ঈদ মুসলমানদের প্রধান উৎসব। ঈদ উপলক্ষে লাখ লাখ মানুষ শহর ছেড়ে গ্রাম বা মফস্সলে নিজ পরিবারের কাছে চলে যান। এ বছর ঈদের দীর্ঘ ছুটির কারণে গ্রামমুখী মানুষের ভিড় আরও বেশি। এ দীর্ঘ ঈদযাত্রায় সুস্থ থাকতে কিছু বিষয়ে সতর্কতা মেনে চলা ভালো।
ব্যাগ গোছানোর সময় খেয়াল করুন পর্যাপ্ত ওষুধ নিয়েছেন কি না। ঈদে সবখানে ওষুধের দোকান খোলা না–ও থাকতে পারে আর গ্রামগঞ্জে সব ওষুধ না–ও মিলতে পারে। তাই যাঁরা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগ, উচ্চ কোলেস্টেরল ইত্যাদির জন্য নিয়মিত ওষুধ খান, তাঁরা যথেষ্ট পরিমাণে ওষুধ সঙ্গে নিন। যাঁরা ইনহেলার বা ইনসুলিন ব্যবহার করেন, তাঁরাও দেখে নিন পর্যাপ্ত আছে কি না। বাস বা ট্রেনযাত্রায় ইনসুলিন একটি বরফ দেওয়া ফ্লাস্কে নেওয়া ভালো; যাতে নষ্ট না হয়। সঙ্গে বাড়তি সতর্কতা হিসেবে কিছু গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ, বমির ওষুধ, খাওয়ার স্যালাইনের প্যাকেট ও ফার্স্ট এইড সামগ্রী নিতে পারেন।
ঈদযাত্রার আগে ভারী খাবার না খাওয়া ভালো। এতে পথে বমি হওয়ার ঝুঁকি থাকে। পথে যদি ইফতার বা সাহ্রি করতে হয়, সঙ্গে হালকা শুকনা খাবার, যেমন মুড়ি, বিস্কুট, খই, স্যান্ডউইচ, বাদাম ও ফলমূল নিতে পারেন। সাহ্রি বা ইফতারে পথের কেনা খাবার খাবেন না। বিশুদ্ধ পানি রাখুন। শিশুদের খাবার আলাদা করে সঙ্গে নিন। যানজট থাকলে রান্না করা ঝোল-মসলাযুক্ত খাবার নষ্ট হতে পারে, তাই শুকনা খাবার নেওয়া ভালো।
অনেকের বাস বা ট্রেনে মাথা ঘোরে, বমি হয়। সে ক্ষেত্রে বাস বা গাড়ির ফ্রন্ট সিটে বসা ভালো। বাতাস আসে এমন জায়গায় বসুন। মনোযোগ সরাতে বাইরের দিকে না তাকিয়ে চোখ বন্ধ করে রাখবেন বা ভালো কিছু শুনবেন। পলিথিন ব্যাগ সঙ্গে রাখুন। যাত্রার আগে সাহ্রি বা ইফতারে বমির ওষুধ খাওয়া যেতে পারে।
ঈদের সময় অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য বাড়ে। তাই সতর্ক থাকুন।
বাস বা গাড়ি গ্যাস স্টেশনে গ্যাস নেওয়ার সময়, ফেরিতে ওঠানামার সময় নেমে পড়াই ভালো। এমন সময় মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ওঠানামা বা রাস্তা পেরোনোর সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করবেন না। বাসচালক অতিরিক্ত ফোন ব্যবহার করলে যাত্রীদের উচিত প্রতিবাদ করা। লঞ্চ বা বাসে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে যাবেন না। ট্রেন-বাসের ছাদে কখনো ভ্রমণ করবেন না।
ঈদযাত্রায় শিশুদের দিকে বিশেষ নজর দিন। কখনো শিশুদের কোথাও একা ছাড়বেন না। অপরিচিত কারও কাছে দেবেন না। পথে টয়লেটে যেতে হলে নিজে সঙ্গে থাকুন। ধুলাবালু বা গাড়ির ধোঁয়া থেকে বাঁচতে মাস্ক পরা ভালো অথবা বারবার ভেজা টিস্যু বা রুমাল দিয়ে চোখ-মুখ মুছে দিন। শিশুদের কিছু খাওয়ার আগে হাত ধুয়ে দিন। সঙ্গে হ্যান্ডওয়াশ রাখা ভালো।
অধ্যাপক এ বি এম আবদুল্লাহ, ইমেরিটাস অধ্যাপক, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ঈদয ত র র সময় সতর ক
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’