বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গণের অগ্রণী ব্যক্তিত্ব, সঙ্গীতজ্ঞ ও ছায়ানটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সন্জীদা খাতুন আর নেই। আজ মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গত এক সপ্তাহ ধরে তিনি এই হাসপাতালেই ভর্তি ছিলেন। সন্জীদা খাতুনের মৃত্যুর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ছায়ানটে অনুষ্ঠান বিভাগের জ্যেষ্ঠ সমন্বয়ক রশীদ আল হেলাল।
সন্জীদা খাতুনের জন্ম ১৯৩৩ সালের ৪ এপ্রিল। বাবা কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক। মা সাজেদা খাতুন গৃহিণী। সন্জীদা খাতুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৪ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক, ১৯৫৫ সালে ভারতের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর এবং ১৯৭৮ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। শিক্ষকতা দিয়েই তাঁর কর্মজীবন শুরু। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে দীর্ঘকাল অধ্যাপনা করেছেন।
সন্জীদা খাতুনকে জীবনের প্রায় শুরু থেকে দেখা গেছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ভূমিকায়। যখন তিনি কলেজের শিক্ষার্থী, তখন থেকেই পড়াশোনা, আবৃত্তি ও অভিনয়ের পাশাপাশি গানের চর্চা করেছেন। পাশাপাশি কিছু সাংগঠনিক কাজেও যুক্ত হয়েছেন।
শিল্পী কামরুল হাসানের নেতৃত্বে ব্রতচারী আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন। মুকুল ফৌজে কাজ করেছেন, আবার ছেড়েও দিয়েছেন। তাঁর প্রথম গানের গুরু ছিলেন সোহরাব হোসেন। তাঁর কাছে তিনি শিখেছিলেন নজরুলসংগীত, আধুনিক বাংলা গান এবং পল্লিগীতি। পরে রবীন্দ্রসংগীত শিখেছেন হুসনে বানু খানমের কাছে। পরে আরও অনেকের কাছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন শৈলজারঞ্জন মজুমদার, আবদুল আহাদ, কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীলিমা সেনসহ কয়েকজন।
আরও পড়ুনএকজন সন্জীদা খাতুন০৪ এপ্রিল ২০২২ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের শুরু থেকেই সন্জীদা খাতুন সক্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। একুশে ফেব্রুয়ারির দুপুরে বাসায় ফিরে ছাত্রহত্যার খবর পেয়েছিলেন। পরদিন ২২ ফেব্রুয়ারি সবকিছু বন্ধ, সকালে বাসা থেকে বের হয়ে নানা খোঁজখবর নিয়ে বিকেলে মাকে নিয়ে রওনা দিলেন অভয় দাস লেনের এক বাসার উদ্দেশে মহিলাদের প্রতিবাদ সভায় যোগ দিতে। সেই ভয়ের পরিবেশে দূর পথ হেঁটে গেলেন সে বাসার চত্বরে। সেখানে গিয়ে দেখেন বেগম সুফিয়া কামাল, বেগম দৌলতুন্নেসা, নূরজাহান মুরশিদ প্রমুখ উপস্থিত। কিন্তু সেদিন সে পরিস্থিতিতে কেউ সভার সভাপতি হতে চাননি। শেষ পর্যন্ত সন্জীদা আপার মা সাজেদা খাতুনকে সভাপতির আসনে বসিয়ে দিলেন। মা গুটিসুটি হয়ে বসে থাকলেন। অন্যরা বক্তৃতা করলেন। সেদিন সন্জীদা খাতুন প্রথম বক্তৃতা করলেন। শুরুতেই ক্ষোভ প্রকাশ করে তাঁর কথায় ‘দু-এক লাইনের’ বক্তৃতা দেন। তিনি বলেছিলেন, ‘একুশ আমাকে ভাষা দিয়েছে।’
সন্জীদা খাতুন বিপুল কর্মময় বর্ণাঢ্য জীবন সামগ্রিকভাবে বাঙালির মানস ও সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
অপেক্ষায় সৌমি
শোবিজের পরিচিত মুখ সেমন্তী সৌমি। ২০১২ সালের লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার সেরা ১০ জনের একজন ছিলেন সেমন্তী সৌমি। এরপর মডেল হন গ্রামীণফোনের একটি বিজ্ঞাপনচিত্রে। এর মাধ্যমে দর্শক প্রথম তাঁকে টিভিপর্দায় দেখেন। সিনেমাতেও অভিষেক হয়েছে তাঁর। জুঁতসই সিনেমা না থাকায় আলো ছড়াতে পারেননি। তবে থেমে থাকছেন না তিনি। চেষ্টায় সেরাটা দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
সৌমি বলেন, ‘নাটকে অভিনয় করছি নিয়মিত। ওয়েব কনটেন্টেও কাজ করছি। চলচ্চিত্রে সেভাবে নেই। আসলে চলচ্চিত্র তো বড় স্কেলের। সেখানে কাজ করলে তেমন ছবি আর গল্পের হওয়া লাগবে। আমি এখন তেমন গল্পের ছবির অপেক্ষায় আছি। আমার বিশ্বাস, ঠিকই একদিন দারুণ সুযোগ চলে আসবে।’ ভালো গল্পের সিনেমায় অপেক্ষায় থাকা সৌমির ওটিটি সিরিজে অভিনয়ের খবর চাউর হয়েছে। ভিকি জাহেদের একটি ওয়েব সিরিজে কাজ করছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে। যেখানে সহশিল্পী হিসেবে থাকছেন আফরান নিশো ও মাসুমা রহমান নাবিলা। যদিও কাজটির বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি তিনি।
সিরিজটি সম্পর্কে জানতে চাইলে নীরব থেকেছেন। সৌমিকে প্রথম দেখা যায় ‘অস্তিত্ব’ সিনেমায়। পূর্ণ নায়িকা হিসেবে তাঁকে পাওয়া যায় ‘বয়ফ্রেন্ড’-এ। এতে তাঁর নায়ক ছিলেন তাসকিন রহমান। সিনেমাটি মুক্তি পায় ২০১৯ সালে।