মাসব্যাপী নামাজ পড়া ৩২ কিশোরকে সাইকেল দিল মহানগর উত্তর বিএনপি
Published: 28th, March 2025 GMT
পবিত্র রমজান উপলক্ষে অভিনব কর্মসূচি পালন করেছে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি। রোজার শুরুতে সংগঠনের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়- মাসব্যাপী যে সকল শিশু-কিশোর মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবেন তাদের প্রত্যেককে বাইসাইকেল উপহার দেওয়া হবে। সেই ঘোষণার প্রেক্ষিতে শুক্রবার রাজধানীর রূপনগর-পল্লবী এলাকার ৩২ শিশু-কিশোরকে বাইসাইকেল উপহার তুলে দেয় সংগঠনটি। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির এই মহতি উদ্যোগের প্রশংসায় ভাসছে সংগঠনটি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিগত ১৬ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে চেটেপুটে খেয়েছে। দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করেছে। দেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেও শেখ পরিবারের কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তারা আগেই পালিয়ে গেছে। কারণ, বিদেশে তাদের বাড়িঘর আছে।
তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ মুক্ত দেশ গড়তে দেশের এই তরুণ-কিশোররা জীবন দিয়ে লড়েছে, রক্ত দিয়েছে, গুলির সামনে দাড়িয়েছে মুগ্ধ, আকরাম, আবু সাঈদরা। তাদের এই আত্মদান মহিমান্বিত। তরুণ-কিশোরদের আন্দোলনে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে ফ্যাসিবাদ শেখ হাসিনা।
সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক ও জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক বলেন, বাংলাদেশে যখনই কোন ক্রান্তিকাল এসেছে তখনই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় দলের নেতাকর্মীরা জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। শেখ হাসিনার নির্যাতনে দলের প্রত্যেক নেতাকর্মী ঘরবাড়ি ছাড়া হয়ে ফেরারি জীবনযাপন করেছে বিগত দিনে। মামলার কারণে বাবার লাশ পর্যন্ত দাফনে যেতে পারেনি তারা।
তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় গেছে। এতে দেশের মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরলেও এখনো আমাদের আন্দোলন শেষ হয়ে যায়নি। এখনো দেশের জনগণ ভোটাধিকার নিশ্চিত করা যায়নি।
আমিনুল হক বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টা নির্বাচন নিয়ে এখন নানান টালবাহানা শুরু করেছে। প্রধান উপদেষ্টা শুরুতে ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের কথা বললেও এখন সেখান থেকে সরে এসে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলছে। সরকারের মধ্যকার কিছু গোষ্ঠীর ক্ষমতার মোহে সংস্কার, ফ্যাসিবাদের বিচারের নামে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টাকে বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ব এনপ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী
আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।
রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।
মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’
আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।
বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’
বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।