রুমির ‘মসনভি’তে কোরআনের মর্মবাণী২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

জাফর সাদেক যখন দরবারে উপস্থিত হলেন, হঠাৎ মনসুর তাকে দেখেই সিংহাসন ছেড়ে দাঁড়িয়ে গেলেন। তার চেহারায় ভয়ার্ত ছাপ ফুটে উঠল। কিছুক্ষণের জন্য তিনি স্তম্ভিত হয়ে গেলেন। তিনি সাদেকের হাত ধরে সসম্মানে নিজ সিংহাসনে এনে বসালেন। এরপর নিজে তার পায়ের কাছে নতজানু হয়ে বসলেন। দাসরা অবাক হয়ে পড়ল, বাদশাহ কী করতে চেয়েছিলেন আর এখন কী করছেন! এরপর মনসুর সাদেকের সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করে তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনার কী প্রয়োজন, আমাকে বলুন, আমি তা পূরণ করব।’

 সাদেক উত্তর দিলেন, ‘আমার কোনো প্রয়োজন নেই, শুধু আপনার কাছে অনুরোধ, এভাবে ডেকে এনে আমার সাধনায় বিঘ্ন ঘটাবেন না।’

 বাদশাহ তাকে সসম্মানে বিদায় দিলেন এবং সঙ্গে সঙ্গে তার শরীরে প্রচণ্ড কাঁপন অনুভব করলেন। এমনকি তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেললেন। তিন দিন কেটে গেল। জ্ঞান ফিরে আসার পর একসময় মন্ত্রী তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘জাহাঁপনা, হঠাৎ আপনার কি হয়েছিল? কেন কাঁপতে কাঁপতে জ্ঞান হারালেন?’

 মনসুর বললেন, ‘জাফর সাদেক যখন আমার দরবারে প্রবেশ করলেন, দেখলাম তার পেছনে একটি বৃহদাকার অজগর সাপ হাঁ করে আছে, যার একটি চোয়াল সিংহাসনের নিচে ও আরেকটি সিংহাসনের ওপরে। আর সেটি আমাকে বলল, ‘সাবধান মনসুর, যদি জাফর সাদেকের কোনো ক্ষতি করতে চেষ্টা করো, তবে তোমার সিংহাসনসহ তোমাকে গিলে ফেলব।’ ওই ভয়ংকর সাপের ভয়ে আমার হুঁশ ছিল না। আমি তখন কী বলেছি কিছুই আমার মনে নেই। শুধু এতটুকু মনে আছে, আমি তাকে বিনয় ও সম্মান দেখিয়ে বিদায় জানিয়েই সঙ্গে সঙ্গে জ্ঞান হারিয়েছি।’

 স্রষ্টার সাধনায় নিমগ্ন ব্যক্তিকে স্রষ্টাই সকল বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করেন।

আরও পড়ুন বুদ্ধিমান এক বালকের ঘটনা ১৪ জানুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ ফর স দ ক আপন র ক মন ত র ব দশ হ করল ন মনস র

এছাড়াও পড়ুন:

ক্যানসারে আক্রান্ত ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারো

ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর শরীরে ত্বকের ক্যানসার শনাক্ত হয়েছে। বমি ও নিম্ন রক্তচাপের কারণে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার শরীরে ক্যানসারের প্রাথমিক ধাপ ধরা পড়ে। বর্তমানে তিনি গৃহবন্দি অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আনাদোলু এজেন্সি।

আরো পড়ুন:

৬ বছর পর ব্রাজিলকে হারিয়ে বিশ্বকাপ প্লে-অফে বলিভিয়া

মারাকানায় ব্রাজিলের বড় জয়

প্রতিবেদনে বলা হয়, এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার একদিন পর তার ত্বকের ক্যানসারের প্রাথমিক ধাপ ধরা পড়ে।

বুধবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, তার ত্বকের পরীক্ষা করে ‘স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা’ শনাক্ত হয়েছে।এটি ত্বকের মাঝারি মাত্রার ক্যানসার, যা সবচেয়ে হালকা ও সবচেয়ে আক্রমণাত্মক ধাপের মাঝামাঝি পর্যায়ে রয়েছে।

চিকিৎসকরা বলেছেন যে, নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে তার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হবে। ৭০ বছর বয়সী বলসোনারো গত মঙ্গলবার বমি এবং নিম্ন রক্তচাপের কারণে ব্রাসিলিয়ার একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে ক্যানসারের বিষয়টি গত রবিবারের পরীক্ষায় ধরা পড়ে, যখন তার বুক ও হাতে থাকা ক্ষতস্থানের টিস্যু অপসারণ করা হয়েছিল।

তার অনকোলজিস্ট ক্লাউদিও বিয়ারোলিনি জানিয়েছেন, বলসোনারোর ক্যানসার ‘ইন সিটু’ ধাপে রয়েছে, অর্থাৎ অস্বাভাবিক কোষগুলো এখনো ছড়িয়ে পড়েনি। অস্ত্রোপচারই এর চিকিৎসার জন্য যথেষ্ট হবে। বর্তমানে বলসোনারোর শরীরে সেলাই ও ব্যান্ডেজ রয়েছে, যা দুই সপ্তাহের মধ্যে খোলা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বুধবার তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাসায় ফিরেছেন, যেখানে তিনি গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছেন।

বলসোনারো ২০২২ থেকে ২০২৩ সালে ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্রে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগেই গৃহবন্দি ছিলেন। সম্প্রতি তাকে ২৭ বছর তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

বিচারপতি আলেকজান্দ্রে দে মোরেসের নির্দেশ অনুযায়ী, গৃহবন্দিত্বে থাকলেও চিকিৎসা জরুরি হলে তিনি বাসার বাইরে যেতে পারেন। তবে প্রতিবারই তার আইনজীবীদের আদালতে চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হয়।

বলসোনারোর সমর্থকরা তার স্বাস্থ্য পরিস্থিতিকে যুক্তি হিসেবে তুলে ধরছেন, যাতে তিনি কারাগারে না গিয়ে বাড়িতেই সাজা ভোগ করতে পারেন। তাদের দাবি, কারাগারে নিলে তার শারীরিক জটিলতা বা দুর্ব্যবহারের ঝুঁকি বাড়বে।

তার জ্যেষ্ঠ পুত্র সিনেটর ফ্লাভিও বলসোনারো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, “আমার বাবা আগেও কঠিন লড়াই লড়ে জয়ী হয়েছেন। এবারও ভিন্ন কিছু হবে না।”

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ