কিশোরগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী মিছিলে হামলায় হতাহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ১৬৫ জনের বিরুদ্ধে নতুন মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে সদর থানায় মামলাটি করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতা সরকারি গুরুদয়াল কলেজের স্নতকের ছাত্র তরিকুল ইসলাম।

তিনি নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে। কিশোরগঞ্জ শহরের উকিলপাড়া এলাকার ভাড়া বাসায় থেকে গুরুদয়াল কলেজে পড়ছেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু, কিশোরগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র মাহমুদ পারভেজ, ঢাকা মহানগর ডিবির সাবেক প্রধান হারুন-অর রশিদ, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম-কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, নিষিদ্ধ ঘোষিত জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমন, সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ উমান খান, জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাচ্চু প্রমুখ। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ১৫০ জনকে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ৪ আগস্ট শহরের আখড়াবাজার সেতু থেকে শহীদি মসজিদ এলাকা পর্যন্ত আন্দোলন চলাকলে মিছিলে গুলিবর্ষণ করা হয়। এতে বাদীসহ কয়েজন গুলিবিদ্ধ হন, তিনজন মারা যান।

কিশোরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

আব্দুল্লাহ আল মামুন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গত ৩০ আগস্ট জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের গুলিতে আহত সাবেক সহ-সভাপতি শহরের রথখলা এলাকার এক ব্যবসায়ী মতিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় এ সংক্রান্ত জেলার প্রথম মামলাটি করেছিলেন। এতে প্রধান আসামি করা হয়েছিল শেখ হাসিনাকে। এছাড়া ওবায়দুল কাদেরসহ আসামি করা হয় ৮৮ জনকে। অজ্ঞাত আসামি ২০০ থেকে ৩০০ জন। মঙ্গলবারের নতুন মামলাসহ এখন পর্যন্ত সদর থানায় ১৫টি মামলা হয়েছে। একটি মামলায় শেখ হাসিনার সঙ্গে সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদকেও আসামি করা হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক শ রগঞ জ ক শ রগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ