মৃত্যুর আড়াই মাস পর ছাত্র-জনতার ওপর হামলা মামলার আসামি বীর মুক্তিযোদ্ধা
Published: 27th, March 2025 GMT
মৃত্যুর আড়াই মাস পর ছাত্র-জনতার ওপর হামলার মামলায় আসামি হলেন রাজশাহী মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আবদুল মান্নান। রোববার (২৩ মার্চ) রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানায় দায়ের করা মামলায় ৫৮ নম্বর আসামি তিনি। মামলাটির বাদী জামায়াত ইসলামীর সহযোগী সংগঠন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কর্মী আব্দুল আলীম দুলাল (২২)। তিনি রাজপাড়া থানার মোল্লাপাড়া মহল্লার মুশারফ হোসেনের ছেলে।
মামলাটিতে প্রধান আসামি করা হয়েছে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারকে। মামলার দুই নম্বর আসামি হলেন রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সাবেক স্বতন্ত্র এমপি মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শফিকুর রহমান বাদশার ছেলে রুয়েট কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান দীপন। মামলায় রাজশাহী-৩ আসনের সাবেক এমপি আয়েন উদ্দীনসহ ১২৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতপরিচয়ে আরও ৩৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
জানা গেছে, আবদুল মান্নান মুক্তিযোদ্ধা সংসদের রাজশাহী মহানগরের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ছাত্র থাকা অবস্থায় তিনি একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। আবদুল মান্নান অসুস্থ হয়ে গত ১৭ জানুয়ারি ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরদিন রাজশাহীর টিকাপাড়া গোরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার মরদেহ দাফন করা হয়।
এ বিষয়ে কথা বলতে আব্দুল আলীম দুলালের মোবাইল ফোনে কল করা হলে মামলার বাদীর ভাই জামায়াত কর্মী শফিকুল ইসলাম বলেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে আব্দুল আলীম আলুপট্টি এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন।
মৃত ব্যক্তিকে আসামি করার বিষয়ে শফিকুল ইসলাম জানান, তিনি জামায়াতে ইসলামীর কর্মী। আর তার ভাই আব্দুল আলীম বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সমর্থক। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ওপর হামলায় তার ভাই আলীম গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। সংগঠনের তদারকিতে মামলা করা হয়েছে। আমাদের মুরুব্বিরা সবকিছু করেছেন। কোনো বিষয়ে কথা বলার থাকলে জামায়াতে ইসলামীর সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন সরকারের সঙ্গে কথা বলতে পারেন।
জানতে চাইলে জসিম উদ্দিন সরকার বলেন, মামলা সম্পর্কে তেমন কিছু জানি না। খোঁজ নিয়ে পরে জানানো সম্ভব হবে।
এ বিষয়ে বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, আসামির তালিকায় মৃত ব্যক্তি আছেন কি- না তা জানা নেই। তদন্ত করে আসামিরা ঘটনায় যুক্ত কিনা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম ছ ত র জনত র ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
সচিবালয়মুখী শিক্ষক নিবন্ধনধারীদের মিছিলে পুলিশের বাধা, সাউন্ড গ্রেনেড, লাঠিচার্জ
নিষেধাজ্ঞা জারি থাকলেও সচিবালয় অভিমুখে মিছিল নিয়ে অগ্রসর হন ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনধারীরা। মিছিলটি প্রেসক্লাবের সামনে পৌঁছালে বাধা দেয় পুলিশ। মিছিলকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কয়েকটি সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে ও লাঠিচার্জ করে। এতে রাজধানীর প্রেস ক্লাব এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
আজ রোববার দুপুর সোয়া ১টার দিকে প্রেস ক্লাব সংলগ্ন সচিবালয়ের ৫ নম্বর ফটকের কাছে এ ঘটনা ঘটে। ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনধারীরা এনটিআরসিএর (বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ) আওতায় দ্রুত নিয়োগের দাবিতে প্রেস ক্লাব থেকে সচিবালয়ের দিকে পদযাত্রা শুরু করেন। তবে সচিবালয় এলাকায় আগে থেকে সভা-সমাবেশ, গণজমায়েত, মিছিল ও শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ ছিল বলে জানায় পুলিশ।
সরেজমিনে দেখা যায়, মিছিলকারীরা ব্যারিকেড অতিক্রম করে সচিবালয়ের ফটকের কাছাকাছি চলে গেলে পুলিশ তাদের থামার অনুরোধ করে। আন্দোলনকারীরা সেই অনুরোধ না মানলে পুলিশ প্রথমে পাঁচটি ও পরে আরও দুটি সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে এবং লাঠিচার্জ করে। এরপর বিক্ষোভকারীরা প্রেস ক্লাব মোড়ে ফিরে অবস্থান নেন।
শাহবাগ থানার পেট্রোল অফিসার জয়নাল আবেদিন সমকালকে বলেন, সচিবালয় এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ। সচিবালয়ের দিকে এগোতে চাইলে মিছিলকারীদের সরিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় তাদের ওপর লাঠিচার্জ কর হয়। এছাড়াও পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে বেশ কয়েকটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়।
মিছিলে অংশ নেওয়া এক নিবন্ধনধারী জানান, আমরা বারবার শান্তিপূর্ণভাবে দাবি জানাচ্ছি। অথচ সরকার বারবার তা উপেক্ষা করছে। এনটিআরসিএ ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে যাচ্ছে অথচ আমাদের ১৭তম ব্যাচের সমস্যার সমাধান করছে না। তাই বাধ্য হয়েই আমরা সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নিতে চাই।
তাদের প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—
১. ১৭তম ব্যাচের নিবন্ধিত প্রার্থীদের জন্য আপিল বিভাগের রায় অনুসারে বিশেষ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে অন্তত একবার আবেদন করার সুযোগ দিতে হবে।
২. ১৭তম ব্যাচের বিষয় নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির কার্যক্রম স্থগিত রাখতে হবে।
৩. আইন ও বিচার মন্ত্রণালয় এবং এনটিআরসিএর সুপারিশ অনুযায়ী দ্রুত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
এখনও আন্দোলনকারীরা প্রেস ক্লাব মোড়ে অবস্থান করছেন। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে এবং পরিস্থিতি থমথমে রয়েছে।