দুই মামলায় জামিন শমসের মুবিন চৌধুরীর, যেকোনো সময় মুক্তি পেতে পারেন
Published: 24th, March 2025 GMT
তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন শমসের মুবিন চৌধুরী দুটি হত্যা মামলায় জামিন পেয়েছেন। একটি হত্যা মামলায় তিনি জামিন পেয়েছেন হাইকোর্ট থেকে, অন্যটি ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত থেকে।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছে, দুটি মামলায় জামিন পাওয়ায় শমসের মুবিন চৌধুরী যেকোনো সময় কারামুক্ত হবেন।
গত বছরের ১৭ অক্টোবর সাবেক পররাষ্ট্রসচিব শমসের মুবিন চৌধুরী গ্রেপ্তার হন।
সূত্রগুলো বলছে, শমসের মুবিন চৌধুরী গ্রেপ্তার হওয়ার পরদিন তাঁকে পল্টন থানায় দায়ের করা যুবদল নেতা শামীম মোল্লা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর তাঁকে যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের করা পারভেজ মিয়া হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
পল্টন থানায় দায়ের করা শামীম মোল্লা হত্যা মামলায় গত ১৮ অক্টোবর শমসের মুবিন চৌধুরীর জামিন আবেদন নাকচ করেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত। সিএমএম আদালতের নাকচের ওই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে তিনি ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন করেন। সেখানেও জামিন আবেদন নাকচ হয়। পরে তিনি হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আদালতে আবেদন করেন। বিচারপতি আবু তাহের মো.
সূত্রগুলো প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছে, শমসের মুবিন চৌধুরীকে ছয় মাসের অন্তর্বর্তী জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের করা পারভেজ মিয়া হত্যা মামলায় গত ১০ ফেব্রুয়ারি শমসের মুবিন চৌধুরীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সেদিন তাঁর আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। আদালত সেই আবেদন নাকচ করেন। সিএমএম আদালতের ওই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে তিনি ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে আবেদন করেন। ১৮ মার্চ ঢাকার মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন আসামি শমসের মুবিন চৌধুরীর জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
সূত্রগুলো প্রথম আলোকে বলেছে, ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিন আদেশের পর শমসের মুবিন চৌধুরীর পক্ষে ঢাকার সিএমএম আদালতে জামিননামা জমা দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে শমসের মুবিন চৌধুরীর উচ্চ আদালতের জামিন আদেশের অনুলিপিও ঢাকার সিএমএম আদালতের বিচারিক শাখায় জমা দেওয়া হয়েছে। যেকোনো সময় তিনি কারাগার থেকে ছাড়া পাবেন।
শমসের মুবিন চৌধুরী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০১৫ সালে তিনি বিএনপির সব পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর ২০১৮ সালে সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বিকল্পধারা বাংলাদেশে যোগ দেন তিনি। সর্বশেষ ৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের আগে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন হন তিনি। তৃণমূল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত নাজমুল হুদা। গত জাতীয় নির্বাচনের আগে তৃণমূল বিএনপিকে নিবন্ধন দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শমস র ম ব ন চ ধ র র থ ন য় দ য় র কর স ত রগ ল ব এনপ র
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকায় চালান পৌঁছে প্রতি মাসে পান ৬ লাখ টাকা
আট বছর ধরে গাড়ি চালানোর পেশায় আছেন মো. শাহীন। প্রথমে চালাতেন ট্রাক, এখন যাত্রীবাহী বাস। তবে এটা তার মূল কারবারের আড়াল মাত্র। বাস চালানোর আড়ালে তিনি কক্সবাজার থেকে ঢাকায় আনেন ইয়াবার বড় চালান। প্রতি চালানে ১০–২০ হাজার পিস ইয়াবা থাকে। এগুলো পৌঁছানোর বিনিময়ে তিনি পান মোটা অঙ্কের টাকা। প্রতি মাসে গড়ে ছয়টি চালান এনে তিনি অন্তত ছয় লাখ টাকা পান। ফলে লাভজনক এ কারবারে তিনি আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গেছেন।
সম্প্রতি রাজধানীর পূর্ব রামপুরা এলাকা থেকে বাসচালক শাহীন ও সুপারভাইজার সঞ্জিত রাজবংশীকে গ্রেপ্তার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। ওই সময় বাসটিতে তল্লাশি চালিয়ে ১৫ হাজার ৬০০ পিস ইয়াবা পাওয়া যায়। এই চালানটি ঢাকার গাবতলী এলাকায় পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল বলে জানা গেছে।
ডিএনসি ঢাকা মহানগর উত্তরের উপপরিচালক শামীম আহম্মেদ জানান, আন্তঃজেলা বাসের চালক–হেলপারদের একটি অংশ মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়েছে। এ কারণে বিভিন্ন রুটের পরিবহনকর্মীদের মাদকসংশ্লিষ্টতার তথ্য পেতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়। এরপর গোপন তথ্যের ভিত্তিতে কক্সবাজার থেকে আসা শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস পূর্ব রামপুরার মোল্লা টাওয়ারের সামনে থামানো হয়। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদে চালক ও সুপারভাইজার স্বীকার করেন, তাদের কাছে মাদকদ্রব্য আছে। এরপর তাদের দেখানো অনুযায়ী চালকের আসনের নিচ থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেছেন ডিএনসি ধানমন্ডি সার্কেলের পরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল মামুন।
ডিএনসি ঢাকা মহানগর উত্তরের জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, শাহীনের ভাষ্য অনুযায়ী, দুই বছর ধরে তিনি বাসে মাদক পরিবহনের কাজ করেন। এর আগে ট্রাক চালানোর সময় অন্য চালকদের মাধ্যমে এ কারবারের বিষয়ে জানতে পারেন। পরে টেকনাফের মাদক কারবারিদের সঙ্গে তার যোগাযোগ ও সখ্য গড়ে ওঠে। তিনি প্রতি ১০ হাজার পিস ইয়াবা ঢাকায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য আনুমানিক এক লাখ টাকা করে পান। এবারের চালানের জন্য পেতেন দেড় লাখের কিছু বেশি। তবে পৌঁছানোর আগেই তিনি ও তার সহযোগী ধরা পড়েন।
অভিযান সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইয়াবার চালানের প্রেরক ও প্রাপকসহ আরও কয়েকজনের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। তাদের গ্রেপ্তার করা গেলে পুরো চক্রটিকে শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।