ঈদের ছুটিতে অর্থনীতিতে স্থবিরতা তৈরি হবে না বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘সবকিছু সচল থাকবে। ঈদের ছুটিতে উপদেষ্টা পরিষদের বেশির ভাগ সদস্য ঢাকায় থাকবেন।’

আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা এ কথাগুলো বলেন।

এবারের ঈদে যে দীর্ঘ ছুটি, তাতে অর্থনীতিতে স্থবিরতা তৈরি হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘না। দরকার হলে বন্ধের মধ্যে বৈঠক করব। আমাদের মধ্যে কথা হয়েছে। কেউ ছুটিতে বিদেশে গেলে জুম প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বৈঠক হবে।’

নিয়মিত প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার চিন্তা আছে বলেও জানান অর্থ উপদেষ্টা। তাঁর কাছে প্রশ্ন ছিল, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম যে ১০০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচি নিয়েছিলেন, তিনি এ ধরনের কিছু হাতে নেবেন কি না।

জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা এটা দেখব। তবে ১০০ দিনের কর্মসূচি থেকে ভালো হবে নিয়মিত প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।’

আজ অনুষ্ঠিত বৈঠকে টিসিবির মাধ্যমে আলু বিক্রির প্রস্তাব এসেছে বলে জানান অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আলু এত বেশি—কীভাবে টিসিবির মাধ্যমে বিক্রি করা যায়, সেই চিন্তা চলছে। একটা সমস্যা অবশ্য আছে। বেশি দামে কিনে সস্তা দামে দেওয়া অনেক ক্ষেত্রে কঠিন হয়ে পড়ে।

ক্রয় কমিটির বৈঠকে ১১টি এবং অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানান অর্থ উপদেষ্টা।

ক্রয় কমিটিতে সিঙ্গাপুর থেকে এক কার্গো এবং যুক্তরাজ্য থেকে এক কার্গো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ৩৬৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। গানভোর সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেড ও টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার প্রাইভেট লিমিটেড এলএনজি সরবরাহ করবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পিটার হাস কোন কোম্পানিতে আছেন, ভালো করে জানি না: অর্থ উপদেষ্টা

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করা হয় আন্তর্জাতিক বাজার যাচাই করে। যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, চীন, সিঙ্গাপুর—যে দেশ থেকেই আনা হয় না কেন, তুলনামূলক দর দেখা হয়। বিষয়টি এত সহজ নয় যে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কোম্পানিকে কাজ দিয়ে দেওয়া হবে। আর পিটার হাস কোন কোম্পানিতে আছেন, তা ভালো করে জানিও না আমরা।’

আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এ কথাগুলো বলেন।

অর্থ উপদেষ্টার কাছে প্রশ্ন ছিল, এলএনজি আমদানিতে বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের কোম্পানিকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে কি না।

মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি অ্যাকসিলারেট এনার্জির স্ট্র্যাটেজিক উপদেষ্টা পদে গত বছরের সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে যোগ দিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। এর আগে তিনি ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের ১৭তম রাষ্ট্রদূত হিসেবে ২০২২ সালের মার্চ থেকে গত এপ্রিল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।

অ্যাকসিলারেট এনার্জি যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের উডল্যান্ডে অবস্থিত বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ এলএনজি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। এলএনজি সরবরাহের পাশাপাশি এলএনজি রূপান্তরের ভাসমান টার্মিনাল ও অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ করে তারা।

বিভিন্ন দেশের ২৩টি কোম্পানি থেকে বাংলাদেশ এলএনজি আমদানি করছে। এর মধ্যে অ্যাকসিলারেট এনার্জিও রয়েছে।

কর্মসংস্থানকে বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বেশি কর্মসংস্থান হয় বেসরকারি খাতে। ব্যবসা–বাণিজ্য যদি একটু মন্থর হয়ে যায়, সেটা অবশ্যই প্রভাব পড়ে। ব্যবসাটা মাঝখানে একটু মন্থর ছিল, এখন একটু ভালো হয়েছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা পাল্টা শুল্কের হার ২০ শতাংশ থেকে আরও কমবে কি না জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা নির্ভর করবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ওপর। তারা ঘাটতিটা কমানোর জন্য কী কী আমদানি করতে পারে, দেখছে। সেখানে মোটামুটি আমরা ভালো অবস্থানে আছি।’

সার আমদানি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে কোনো ব্যবস্থা নেবেন কি না জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা বিষয়টা দেখছি। চট করে ব্যবস্থা নেব না। বিস্তারিত জানি না, সার আনে বেশির ভাগ কৃষি ও শিল্প মন্ত্রণালয়। এটা তাদের দায়িত্ব। বিষয়টা আরও খতিয়ে দেখব।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আন্তর্জাতিক দর যাচাই করে আমদানি হচ্ছে এলএনজি
  • পিটার হাস কোন কোম্পানিতে আছেন, ভালো করে জানি না: অর্থ উপদেষ্টা