Prothomalo:
2025-05-01@05:38:49 GMT

ঈদযাত্রায় সতর্কতা

Published: 28th, March 2025 GMT

ঈদ মুসলমানদের প্রধান উৎসব। ঈদ উপলক্ষে লাখ লাখ মানুষ শহর ছেড়ে গ্রাম বা মফস্‌সলে নিজ পরিবারের কাছে চলে যান। এ বছর ঈদের দীর্ঘ ছুটির কারণে গ্রামমুখী মানুষের ভিড় আরও বেশি। এ দীর্ঘ ঈদযাত্রায় সুস্থ থাকতে কিছু বিষয়ে সতর্কতা মেনে চলা ভালো।

ব্যাগ গোছানোর সময় খেয়াল করুন পর্যাপ্ত ওষুধ নিয়েছেন কি না। ঈদে সবখানে ওষুধের দোকান খোলা না–ও থাকতে পারে আর গ্রামগঞ্জে সব ওষুধ না–ও মিলতে পারে। তাই যাঁরা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্‌রোগ, উচ্চ কোলেস্টেরল ইত্যাদির জন্য নিয়মিত ওষুধ খান, তাঁরা যথেষ্ট পরিমাণে ওষুধ সঙ্গে নিন। যাঁরা ইনহেলার বা ইনসুলিন ব্যবহার করেন, তাঁরাও দেখে নিন পর্যাপ্ত আছে কি না। বাস বা ট্রেনযাত্রায় ইনসুলিন একটি বরফ দেওয়া ফ্লাস্কে নেওয়া ভালো; যাতে নষ্ট না হয়। সঙ্গে বাড়তি সতর্কতা হিসেবে কিছু গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ, বমির ওষুধ, খাওয়ার স্যালাইনের প্যাকেট ও ফার্স্ট এইড সামগ্রী নিতে পারেন।

ঈদযাত্রার আগে ভারী খাবার না খাওয়া ভালো। এতে পথে বমি হওয়ার ঝুঁকি থাকে। পথে যদি ইফতার বা সাহ্‌রি করতে হয়, সঙ্গে হালকা শুকনা খাবার, যেমন মুড়ি, বিস্কুট, খই, স্যান্ডউইচ, বাদাম ও ফলমূল নিতে পারেন। সাহ্‌রি বা ইফতারে পথের কেনা খাবার খাবেন না। বিশুদ্ধ পানি রাখুন। শিশুদের খাবার আলাদা করে সঙ্গে নিন। যানজট থাকলে রান্না করা ঝোল-মসলাযুক্ত খাবার নষ্ট হতে পারে, তাই শুকনা খাবার নেওয়া ভালো।

অনেকের বাস বা ট্রেনে মাথা ঘোরে, বমি হয়। সে ক্ষেত্রে বাস বা গাড়ির ফ্রন্ট সিটে বসা ভালো। বাতাস আসে এমন জায়গায় বসুন। মনোযোগ সরাতে বাইরের দিকে না তাকিয়ে চোখ বন্ধ করে রাখবেন বা ভালো কিছু শুনবেন। পলিথিন ব্যাগ সঙ্গে রাখুন। যাত্রার আগে সাহ্‌রি বা ইফতারে বমির ওষুধ খাওয়া যেতে পারে।

ঈদের সময় অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য বাড়ে। তাই সতর্ক থাকুন।

বাস বা গাড়ি গ্যাস স্টেশনে গ্যাস নেওয়ার সময়, ফেরিতে ওঠানামার সময় নেমে পড়াই ভালো। এমন সময় মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ওঠানামা বা রাস্তা পেরোনোর সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করবেন না। বাসচালক অতিরিক্ত ফোন ব্যবহার করলে যাত্রীদের উচিত প্রতিবাদ করা। লঞ্চ বা বাসে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে যাবেন না। ট্রেন-বাসের ছাদে কখনো ভ্রমণ করবেন না।

ঈদযাত্রায় শিশুদের দিকে বিশেষ নজর দিন। কখনো শিশুদের কোথাও একা ছাড়বেন না। অপরিচিত কারও কাছে দেবেন না। পথে টয়লেটে যেতে হলে নিজে সঙ্গে থাকুন। ধুলাবালু বা গাড়ির ধোঁয়া থেকে বাঁচতে মাস্ক পরা ভালো অথবা বারবার ভেজা টিস্যু বা রুমাল দিয়ে চোখ-মুখ মুছে দিন। শিশুদের কিছু খাওয়ার আগে হাত ধুয়ে দিন। সঙ্গে হ্যান্ডওয়াশ রাখা ভালো।

অধ্যাপক এ বি এম আবদুল্লাহ, ইমেরিটাস অধ্যাপক, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঈদয ত র র সময় সতর ক

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ