গাজায় বিক্ষোভ: হামাস তুমি চলে যাও
Published: 26th, March 2025 GMT
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন শুরুর পর এই প্রথম উপত্যকায় হামাসবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে। শত শত মানুষ রাস্তায় নেমে গাজার ক্ষমতা থেকে হামাসের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন।
মাস্ক পরা হামাস যোদ্ধাদের বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে দেখা যায়। অনেক বিক্ষোভকারীর ওপর তারা হামলা চালায়। এ সময় হামাস যোদ্ধাদের কারও হাতে অস্ত্র এবং কারও হাতে লাঠি ছিল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। এসব ভিডিওতে দেখা যায়, গাজার উত্তরাঞ্চলীয় বিত লাহিয়ায় তরুণ বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নেমে আসেন। তাঁদের হামাসের সমালোচনা করে নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়। অনেকে স্লোগান দিচ্ছিলেন, ‘চলে যাও’, ‘চলে যাও’, ‘চলে যাও’, ‘হামাস চলে যাও’।
হামাসপন্থী গ্রুপ অবশ্য তাদের পক্ষেই কথা বলছে। তারা এই বিক্ষোভকে খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছে না। উল্টো তারা অভিযোগ তুলে বলছে, বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা ‘বিশ্বাসঘাতক’। ওই বিক্ষোভের ব্যাপারে হামাসের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
ইসলামিক জিহাদের সশস্ত্র যোদ্ধারা ইসরায়েলে রকেট হামলা চালানোর এক দিন পর উত্তর গাজায় এই বিক্ষোভ হয়েছে। ওই হামলার পর ইসরায়েলি বাহিনী বিত লাহিয়া ছেড়ে যেতে সেখানকার বাসিন্দাদের নির্দেশ দিয়েছে। এরপরই সেখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
দুই মাস অস্ত্রবিরতির পর সম্প্রতি আবার গাজায় নৃশংস হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। তাঁদের অভিযোগ, যুদ্ধবিরতির সময় আরও বৃদ্ধি করতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রস্তাব হামাস প্রত্যাখ্যান করায় এই হামলা শুরু করা হয়েছে। তবে হামাস ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেছে, যুদ্ধবিরতির শুরুতে যে চুক্তি হয়েছিল ইসরায়েল সেটা পুরোপুরি পাশ কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। জানুয়ারিতে করা সেই চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতির পর দ্বিতীয় ধাপের স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিয়ে দুই পক্ষকে আলোচনায় বসার কথা।
১৮ মার্চ নতুন করে গাজায় ইসরায়েলের নৃশংস হামলা শুরুর পর কয়েক শ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নতুন করে ঘরবাড়ি হারিয়ে উদ্বাস্তু হয়েছেন হাজার হাজার ফিলিস্তিনি।
বিত লাহিয়ায় বিক্ষোভে অংশ নেওয়া মোহাম্মদ দিয়াব বলেন, ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় তাঁর পুরো বাড়িয়ে ধ্বংস হয়ে গেছে। এক বছর আগে ইসরায়েলের বিমান হামলায় তিনি ভাইকে হারিয়েছেন।
দিয়াব বলেন, ‘আমরা কারও জন্য, কোনো পার্টির এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য বা বিদেশি রাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষার জন্য মরতে চাই না।’
বিত লাহিয়ার এই বাসিন্দা বলেন, ‘হামাসকে অবশ্যই ক্ষমতা ছাড়তে হবে এবং দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের কথা শুনতে হবে। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে উঠে আসা কণ্ঠ তাদের শুনতে হবে। এটিই হচ্ছে সবচেয়ে সত্য কণ্ঠস্বর।’
ভিডিও ফুটেজ থেকে আরও দেখা যায়, বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিচ্ছেন, ‘হামাসের শাসন নিপাত যাক, মুসলিম ব্রাদারহুডের শাসন নিপাত যাক।’
২০০৭ সাল থেকে গাজায় হামাস এককভাবে শাসন করে আসছে। ওই বছর নির্বাচনে ফাতাহকে হারিয়ে তারা এককভাবে গাজার নিয়ন্ত্রণ নেয়। সেখানে ফাতাহর রাজনীতিও অনেকটা শেষ হয়ে যায়।
গাজায় নৃশংস ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর হামাসের বিরুদ্ধে সমালোচনা বাড়তে থাকে। রাজপথ ও অনলাইনে সেই সমালোচনা চলছে। তবে এখনো গাজায় হামাসের পক্ষে প্রচুর সমর্থন রয়েছে। অবশ্য তাদের জনসমর্থন কতটা কমেছে, সেটা নিখুঁতভাবে জানার সুযোগ নেই।
ইসরায়েলের নৃশংস হামলা শুরুর আগে হামাসের বিরোধী একটা পক্ষ ছিল। তবে প্রতিহিংসার ভয়ে কেউ তাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কথা বলতেন না।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র
এছাড়াও পড়ুন:
পাকিস্তানে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পদেও আইএসআই প্রধান মালিক
পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) বর্তমান মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল মুহাম্মদ অসিম মালিক। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের খবরে এই তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারিভাবে দেশের প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের বর্তমান মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল মুহাম্মদ অসিম মালিককে নতুন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি পাকিস্তানের দশম জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা।
গত মঙ্গলবার মন্ত্রিসভা বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জেনারেল মালিক আইএসআই মহাপরিচালক হিসেবে তার বর্তমান পদেও বহাল থাকবেন।২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে তিনি এই পদে রয়েছেন। প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, লেফটেন্যান্ট জেনারেল মুহাম্মদ অসিম মালিক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করবেন।
তার এই নিয়োগের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো একজন আইএসআই প্রধান একই সঙ্গে এনএসএ'র দায়িত্ব পেলেন। সম্প্রতি ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সামরিক উত্তেজনার মধ্যে লেফটেন্যান্ট জেনারেল মুহাম্মদ অসিম মালিক নতুন দায়িত্ব পাওয়ার খবর এলো।
২০২২ সালের এপ্রিলে ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পিটিআই সরকার অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে পাকিস্তানের এনএসএ পদটি শূন্য ছিল। সে সময় মঈদ ইউসুফ এনএসএ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।