রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডি ৮ নম্বর সড়কে ভিকারুননিসা নূন স্কুলের গলিতে ছয়তলা একটি ভবনে গতকাল বুধবার ভোরে দুর্ধর্ষ ডাকাতির সময় ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে আটক করতে পুলিশকে সহায়তা করেন ছয় নিরাপত্তাকর্মী। সাহসিকতার জন্য ওই ছয়জনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে ও পুলিশের অক্সিলিয়ারি ফোর্সে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান প্রথম আলোকে এ কথা জানান। অক্সিলিয়ারি ফোর্স পুলিশের সহায়ক বাহিনী হিসেবে কাজ করে।

পুরস্কার পাওয়া ছয়জন হলেন স্বপন ভূঁইয়া (২৫), মো.

বিজয় (৪০), রিয়াজুল ইসলাম (৩৪), দেলোয়ার হোসেন (২০), মো. সিয়াম (১৮) ও মো. টনি (২০)। তাঁদের পাঁচ হাজার টাকা করে পুরস্কার দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।

গতকাল বুধবার ভোরে ধানমন্ডিতে ছয়তলা ওই ভবনে র‍্যাব পরিচয়ে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ভবনটিতে থাকা বাড়ি, স্বর্ণালংকারের দোকান ও কয়েকটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে ডাকাতেরা প্রায় সাড়ে ৩৬ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। ডাকাতির একপর্যায়ে পুলিশের ওপরও হামলা করা হয়।

ওই ভবনটি এম এ হান্নান আজাদের। একপর্যায়ে এম এ হান্নানকে জোর করে নিচে নিয়ে গাড়িতে ওঠানোর চেষ্টা করে ডাকাতেরা। এ সময় পাশের নির্মাণাধীন ভবনের ছয়জন নিরাপত্তাকর্মী চার ডাকাতকে ধরতে পুলিশকে সহায়তা করেন।

এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ও পালিয়ে যাওয়া আটজন ও অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা করা হয়। পরে আজ ভোরে হাজারীবাগ থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাতির ঘটনায় আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করে ধানমন্ডি থানা–পুলিশ।

আরও পড়ুনধানমন্ডিতে র‍্যাব পরিচয়ে ভবনে ঢুকে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, পুলিশের ওপর হামলা, গ্রেপ্তার ৬২ ঘণ্টা আগে

গ্রেপ্তার হওয়া মোট ছয়জন হলেন ফরহাদ বিন মোশারফ (৩৩), ইয়াছিন হাসান (২২), মোবাশ্বের আহাম্মেদ (২৩), ওয়াকিল মাহমুদ (২৬), আবদুল্লাহ (৩২) ও সুমন (২৯)।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ধ নমন ড প রস ক

এছাড়াও পড়ুন:

গোদাগাড়ীতে সন্ত্রাসী হামলায় নারীসহ ৬ জন আহত

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছে একটি পরিবার। এতে ছয়জন আহত হয়েছেন। এছাড়া তাদের বাড়িঘরে ভাঙচুর করা হয়েছে। ধানের পালায় অগ্নিসংযোগ এবং খেতের পেয়ারা বাগান কেটে দেয়া হয়েছে। এতে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

গোদাগাড়ী উপজেলার চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের পানিপার গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার (১১ জুন) প্রথমে পেয়ারা বাগানের ৪১টি গাছ কেটে ফেলা হয়। এরপর দিন হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। আহত ছয়জন এখন গোদাগাড়ী ৩১ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। 

হাসপাতালে ভর্তিরা হলেন, চর আষাড়িয়াদহ পানিপার গ্রামের আল্লাম হোসেন, তার ছেলে গোলাম মোস্তফা বাবু, মেয়ে ফাতেমা বেগম, নাতি জিহাদ (১৪), ইয়াকুব আলী এবং তাদের প্রতিবেশী বকুল ওরফে কান্দু। তাদের মধ্যে আল্লামের পায়ের রগ কেটে দেয়া হয়। ফাতেমার গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করা হয়। এছাড়া তাকে শ্লীলতাহানিও করা হয়।

আরো পড়ুন:

বগুড়ায় আসামির ছুরিকাঘাতে ২ পুলিশ আহত

আড়াইহাজারে জামায়াতের পথসভায় বিএনপির হামলা, আহত ৫

আহতরা জানান, দিয়াড় মহব্বতপুর গ্রামের জামিলুর রহমানের কাছ থেকে আল্লাম হোসেনের স্ত্রী ও ছেলে গোলাম মোস্তফা ২০১৬ সালের ১৮ মে  শন্য দশমিক ৪৯৫০ একর ও তার আরেক ছেলে মুরশালীন ইসলাম ২০১৮ সালের ৯ মে শূন্য দশমিক ১১০০ একর জমি কেনেন। এর দলিলও করা হয়। জামিলুর রহমান আরএস রেকর্ডমূলে জমি বিক্রি করেন। পরে বিডিএস রেকর্ডে দলিলের কথা গোপন করে এসব জমি আবার নিজেদের নামে রেকর্ড করা হয়। এরপর থেকে তারা জমিগুলো আবার দখলের চেষ্টা করছিলেন।

তারা আরো জানান, জমি কেনার পর প্রায় পাঁচ বছর আগে সেখানে পেয়ারা বাগান করা হয়। গত ১১ জুন সকালে জামিলুর রহমান ও তার ভাই আদিল হোসেনের নেতৃত্বে তাদের ছেলেরা গিয়ে পেয়ারা বাগানের ৪১টি গাছ কেটে ফেলে। এ ঘটনায় আল্লাম হোসেন গ্রামের লোকজনের কাছে নালিশ করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে পরদিন জামিলুর রহমান, তার ভাই আদিল হোসেন এবং তাদের ভাড়াটে সন্ত্রাসী বাহিনী ধারালো হাঁসুয়া, চাইনিজ কুড়াল, বল্লম ও বাঁশের লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আল্লাম হোসেনের বাড়িতে হামলা চালান। বাড়িটিতে ভাঙচুর করা হয়। অগ্নিসংযোগ করা হয় ধানের পালায়। দুই দিনের হামলায় প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন তারা। 

আহত আল্লাম হোসেন জানান, হামলাকারীরা তার পায়ের রগ কেটে দিয়েছে। ধানের পালার আগুন নেভাতে গেলে হামলাকারীরা তার নাতি জিহাদকে ধাক্কা দিয়ে আগুনের ভেতর ফেলে দেয়। এতে তার পা পুড়ে যায়। তার আরেক নাতি ইয়াকুবকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। তাদের বাঁচাতে গেলে মেয়ে ফাতেমার গলায় হাঁসুয়া দিয়ে আঘাত করা হয়। তাকে শ্লীলতাহানিও করা হয়। ছেলে গোলাম মোস্তফা বাবুকে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করা হয়। তাকে বাঁচাতে গেলে প্রতিবেশী বকুলকেও পিটিয়ে আহত করা হয়।

ভুক্তভোগী আল্লাম আরো জানান, হামলাকারীরা তাদের আহত অবস্থায় ফেলে গেলে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। হামলাকারীরা এখনো তাদের বাড়ি ঘিরে রেখেছেন। জমির দাবি করলে তাদের মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন। তারা নিরাপত্তাহীনতায় আছেন। হাসপাতাল থেকে তাদের ছুটি দেয়া হলে এ ঘটনায় তারা মামলা করবেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত জামিলুর রহমানকে কয়েকদফা ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন জানান, ঘটনা তিনি শুনেছেন। আহতরা থানায় অভিযোগ করতে চেয়েছেন। অভিযোগ করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। 
 

ঢাকা/কেয়া/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এরকম ঘটনা আমি জীবনেও দেখিনি: ইসরায়েলি বাসিন্দা
  • গোদাগাড়ীতে সন্ত্রাসী হামলায় নারীসহ ৬ জন আহত
  • সালিশে বেত্রাঘাত করায় সংঘর্ষ, ছাত্রদল নেতাসহ আহত ৬
  • ত্রাণবাহী জাহাজ ‘ম্যাডলিন’ থেকে আটক ৬ অধিকারকর্মীকে ছাড়ল ইসরায়েল