ভারতের চ্যাংড়াবান্ধায় এক বাংলাদেশি যাত্রীকে হেনস্তা করে ফেরত পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে।  মঙ্গলবার সকালে কাস্টমস কর্মকর্তার ইন্ধনে কয়েকজন চালক ও মানি এক্সচেঞ্জ কর্মচারী এ হেনস্তা করেন। স্থানটি লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দরের ওপারে অবস্থিত।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী আজাদুর রহমান ঢাকার পল্লবীর বাসিন্দা। তাঁর ছেলে ভারতের দার্জিলিংয়ের কার্শিয়াং এলাকার একটি বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে। তিনি ছেলেকে আনতে সিঙ্গেল এন্ট্রি ভিসা নিয়ে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় বুড়িমারী স্থলবন্দরে আসেন। ইমিগ্রেশন দিয়ে ভারতের চ্যাংড়াবান্ধা স্থলবন্দর ইমিগ্রেশনে যান। কোনো দালাল না ধরে ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করে এক কাস্টমস কর্মকর্তার কাছে যান। কাস্টমস কর্মকর্তা মানি এক্সচেঞ্জের একটি প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে ডলার বিনিময় করতে বলেন। আজাদ পছন্দ মতো প্রতিষ্ঠানে ডলার বিনিময় করবেন বলে কাস্টমস কর্মকর্তাকে জানান। এ কথা বলায় ওই কর্মকর্তা কয়েকজন চালক ও মানি এক্সচেঞ্জ কর্মচারীকে আজাদের পেছনে লেলিয়ে দেন। 

আজাদ অন্য প্রতিষ্ঠানে মুদ্রা বিনিময় করে গাড়িতে উঠতে গেলে কয়েকজন চালক ও মানি এক্সচেঞ্জ কর্মচারী গাড়িতে উঠতে বাধা দেন। এ সময় আজাদের সঙ্গে থাকা ট্রাভেল ব্যাগ মাটিতে ছুড়ে ফেলে দেন। তাঁকে হেঁটে যেতে বলেন। তিনি সড়কে চলাচলরত অটোতে এবং পরে বাসে উঠতে চাইলে বাধা দেন। প্রায় তিন কিলোমিটার হেঁটে ট্রাফিক পুলিশের শরণাপন্ন হন। মেখলিগঞ্জ থানা ও চ্যাংড়াবান্ধা ইমিগ্রেশন পুলিশকে ডেকে আনেন ভারতীয়রা। ওই কর্মচারীরা আজাদকে ঘিরে গাোগাল করতে থাকেন। অবস্থা বেগতিক দেখে আজাদকে পুলিশ মেখলিগঞ্জ থানায় নিয়ে যায়। পুলিশের গাড়িতে চ্যাংড়াবান্ধায় ফেরত পাঠায়। ইমিগ্রেশন পুলিশ ভিসা বাতিল করে তাঁকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠায়। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের কাছে ঘটনা তুলে ধরেন আজাদ।

এ বিষয়ে বুড়িমারী স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশের উপপরিদর্শক আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘গাড়িতে ওঠা নিয়ে চালকের সঙ্গে বিতর্ক হয়। ভারত নিয়ে আপত্তিকর কথা বলায় স্থানীয়রা উত্তেজিত হয় বলে শুনেছি।’


 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ