রাজধানীর গুলশান ও বাড্ডা এলাকার চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে স্থানীয় মেহেদী ও রবিন নামের দুটি সন্ত্রাসী গ্রুপের দ্বন্দ্ব চলছিল। এই বিরোধের জেরে মেহেদীর নির্দেশে ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবসায়ী সুমন মিয়াকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। এ জন্য গঠন করা হয় পাঁচজনের একটি ‘কিলার গ্রুপ’। তারা পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০ মার্চ সুমনকে গুলি করে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সুমন দৌড়ে পালানোর সময় সন্ত্রাসীরা তাঁকে আরও কয়েকটি গুলি করে।

এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পটুয়াখালী এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার অভিযান চালিয়ে ওয়াসির মাহমুদ ওরফে সাঈদ (৫৯) ও মামুন ওরফে বেলালকে (৪২) টঙ্গী পূর্ব থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানা গেছে বলে র‍্যাবের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ বুধবার জানানো হয়।

র‍্যাব জানায়, মেহেদী নামের এক ব্যক্তি মো.

ওয়াসির মাহমুদের মাধ্যমে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে কয়েক বছর ধরে গুলশান ও বাড্ডা এলাকায় চাঁদাবাজি করে আসছিলেন। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর মেহেদী পালিয়ে বিদেশে চলে যান। সেখান থেকে তিনি ওয়াসির মাহমুদের মাধ্যমে গুলশান ও বাড্ডা এলাকার চাঁদা সংগ্রহ করতেন। কিন্তু তখন অন্য একটি সন্ত্রাসী দল রবিন গ্রুপের হয়ে ভুক্তভোগী সুমন গুলশান বাড্ডা এলাকায় চাঁদাবাজি শুরু করেন। গুলশান এলাকার বিভিন্ন বিপণিবিতানে চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মেহেদী গ্রুপের সঙ্গে রবিন গ্রুপের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। এই বিরোধের জেরে মেহেদীর নির্দেশে সুমনকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন ওয়াসির মাহমুদ।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও হয়, হামলার ৮ থেকে ১০ দিন আগে সুমনকে হত্যার উদ্দেশ্যে বিল্লাল ও মামুনের নেতৃত্বে পাঁচজনের একটি কিলার গ্রুপ গঠন করেন ওয়াসির মাহমুদ। এর পর থেকে তারা সুমনের ওপর নজর রাখা শুরু করে। ঘটনার দিন ২০ মার্চ ওয়াসির মাহমুদের বাসায় সবাইকে নিয়ে বৈঠক করেন। এরপর তাঁর বাসা থেকে অস্ত্র নিয়ে গুলশান এলাকায় যান। রাত নয়টার দিকে সুমনকে গুলশান পুলিশ প্লাজার সামনে ডাক্তার ফজলে রাব্বি পার্কের সামনে বসে থাকতে দেখে গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীরা। গুলি লাগার পর সুমন দৌড়ে পালাতে গেলে তাঁকে আরও কয়েকটি গুলি করা হয়।

ঘটনার দিন সুমনের স্ত্রীর বড় ভাই বাদশা মিয়া জানিয়েছিলেন, সুমনের বাড়ি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায়। তাঁর বাবার নাম মাহফুজুর রহমান। তিনি রাজধানীর ভাষানটেক এলাকায় থাকতেন। তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।

আরও পড়ুনগুলশানে পুলিশ প্লাজার সামনে যুবককে গুলি করে হত্যা২০ মার্চ ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র স মন এল ক য় স মনক

এছাড়াও পড়ুন:

জকসুর গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা, নির্বাচনী আচরণবিধির সংশোধন চায় ছাত্রদল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা এবং নির্বাচনী আচরণবিধি সংশোধনে নির্বাচন কমিশনকে স্মারকলিপি দিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। সোমবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসানের কাছে এ স্মারকলিপি দেন ছাত্রদলের নেতারা।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘আসন্ন জকসু নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন গোষ্ঠী জকসু সংবিধি এবং নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা নিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালাচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন কমিশন একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য দায়বদ্ধ। ন্যায্য ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিতে আমাদের অনুরোধ, ভোটার তালিকা প্রকাশের সময় প্রত্যেক ভোটারের ছবিসহ তালিকা প্রকাশ করতে হবে। নির্বাচনে অমোচনীয় কালি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং স্বচ্ছ, নাম্বারযুক্ত ব্যালট বক্স রাখা আবশ্যক।’

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ব্যালট ছাপার সংখ্যা, ভোট প্রদানকারীর সংখ্যা এবং নষ্ট ব্যালটের তথ্য প্রকাশ করতে হবে। মিডিয়া ট্রায়াল বা ভুল তথ্য প্রচার হলে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের বিরুদ্ধে কেন্দ্র থেকে সরাসরি ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকার অনুমোদিত সব মিডিয়াকে নির্বাচনকালীন সময়ে পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ডাকসুর তফসিল ঘোষণার ৪১ দিন, চাকসুর ৪৪ দিন, রাকসুর ৮০ দিন এবং জাকসুর তফসিল ঘোষণার ৩১ দিন পর নির্বাচন হয়েছে। যেহেতু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় একটি অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়, তাই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। এ ছাড়া বাকি চার বিশ্ববিদ্যালয়ের তফসিল ঘোষণার সময় ও নির্বাচনের মধ্যবর্তী পার্থক্য বিবেচনা করে জকসু নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করতে হবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতে সুষ্ঠু একটা নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়, এজন্য ছাত্রদল নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজকে আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি। আশা করছি, নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন আমাদের দাবিগুলো মেনে নেবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ