র্যাব, ম্যাজিস্ট্রেট ও ছাত্র পরিচয়ে বাসায় ঢুকে ডাকাতি
Published: 26th, March 2025 GMT
রাজধানীর ধানমন্ডিতে ‘অলংকার নিকেতন জুয়েলার্সের’ মালিক এম এ হান্নান আজাদের বাসায় র্যাব, ম্যাজিস্ট্রেট ও ছাত্র পরিচয়ে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। জনতার সহায়তায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পালিয়ে যাওয়ার সময় ডাকাতদের হামলায় পুলিশের দুই সদস্য আহত হন। এছাড়া ডাকাতরা নগদ ২৫ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে।
গ্রেপ্তার চারজন হলেন—ফরহাদ বীন মোশারফ (৩৩), ইয়াছিন হাসান (২২), মোবাশ্বের আহম্মেদ (২৩) ও ওয়াকিল মাহমুদ (২৬)।
বুধবার ডিএমপির রমনা বিভাগের ধানমন্ডি জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) শাহ মোস্তফা তারিকুজ্জামান এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বুধবার ভোর ৫টার দিকে ধানমন্ডির ৮ নম্বর সড়কের একটি বাসায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে অভিযানের নামে ডাকাতি হয়। ডাকাত দলের ২০–২৫ জন সদস্য নিজেদের র্যাব, ম্যাজিস্ট্রেট ও ছাত্র বলে পরিচয় দেয়। ডাকাত দলের অন্তত ১০জন র্যাবের পোশাকে ছিলেন।
এসি শাহ মোস্তফা তারিকুজ্জামান বলেন, বাসার মালিকের সন্দেহ হওয়ায় তিনি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ ফোন দেন। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের একটি টহল দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এ সময় দুই পুলিশ সদস্যের ওপর হামলা করে পালিয়ে যায় ডাকাতরা। পরে পাশেই ভবনের নির্মাণ শ্রমিকদের সহযোগিতায় চার ডাকাতকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ডাকাতরা নগদ ২৫ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় জুয়েলার্সের মালিকের ভাগিনা তৌহিদুল ইসলাম লিমন বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় মামলা করেছেন। গ্রেপ্তার চারজনসহ পলাতক অন্যদের আসামি করা হয়েছে। এছাড়া সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পলাতক কয়েকজন ডাকাতকে শনাক্ত করা গেছে। বাকিদের শনাক্তের কাজ চলমান।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ধ নমন ড
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।