যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন দল রিপাবলিকান পার্টির সিনেট সদস্যরাও প্রথা ভেঙে সিগন্যাল কেলেঙ্কারির উচ্চতর তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। কীভাবে স্পর্শকাতর চ্যাট গ্রুপের তথ্য ফাঁস হলো, তা নিয়ে তাঁরা ট্রাম্প প্রশাসনের কাছ থেকে ব্যাখ্যা চেয়েছেন। এ ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হলে ‘বড় ধরনের রাজনৈতিক সমস্যা’ হিসেবে দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করেছেন তাঁরা।

আলাস্কার রিপাবলিকান সিনেটর লিসা মুরকোস্কি যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম দ্য হিলকে বলেছেন, ‘মিলেমিশে কাজ না করার ফলেই এমন ঘটনা ঘটে।’

বার্তা আদান-প্রদানের অ্যাপ ‘সিগন্যালে’ সামরিক পরিকল্পনা–সংক্রান্ত গ্রুপ চ্যাটে এক সাংবাদিককে যুক্ত করা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। গত সোমবার এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকে বিরোধী ডেমোক্র্যাটরা ট্রাম্প প্রশাসনের তীব্র সমালোচনা করছেন। এবার তাঁদের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টির সিনেটররাও যোগ দিয়েছেন।

ওই গ্রুপে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎজসহ ট্রাম্পের নিরাপত্তা দলের আরও কিছু জ্যেষ্ঠ সদস্য যুক্ত ছিলেন। এতে যুক্তরাষ্ট্রের সাময়িকী দ্য আটলান্টিক সম্পাদক জেফরি গোল্ডবার্গকে ‘ভুলবশত’ যুক্ত করা হয়েছিল। গ্রুপটিতে সম্প্রতি ইয়েমেন চালানো যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হামলার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করা হয়।

গতকাল বুধবার সকালে সিগন্যালের গ্রুপে আলোচনার বিস্তারিত প্রকাশ করে আটলান্টিক। এতে দেখা যায়, চ্যাটে ইয়েমেনে হামলার লক্ষ্যবস্তু, হামলার সময়, আবহাওয়া পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

সিনেট আর্মড সার্ভিসেস কমিটির চেয়ার রজার উইকারও সিগন্যাল কেলেঙ্কারির তদন্ত চেয়েছেন.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলায় অপু গ্রেপ্তার

রাজধানীর গুলশানে সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির মামলায় এজাহারনামীয় আসামি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদ্য বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

শুক্রবার (১ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর ওয়ারী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে ওয়ারী থেকে ডিবির ওয়ারী বিভাগের সদস্যরা গ্রেপ্তার করেছেন। তাকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।

গত ১৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে একটি চক্র রাজধানীর গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন জানে আলম অপু ওরফে কাজী গৌরব অপু এবং আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ। এ সময় শাম্মী আহমেদ দেশের বাইরে থাকায় তার স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরকে জিম্মি করে ভয় দেখানো হয়।

চক্রটি বাসায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করে প্রথম ধাপে ১০ লাখ টাকা আদায় করে নেয়। এর মধ্যে ৫ লাখ টাকা ভাগ পান অপু এবং বাকি ৫ লাখ পান রিয়াদ। চাঁদার দ্বিতীয় কিস্তি আনতে ২৬ জুলাই সন্ধ্যায় আবারও গুলশানের ওই বাসায় গেলে চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করে পুলিশ। তারা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ, ইব্রাহীম হোসেন মুন্না, সাকদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব এবং আমিনুল ইসলাম। তাদের সবাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বিভিন্ন পদে ছিলেন। গ্রেপ্তারের পরপরই  তাদেরকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।

এদিকে, চাঁদাবাজির এ ঘটনায় গুলশান থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এজাহারনামীয় ছয় আসামি ও অজ্ঞাত ১০-১২ জন সমন্বয়ক পরিচয়ে ১৭ জুলাই সকালে আমার গুলশান-২ নম্বরের বাসায় আসে। যার মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ ও কাজী গৌরব অপু আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করে। তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেখায়। একপর্যায়ে আমি বাধ্য হয়ে ১০ লাখ টাকা দিই। পরে ১৯ জুলাই রাতে রিয়াদ ও অপু আমার বাসায় এসে ধাক্কাধাক্কি করে, যা আমি পুলিশকে ফোন করে জানাই। এ সময় অভিযুক্তরা সেখান থেকে সটকে পড়ে।

এজাহারে আরো বলা হয়েছে, ২৬ জুলাই শনিবার বিকেলে রিয়াদের নেতৃত্বে আসামিরা আমার বাসার সামনে এসে আমাকে খুঁজতে থাকে। আমি বাসায় না থাকায় বাসার দারোয়ান আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। এ সময় আসামিরা তাদের দাবিকৃত আরো ৪০ লাখ টাকা না দিলে আমাকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানো হবে বলে হুমকি দিতে থাকে।

ঢাকা/এমআর/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ