শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় রাজশাহীর বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রদল নেতা শিবলী নোমানী ইসলাম নিলয়কে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে।

এছাড়া তিন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাময়িক বহিষ্কার এবং দুই শিক্ষার্থীকে প্রাথমিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ও শৃঙ্খলা কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শিবলী নোমানী ইসলাম নিলয়ের আচরণ হয়ে উঠেছিল অত্যন্ত বেপরোয়া।

শাস্তি পাওয়া অন্য তিন শিক্ষার্থী হলেন- আইন ও মানবাধিকার বিভাগের শিক্ষার্থী ফারারুজ্জামান বাধন, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের নূর-ই আলম সিদ্দিকী ও রিজওয়ান তানভীর মীম।

এর মধ্যে, বাধনকে দুই সেমিস্টার ও নূর-ই আলমকে এক সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। রিজওয়ানের পড়াশোনা শেষ হয়ে যাওয়ায় তার সনদ ছয়মাসের জন্য অকার্যকর ঘোষণা করা হয়েছে।

এছাড়া ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী সোয়াইব হোসেন ও মুরশিদা মেহেরিন হাসিকে কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়েছে।

ছাত্রদল নেতা শিবলী নোমানী ২০২৩ সালের সামার সেমিস্টারে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। তার বাবা শফিকুল ইসলাম রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবলী ছাত্রদলের কমিটি করার চেষ্টা করছিলেন।

জানা গেছে, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ। তারপরও ছাত্রদল নেতা শিবলী নোমানী সেখানে রাজনীতি শুরু করেছিলেন। তিনি শিক্ষার্থীদের দিয়ে জোরপূর্বক ছাত্রদলের ফরম পূরণ করতে বাধ্য করতেন। এছাড়া কথায় কথায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, বিচার বিভাগ এমনকি পুলিশ-প্রশাসনকে কটূক্তি করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন শিবলী। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছিল।

ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী না হলেও গত ২৮ নভেম্বর শিবলী ওই বিভাগের একটি অনুষ্ঠানে যান এবং এক শিক্ষার্থীকে হুমকি-ধামকি দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১ ডিসেম্বর ক্যাম্পাসে ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়। এতে ওই শিক্ষার্থীর চোয়ালের হাড় ভেঙে যায়। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে ওই শিক্ষার্থীর চিকিৎসায় বাধা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে এ ঘটনায় চন্দ্রিমা থানায় একটি মামলা করে আহত শিক্ষার্থীর পরিবার।

এ মামলায় জামিন না দিলে একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে নিয়েও ফেসবুকে আপত্তিকর স্ট্যাটাস দেন শিবলী নোমানী। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার বিরুদ্ধে এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো.

হাবিবুল্লাহ বলেন, “সার্বিক বিষয় নিয়ে তদন্ত হয়েছে। তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দিয়েছে। পাশাপাশি শৃঙ্খলা কমিটিও সুপারিশ করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সিন্ডিকেট সভায় চারজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দুজনকে সতর্ক করা হয়েছে।”

এ বিষয়ে কথা বলতে বুধবার (২৬ মার্চ) শিবলী নোমানী ইসলাম নিলয়ের মোবাইলে কয়েকদফা ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

ঢাকা/কেয়া/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ন ত ব যবস ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

ক্যানসারে আক্রান্ত ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারো

ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর শরীরে ত্বকের ক্যানসার শনাক্ত হয়েছে। বমি ও নিম্ন রক্তচাপের কারণে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার শরীরে ক্যানসারের প্রাথমিক ধাপ ধরা পড়ে। বর্তমানে তিনি গৃহবন্দি অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আনাদোলু এজেন্সি।

আরো পড়ুন:

৬ বছর পর ব্রাজিলকে হারিয়ে বিশ্বকাপ প্লে-অফে বলিভিয়া

মারাকানায় ব্রাজিলের বড় জয়

প্রতিবেদনে বলা হয়, এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার একদিন পর তার ত্বকের ক্যানসারের প্রাথমিক ধাপ ধরা পড়ে।

বুধবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, তার ত্বকের পরীক্ষা করে ‘স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা’ শনাক্ত হয়েছে।এটি ত্বকের মাঝারি মাত্রার ক্যানসার, যা সবচেয়ে হালকা ও সবচেয়ে আক্রমণাত্মক ধাপের মাঝামাঝি পর্যায়ে রয়েছে।

চিকিৎসকরা বলেছেন যে, নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে তার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হবে। ৭০ বছর বয়সী বলসোনারো গত মঙ্গলবার বমি এবং নিম্ন রক্তচাপের কারণে ব্রাসিলিয়ার একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে ক্যানসারের বিষয়টি গত রবিবারের পরীক্ষায় ধরা পড়ে, যখন তার বুক ও হাতে থাকা ক্ষতস্থানের টিস্যু অপসারণ করা হয়েছিল।

তার অনকোলজিস্ট ক্লাউদিও বিয়ারোলিনি জানিয়েছেন, বলসোনারোর ক্যানসার ‘ইন সিটু’ ধাপে রয়েছে, অর্থাৎ অস্বাভাবিক কোষগুলো এখনো ছড়িয়ে পড়েনি। অস্ত্রোপচারই এর চিকিৎসার জন্য যথেষ্ট হবে। বর্তমানে বলসোনারোর শরীরে সেলাই ও ব্যান্ডেজ রয়েছে, যা দুই সপ্তাহের মধ্যে খোলা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বুধবার তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাসায় ফিরেছেন, যেখানে তিনি গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছেন।

বলসোনারো ২০২২ থেকে ২০২৩ সালে ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্রে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগেই গৃহবন্দি ছিলেন। সম্প্রতি তাকে ২৭ বছর তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

বিচারপতি আলেকজান্দ্রে দে মোরেসের নির্দেশ অনুযায়ী, গৃহবন্দিত্বে থাকলেও চিকিৎসা জরুরি হলে তিনি বাসার বাইরে যেতে পারেন। তবে প্রতিবারই তার আইনজীবীদের আদালতে চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হয়।

বলসোনারোর সমর্থকরা তার স্বাস্থ্য পরিস্থিতিকে যুক্তি হিসেবে তুলে ধরছেন, যাতে তিনি কারাগারে না গিয়ে বাড়িতেই সাজা ভোগ করতে পারেন। তাদের দাবি, কারাগারে নিলে তার শারীরিক জটিলতা বা দুর্ব্যবহারের ঝুঁকি বাড়বে।

তার জ্যেষ্ঠ পুত্র সিনেটর ফ্লাভিও বলসোনারো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, “আমার বাবা আগেও কঠিন লড়াই লড়ে জয়ী হয়েছেন। এবারও ভিন্ন কিছু হবে না।”

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ