জনপ্রিয় তারকাদের নিয়ে এটিভি ইউএসএ’র ঈদ আয়োজন
Published: 28th, March 2025 GMT
ঈদুল ফিতরে প্রতি বছরই দেশের টিভি চ্যানেলগুলো সেজে ওঠে বর্ণাঢ্য আয়োজনে। অনেক দর্শক ছুটির দিনগুলোতে সময় কাটায় সে সব অনুষ্ঠান দেখে। তবে এবার দেশের চ্যানেলের পাশাপাশি বিদেশে গড়ে ওঠা একটি টিভি চ্যানেলও ঈদ উপলক্ষে আয়োজন করেছে ৩ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে অবস্থিত ‘এটিভি ইউএসএ’র ঈদ আয়োজনে থাকছে বিনোদন, উৎসবের উচ্ছ্বাস আর আনন্দের ঝলক।
এটিভি ইউএসএ'র পর্দায় ঈদের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হিসেবে থাকছে তিনটি নতুন নাটক। ঈদের দিন প্রচার হবে ইশতিয়াক আহমেদের রচনা ও পরিচালনায় ‘’। টেলিফিল্মটির মাধ্যমে দীর্ঘ বিরতির পর অভিনয়ে ফিরছেন সাদিয়া জাহান প্রভা। নাটকটির অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন আশা হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট এবং সিইও আকাশ রহমান।
জাকির হোসেন উজ্জলের রচনা আরেফিন আলম ও তানভীর আল হাসানের পরিচালনায় কমেডি ড্রামা ‘আত্মশুদ্ধি’ প্রচার হবে ঈদের দ্বিতীয় দিন। এতে অভিনয় করেছেন শামীম জামান, আখম হাসান, অহনা রহমান, আইনুন পুতুলসহ অনেকে।
ঈদের তৃতীয় দিন প্রচার হবে তানভীর তারেক এর রচনা ও পরিচালনায় ‘ফাঁদের প্রেমে’ নাটকটি। এতে অভিনয় করেছেন সাঈদ বাবু, সিফাত তাহসিন, আকাশ রহমান, আনোয়ার হোসেন, শাহ আলম দুলাল, রুমা দুলাল, রাজসহ আরো অনেকে।
তানভীর তারেকের সঞ্চালনায় 'আড্ডা উইথ তানভীর তারেক' অনুষ্ঠানটি দেখবেন ঈদের দিন ও পরের দিন সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে। অতিথি হিসেবে থাকছেন জনপ্রিয় অভিনেতা শামীম শাহেদ, জনপ্রিয় চিত্রনায়ক কাজী মারুফ।
এছাড়া ঈদ আয়োজনে থাকছে এটিভি ইউএসএ'র সবথেকে জনপ্রিয় শো ‘এভিনিউ টু সাকসেস’-এর বিশেষ অনুষ্ঠান। যার প্রথমটিতে আকাশ রহমানের সঞ্চালনায় অতিথি হিসেবে থাকছেন দুই বাংলার নন্দিত অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। ভারতীয় উপমহাদেশের জনপ্রিয় এই অভিনেত্রীর জীবনের রঙিন অধ্যায়, সাফল্যের সিক্রেট জানবেন এটিভি ইউএসএ-র পর্দায়, ঈদের দ্বিতীয় দিন রাত ৮টায়!
বাংলাদেশের প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী সামিনা চৌধুরীর সুর-গল্পে গাঁথা আর আকাশ রহমানের মনোমুগ্ধকর উপস্থাপনায় থাকছে ‘এভিনিউ টু সাকসেস’-এর আরেকটি পর্ব। যেখানে ফুটে উঠবে সামিনা চৌধুরীর সংগীতের মাধুর্য ও জীবনের স্মৃতিমধুর অধ্যায়। সুর, সঙ্গীত ও গল্পের মেলবন্ধনে হারিয়ে যেতে চোখ রাখুন এটিভি ইউএসএ'র পর্দায়। অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হবে ঈদের তৃতীয় দিন রাত ৮ টায়।
এর বাইরে ঈদ আয়োজনে থাকছে গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ড, সিনেমার গানসহ আরো অনেক অনুষ্ঠান। ঈদ আয়োজনে এটিভি ইউএসএর এই আয়োজন প্রসঙ্গে চ্যানেলটির কর্নধার আকাশ রহমান বলেন, ‘আমরা এখন এই যুগে মূলত একটি গ্লোবাল ভিলেজে বাস করি। তাই আমাদের যে কোনো কাজ এই সময়ে সারাবিশ্বের বাংলা ভাষাভাষীদের জন্যই নির্মান করতে হয়। সেই লক্ষে আমাদের প্রথম ঈদ আয়োজনে আমরা মানসম্পন্ন কিছু অনুষ্ঠান করার চেষ্টা করেছি।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন জনপ র য় ঈদ র দ
এছাড়াও পড়ুন:
২২ ক্যাডার নিয়ে চলতেন স্বেচ্ছাসেবক দলের জিতু
বগুড়ায় মেয়েকে উত্ত্যক্ত ও বাবাকে খুনে অভিযুক্ত জিতু ইসলাম দলীয় প্রভাবে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। কথায় কথায় যাকে-তাকে অহেতুক মারধর করতেন। চলতেন ২২ জনের ক্যাডার বাহিনী নিয়ে। তারা সবাই নানা অপকর্মে জড়িত এবং একাধিক মামলার আসামি। তাঁর আয় চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসা থেকে। গতকাল রোববার এলাকায় গিয়ে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
জানা যায়, জিতু ফুলবাড়ী কারিগরপাড়ার মৃত সেকেন্দার আলীর ছেলে। ২০০৩ সালে এলাকায় বালু ব্যবসা নিয়ে প্রতিপক্ষ রবিউল ইসলামকে খুন করেন। সেই মামলায় তাঁর ১৪ বছর সাজা হয়। সাজা খেটে তিন বছর আগে বের হন। এর পর এলাকায় গড়ে তোলেন সন্ত্রাসী বাহিনী। তাঁর বাহিনীতে যে ২২ জন সদস্য, তারা কেউ রাজনৈতিক দলের পদ-পদবিতে নেই। হত্যা মামলা ছাড়াও জিতুর বিরুদ্ধে একটি মাদক ও একটি ডাকাতির মামলা রয়েছে।
ফুলবাড়ীর এক মুদি দোকানি বলেন, জিতু মাঝেমধ্যে তাঁর দোকান থেকে বাকি নিতেন। দু’বছরে বাকির পরিমাণ প্রায় ৪৮ হাজার টাকা হয়। তখন একদিন টাকা চান। এ কারণে জিতু তাঁকে মারধর করে নাকে খত নেন।
বৃন্দাবন এলাকার আরেক ব্যবসায়ী বলেন, মাঝেমধ্যে জিতু তাঁর বাহিনী নিয়ে হাজির হতেন। মোটা অঙ্কের চাঁদা চাইতেন। চাঁদার কমপক্ষে অর্ধেক দিয়ে তবে নিস্তার পাওয়া যেত। এ ছাড়া ঈদে সেলামির নামে মোটা অঙ্কের চাঁদা দিতে হতো তাঁকে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী জানান, তাঁর কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা চান জিতু। না দেওয়ায় দোকানে ককটেল হামলা করেন। বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকায় আগস্টের পর জিতু বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। এলাকার একাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা নিয়ে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ আছে তাঁর বিরুদ্ধে। ছোট ভাই মিতুলও তাঁর বাহিনীর সদস্য।
জিতু গত ১৯ ফেব্রুয়ারি জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ১০১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির সহসাধারণ সম্পাদকের পদ পান। সন্ত্রাসী হয়ে দলের পদ পাওয়ায় এলাকায় তাঁকে নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পদ পেয়ে তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন।
এলাকার এক ভুক্তভোগী বলেন, ‘জিতুর কারণে আমরা মুখ খুলতে পারি না। সে চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসার মাধ্যমে এলাকা অতিষ্ঠ করে তুলেছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক দলের পদ-পদবি পেয়ে ভয়ংকর হয়ে ওঠে। তার নির্যাতনের শিকার অর্ধশতের কম হবে না। তার বখাটেপনার কারণে কেউ মেয়ে বিয়ে দিতে রাজি হতো না।’
এক বছর আগে থেকে ফুলবাড়ির পাশেই শহরের শিববাটি এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকেন জিতু। সেই এলাকার বাসিন্দা রিকশাচালক শাকিল হোসেন। শাকিলের মেয়ে স্থানীয় ভান্ডারী সিটি বালিকা বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। এক মাস আগে ৫২ বছর বয়সী জিতু বিয়ের প্রস্তাব দেন শাকিলের মেয়েকে। বিষয়টি শাকিল জেনে রাগ করেন। জিতুর ওপর চড়াও হন। কিছুতে রাজি না হলে নানাভাবে নির্যাতন করতে থাকেন জিতু। তাঁর মেয়েকেও উত্ত্যক্ত করতেন। এরই এক পর্যায়ে শনিবার বিকেলে শাকিলকে পিটিয়ে খুন করেন জিতু ও তাঁর বাহিনী।
এ হত্যার ঘটনায় জিতুকে এক নম্বর আসামি করে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে গতকাল রোববার বগুড়া সদর থানায় হত্যা মামলা করেছেন শাকিলের স্ত্রী মালেকা খাতুন। পুলিশ শনিবার রাতেই জিতু ও তাঁর সহযোগী মতি এবং বিপ্লবকে আটক করে।
সন্ত্রাসীকে দলের পদ দেওয়ার বিষয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সরকার মুকুল বলেন, ‘আমি জানতাম না, সে দলের নাম ভাঙিয়ে এসব অপকর্ম করছে। আমরা তাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছি।’ শনিবার রাতে স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানী ও সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসানের সই করা বিবৃতিতে জিতু ইসলামকে বহিষ্কার করা হয়। সেই সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অনুরোধ জানানো হয়।
বগুড়া সদর থানার ওসি হাসান বাসির বলেন, ‘এ মামলার অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তার করা হবে।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ফুলবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক জোবায়ের খান জানান, গতকাল জিতুসহ তিন আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদী হাসান পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে হত্যার প্রতিবাদ ও দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম জেলা শাখা। গতকাল বিকেলে শহরের সাতমাথায় সংগঠনের সভাপতি অ্যাডভোকেট দিলরুবা নূরী এতে সভাপতিত্ব করেন।