রাজধানীর ধানমন্ডিতে র‌্যাব পরিচয়ে দুর্ধর্ষ ডাকাতি করা হয়েছে। ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম ও নগদ টাকাসহ ডাকাতদলের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টার থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

গ্রেপ্তার ছয় জন হলো— ফরহাদ বীন মোশারফ, ইয়াছিন হাসান, মোবাশ্বের আহাম্মেদ, ওয়াকিল মাহমুদ, আবদুল্লাহ এবং সুমন। এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ‘RAB’ লেখাসম্বলিত কালো রঙের দুটি জ্যাকেট, তিনটি কালো রঙের ‘RAB’ লেখাসম্বলিত ক্যাপ, একটি মাইক্রোবাস, পাঁচটি মোবাইল ফোন, একটি লোহার তৈরী ছেনি, একটি পুরাতন লাল রঙের স্লাই রেঞ্জ এবং নগদ ৪৫ হাজার ১০০ টাকা জব্দ করা হয়েছে।

ধানমন্ডি থানা সূত্রে জানা গেছে, ধানমন্ডিতে এম এ হান্নান আজাদের ‘অলংকার নিকেতন জুয়েলার্স’ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে। ভিকারুননিসা নূন স্কুলের ধানমন্ডি শাখার গলিতে নিজ বাড়ির নিচতলা, তৃতীয় তলা ও চতুর্থ তলায় এস এম সোর্সিং নামীয় প্রতিষ্ঠানের অফিস আছে। এছাড়া, ওই বিল্ডিংয়ের দ্বিতীয় তলায় একটি কনসালট্যান্সি অফিস এবং পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলা নিয়ে এম এ হান্নান আজাদের ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাট আছে। বুধবার (২৬ শে মার্চ) ভোরে  তিনটি মাইক্রোবাস ও একটি প্রাইভেটকারে করে ডাকাতরা দলবদ্ধভাবে ওই বাসার সামনে এসে ফটকে দায়িত্ব পালনরত নিরাপত্তাকর্মীদের বলে যে, তারা র‌্যাবের লোক, তাদের সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট আছেন। তারা বাড়িতে অভিযান চালাবে বলে তাড়াতাড়ি গেট খুলতে বলে। তাদের কয়েকজনের গায়ে ‘RAB’ লেখাসম্বলিত কটি ছিল। নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেন। তখন ডাকাতরা নিরাপত্তাকর্মীদের গালাগালি করতে থাকে এবং গেট না খুললে হত্যার হুমকি দেয়। তাদের মধ্যে কয়েকজন গেটের ওপর দিয়ে উঠে জোর করে গেট খুলে ফেলে। এরপর তারা সবাই জোর করে বাড়ির ভেতরে ঢুকে নিরাপত্তাকর্মী, বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক ও গাড়িচালককে দঁড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে। এরপর তারা নিচতলার অফিসের গেট ভেঙে পিয়নকে মারধর করে এবং হত্যার ভয় দেখিয়ে তার কাছে থাকা নগদ ৪৫ হাজার ১০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। 

এরপর ডাকাতরা তৃতীয় তলায় গিয়ে এস এম সোর্সিংয়ের অফিসের গেট ভেঙে ফেলে। গেট ভাঙার শব্দ পেয়ে চতুর্থ তলায় থাকা এস এম সোর্সিংয়ের তিন জন অফিস সহকারী তৃতীয় তলায় নেমে আসেন। ডাকাতরা তখন তাদের আটকে মারধর করে অফিসের চাবি ও বাসার চাবি দিতে বলে। ডাকাতরা জোর করে চাবি নিয়ে তৃতীয় তলার অফিসের দরজা খুলে ভেতরে ঢোকে এবং অফিসের ড্রয়ার ভেঙে নগদ ২২ লাখ টাকা লুট করে ও অফিসের বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। তাদের আরেকটি দল চতুর্থ তলার অফিসের দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে আলমারি ভেঙে নগদ ১৩ লাখ টাকা লুট করে। এরপর তারা মালিক এম এ হান্নান আজাদের পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলার ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, স্বর্ণের দুল ও চেইনসহ আনুমানিক ২.

৫ ভরি স্বর্ণ (যার দাম ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা) লুট করে। এরপর তারা মালিক এম এ হান্নানকে জোর করে নিচে নিয়ে গাড়িতে ওঠানোর চেষ্টা করে। তখন ধানমন্ডি থানার একটি টহল টিম ওই বাড়ির সামনে হাজির হয়ে ডাকাতদের হাত থেকে তাকে উদ্ধার করে। এ সময় ডাকাতরা তাদের হাতে থাকা ছেনি ও রেঞ্জ  দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করে। তাদের হামলায় পুলিশের কয়েকজন সদস্য আহত হন। তখন আশেপাশে থাকা লোকজনের সহায়তায় পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। 

এ ঘটনায় ২৬ মার্চ প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ও মালিকের ভাগ্নে তৌহিদুল ইসলামের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেপ্তার ছয় জনসহ আট জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরো ১০-১২ জনকে আসামি করে ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

ঢাকা/এমআর/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এম এ হ ন ন ন এরপর ত র র অফ স র ধ নমন ড জ র কর

এছাড়াও পড়ুন:

কমিটি নেই, সবাই নেতা

কয়রা উপজেলা বিএনপির কমিটি নেই একযুগ। দীর্ঘদিন ধরে চলেছে আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে। সেটিও ভেঙে দেওয়া হয়েছে ৪ মাস আগে। কমিটি না থাকায় দলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা বাড়ছে। ভেঙে পড়ছে সাংগঠনিক শৃঙ্খলাও। কেউ কারও কথা শুনছেন না। অবস্থা এমন, যেন সবাই নেতা– অভিযোগ স্থানীয় নেতাকর্মীর। 
কমিটি না থাকলেও উপজেলার একশ মিটারের মধ্যে পৃথক দুটি কার্যালয় রয়েছে। একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক (বর্তমানে বহিষ্কৃত) নুরুল আমিন বাবুল। আরেকটি কার্যালয় চলছে খুলনা জেলা বিএনপির সদস্য এম এ হাসানের নেতৃত্বে। নেতৃত্বের এ দ্বন্দ্বের কারণে দীর্ঘদিন ধরে উপজেলায় সাংগঠনিক কার্যক্রমে গতি নেই। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছাড়া অন্যান্য কর্মসূচিতে কার্যক্রমও সীমিত। এ অবস্থায় দ্রুত কমিটি দেওয়ার দাবি দলীয় নেতাকর্মীর।
পৃথক কার্যালয়ের বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্য এম এ হাসান বলেন, উপজেলায় একটি দলীয় কার্যালয় ছিল। পরে স্থানীয় একজন নেতা তাঁর অনুসারীদের নিয়ে আরেকটি কার্যালয় খুলেছেন; যা সংগঠনবিরোধী কাজ। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ওই নেতাকে বহিষ্কার করা হলেও এখন পর্যন্ত তিনি কার্যালয়টি বন্ধ করেননি। 
দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মনজুর আলম বলেন, ৫ আগস্টের পর দুই নেতার বিরোধ স্পষ্ট হয়েছে। আগে দলে বিভক্তি থাকলেও আলাদা কার্যালয় ছিল না। এখন দুটি কার্যালয় থাকায় বিভ্রান্ত হচ্ছেন কর্মী-সমর্থকরা। 
২০১৩ সাল পর্যন্ত উপজেলায় বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ছিল। এরপর দুই দফায় আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২৪ মার্চ মোমরেজুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও নুরুল আমিন বাবুলকে সদস্য সচিব করে আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয় জেলা বিএনপি। এরপর থেকে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের অনুসারীদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। গত ২১ সেপ্টেম্বর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে নুরুল আমিনকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। এ অবস্থায় চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি সম্মেলনের মাধ্যমে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু। 
এদিকে কমিটি না থাকায় বেশির ভাগ নেতা স্বার্থের দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন। কয়েকজনের বিরুদ্ধে হাট, ঘাট, খাল দখলের অভিযোগ রয়েছে। সরকারি সুবিধায় হস্তক্ষেপেরও অভিযোগ আছে। এতে দলের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এ অবস্থায় দ্রুত কমিটি গঠন করা জরুরি বলে মনে করেন বিএনপির সাবেক নেতা আব্দুস সামাদ। 
সাবেক আহ্বায়ক নুরুল আমিন বলেন, ভিত্তিহীন অভিযোগে আমাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। বর্তমানে দলীয় কোনো কার্যক্রমে অংশ নিতে পারছি না। আশা করছি খুব দ্রুতই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার হবে। তখন গ্রহণযোগ্য কমিটি গঠনের চেষ্টা করব। 
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোমরেজুল ইসলাম বলেন, এ মুহূর্তে কয়রায় বিএনপির কোনো কমিটি নেই। কমিটি হলে দলীয় সব বিরোধ মিটে যাবে বলে আশা করছি। 
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু বলেন, কয়রায় কমিটি গঠনের জন্য জেলা বিএনপি থেকে ৫ সদস্যের সার্চ কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। ওই কমিটি নেতাকর্মীর বিরোধও নিষ্পত্তি করবে। দ্রুতই ঐক্যবদ্ধ একটি কমিটি উপহার দেওয়া হবে।

 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • স‌চিবাল‌য়ে কর্মচারী‌দের বি‌ক্ষোভ, চল‌বে মঙ্গলবারও 
  • পুরনো স্বাদের ঝুরা মাংসের
  • ভাত খাওয়ার সময় কেন ভাতটাই পরে খেতে বলেন চিকিৎসকেরা?
  • অ্যান্টার্কটিকায় বিরল স্কুইডের সন্ধান
  • পানিতে ভাসছিল ২২ দিনের শিশুর মৃতদেহ, ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন মা
  • বাঁধন কাঁদলেন, কিন্তু কেন...
  • মামাত বোনকে ধর্ষণ-হত্যা করে নিখোঁজের গল্প সাজায় নয়ন: পুলিশ
  • আমাদের যত ঘুঘু 
  • বাউন্ডারি সীমানায় ক্যাচের নিয়ম পাল্টাচ্ছে এমসিসি
  • কমিটি নেই, সবাই নেতা