রিকশা নিয়ন্ত্রণে রাজধানীর একটি সড়কের উভয় পাশে পরীক্ষামূলকভাবে দুটি লোহার খাঁজ (রিকশা ট্র্যাপার) স্থাপন করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

গত শনিবার শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলী সরণিতে এই ট্র্যপার বসানো হয়। তবে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ট্র্যাপারের ওপর দিয়েই পার হচ্ছে রিকশা। ট্র্যাপার পার হওয়ার জন্য চালক সোজাসুজি না গিয়ে রিকশাকে আড়াআড়িভাবে একটু ঘুরিয়ে নিচ্ছেন। আর তাতে অনায়াসে ট্র্যাপারের ওপর দিয়ে চলে যাচ্ছে রিকশা।

ঘটনাস্থলে যাত্রীর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা রিকশাচালক মো.

আশরাফুলের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এই ফাঁদ কাজে আসছে না। যাঁরা কম বোঝেন, শুধু তাঁদের রিকশাই আটকায়। একটু বুদ্ধি খাটালে সহজেই পার হওয়া যায়।

আশরাফুলের আশপাশে থাকা অন্য রিকশাচালকেরা এগিয়ে এসে একই কথা বললেন।

গত শনিবার পরীক্ষামূলকভাবে ট্র্যাপার বসানোর পর পুলিশ বলেছিল, ইতিবাচক ফলাফল এলে ধীরে ধীরে রাজধানীর অন্য সড়কেও এমন খাঁজ বসানো হবে।

এই ট্র্যাপার স্থাপনের উদ্দেশ্য হলো রাজধানীর যেসব সড়কে রিকশা নিষিদ্ধ, সেগুলোতে এই বাহনের চলাচল নিয়ন্ত্রণ। রিকশার চলাচল আটকানোর মাধ্যমে যানজট নিয়ন্ত্রণ করা।

সাম্প্রতিক সময় রাজধানীতে প্যাডেলচালিত (পায়ে চালিত) রিকশার পাশাপাশি ব্যাপকভাবে বেড়েছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। রিকশার প্রকৃত সংখ্যা জানতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও ডিএমপির মিডিয়া বিভাগে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো তথ্য জানাতে পারেনি।

রাজধানীর নির্দিষ্ট সড়কে প্যাডেল ও ব্যাটারিচালিত উভয় ধরনের রিকশার অনিয়ন্ত্রিত চলাচল নিয়ন্ত্রণ উদ্যোগের অংশ হিসেবে গত শনিবার শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলী সরণিতে পরীক্ষামূলকভাবে ট্র্যাপার বসানো হয়। কিন্তু ডিএমপির এই উদ্যোগ কাজে আসছে না বলে জানিয়েছেন রিকশাচালক, পথচারী ও কর্মরত পুলিশ সদস্যরা।

শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলী সরণিতে দায়িত্বরত পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক আ. মালেকের সঙ্গে হয় প্রথম আলোর। তিনি বলেন, দুটি ট্র্যাপার পরীক্ষামূলকভাবে বসানো হয়েছে। তবে রিকশাগুলো ট্র্যাপারের ওপর দিয়েই চলে যাচ্ছে। এটার কার্যকারিতা দেখা যাচ্ছে না।

ট্র্যাপার বসিয়েও রিকশা ঠেকাতে না পারার বিষয়টিকে কর্তৃপক্ষের দূরদর্শিতার অভাব হিসেবে দেখছেন পথচারীরা। তাঁরা বলছেন, এই ট্র্যাপার রিকশা ঠেকানোর জন্য যথেষ্ট নয়।

মাহমুদুল হাসান নামের এক পথচারীর সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলোর। তিনি বলেন, ট্র্যাপার বসানোর পর রাস্তার একটা অংশ ফাঁকা আছে। সেখান দিয়ে রিকশার সামনের ও পেছনের একটি চাকা যেতে পারছে। বাকি এক চাকা আড়াআড়িভাবে ট্র্যাপারের ওপর ওঠালে তখন রিকশা আর আটকায় না।

এই পথচারী আরও বলেন, যেভাবে ট্র্যাপারগুলো বসানো হয়েছে, দেখে মনে হচ্ছে, খুবই অদূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এই লোহার খাঁজের ওপর দিয়ে রিকশা যেতে পারবে, এটা দেখেই বোঝা যায়। এর জন্য পরীক্ষা করার দরকার হয় না।

ট্র্যাপার বসানোর পরও রিকশা পার হয়ে যাওয়ার বিষয়টি নজরে এসেছে বলে জানিয়েছে ডিএমপির ট্র্যাফিক বিভাগ।

ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এই ট্র্যাপারের প্রাথমিক ফলাফল যাচাই–বাছাই চলছে। ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে দ্রুত সময়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে পুলিশ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ট র য প র র ওপর র ওপর দ য় প রথম আল এই ট র য পর দ য় ড এমপ পথচ র

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে জুলাই শহীদদের স্মরণে মিনি ম্যারাথন

রাজশাহীতে জুলাই শহীদদের স্মরণে মিনি ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল ছয়টার দিকে নগরের বিনোদপুর এলাকা থেকে এ দৌড় প্রতিযোগিতা শুরু হয়। আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) রাজশাহী মহানগর শাখা এ ম্যারাথনের আয়োজন করে।

ম্যারাথনে অংশ নিতে প্রতিযোগীরা আজ ভোর সাড়ে পাঁচটার পর থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়–সংলগ্ন বিনোদপুর বাজারে জমায়েত হতে থাকেন। সকাল ছয়টার পর শুরু হয় পাঁচ কিলোমিটারের ম্যারাথন প্রতিযোগিতা।

অংশগ্রহণকারীরা বিনোদপুর থেকে শুরু হয়ে নগরের তালাইমারী মোড় হয়ে আবার বিনোদপুর হয়ে চৌদ্দপায় ফায়ার সার্ভিস মোড় হয়ে আবার বিনোদপুরে ফিরে আসেন।পরে সেখানে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। প্রথম পুরস্কার ১০ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ৮ হাজার টাকা, তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে ৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অংশগ্রহণকারী তিন নারীসহ আরও ১০ জনকে পুরস্কৃত করা হয়।

ম্যারাথন উপলক্ষে আগে থেকেই মেডিকেল টিমসহ একটি অ্যাম্বুলেন্স ছিল। এ ছাড়া সবার জন্য টি-শার্ট, গ্লুকোজ পানিসহ বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হয়। ম্যারাথনে অংশ নেওয়াদের বেশির ভাগই ছিল তরুণ। তাঁদের মধ্যে বেশি বয়সী নারীরাও অংশ নেন।

প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া ৫৮ বছর বয়সী পিয়ারুল ইসলাম বলেন, এ উদ্যোগ খুবই ভালো হয়েছে। অসুস্থমুক্ত জীবন গড়তে হলে দৌড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। শারীরিক বিভিন্ন অ্যাকটিভিটিসের মধ্যে থাকলে সুস্থ জীবন গড়া যায়। এ বয়সে তাঁর কোনো ওষুধ লাগে না। তাঁরও অনেক সিনিয়র আছেন, কারও বয়স ৭৫, তাঁদেরও ওষুধ লাগে না। তাই এ ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে হবে। সবাইকে উদ্ধুব্ধ করতে হবে। যাতে নিজেদের শরীরকে সব সময় উপযুক্ত রাখে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, অনেক দিন পর তিনি দৌড়াবেন। সাধারণত দৌড়ানো হয় না। আজকের পর থেকে তিনি প্রতিদিন সকালে উঠে দৌড়াবেন।

স্থানীয় বাসিন্দা নাঈম হাসান বলেন, জুলাই গণ–অভ্যুত্থান শুধু সরকারের পতন নয়। এর মাধ্যমে এ দেশের মানুষ একটি নতুন নিশ্বাস নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। সেই নতুন নিশ্বাস নিয়ে ম্যারাথনে তিনি অংশ নিয়েছেন।

ম্যারাথন প্রতিযোগিতায় ১৩ জনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে রাজশাহী নগরের বিনোদপুর এলাকায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ