বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতি ও গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় বড় ভূমিকা রাখে। সেখানে সরকার পরিবর্তন হলে বিশ্ব বাণিজ্য, আর্থিক বাজার এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কে ব্যাপক প্রভাব পড়ে। সম্প্রতি নতুন সরকার আসার পর শুল্ক, করনীতি, বাণিজ্য চুক্তি, জলবায়ু ও মুদ্রানীতিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে– যা পুরো বিশ্বের অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে। ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স, বাংলাদেশের (আইসিসিবি) ত্রৈমাসিক বুলেটিনের সম্পাদকীয়তে এমন পর্যালোচনা রয়েছে। 
এতে বলা হয়, ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সির সময় যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যে রক্ষণশীল নীতি নেওয়া হয়; যা চীন, কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করে দেয়। এর ফলে বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয় এবং যেসব দেশ বাণিজ্যের ওপর বেশি নির্ভরশীল, তাদের অর্থনীতি ধীর হয়ে পড়ে। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ যখন দেশের মুদ্রাস্ফীতি কমাতে সুদের হার বাড়ায়, তখন বিশ্বজুড়ে এর প্রভাব পড়ে। বিনিয়োগকারীরা তখন অর্থ যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তর করে, ফলে উন্নয়নশীল দেশ থেকে টাকা বেরিয়ে যায়, তাদের মুদ্রার মান কমে যায় এবং অর্থনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়।
আইসিসিবির সাময়িকীর সম্পাদকীয়তে বলা হয়, প্রশাসনিক পরিবর্তনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো জ্বালানি ও জলবায়ু নীতি। যুক্তরাষ্ট্র যেহেতু বিশ্বে অন্যতম বৃহৎ জ্বালানি ব্যবহারকারী ও উৎপাদক, তাই তাদের জ্বালানি নীতির পরিবর্তনেও বৈশ্বিক অর্থনীতি প্রভাবিত হয়। বাইডেন প্রশাসন নবায়নযোগ্য শক্তির দিকে ঝুঁকেছিল, যার ফলে মধ্যপ্রাচ্য ও রাশিয়ার মতো তেলনির্ভর দেশ চাপে পড়ে। ট্রাম্প প্রশাসন তেল-গ্যাস শিল্পকে উৎসাহ দিয়েছে, যা এসব দেশের জন্য উপকারী। এই নীতিগত পরিবর্তনের কারণে জ্বালানি বাজারে ওঠানামা হয় এবং তেলনির্ভর দেশগুলোকে তাদের কৌশল পরিবর্তন করতে হয়।
এতে আরও বলা হয়, প্রতিবার যুক্তরাষ্ট্রে সরকার পরিবর্তনের সময় বিনিয়োগকারীদের আস্থায় পরিবর্তন আসে এবং ওয়াল স্ট্রিটের প্রতিক্রিয়া সারাবিশ্বের বাজারকে প্রভাবিত করে। ট্রাম্প প্রশাসন নিয়ম শিথিল ও কর কমানোর মতো পদক্ষেপ নিতে পারে, যা বাজারে লাভ ও কোম্পানির সম্প্রসারণ বাড়াতে পারে। যদি সংরক্ষণমূলক বাণিজ্যনীতি, শুল্ক বাড়ানো এবং আন্তর্জাতিক উত্তেজনা আবার শুরু হয়, তাহলে তা বিশ্বজুড়ে সরবরাহ ব্যবস্থায় ব্যাঘাত ঘটাতে পারে এবং বাজারে অস্থিরতা বাড়াতে পারে। 
পর্যালোচনায় বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের নীতিগুলো বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় প্রভাব ফেলে। যখন সেখানে সরকার পরিবর্তন হয় তখন বিভিন্ন দেশ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে আগেই প্রস্তুতি নিতে হবে। বাণিজ্যিক সম্পর্ক শক্ত করা, নতুন শিল্প খাতে বিনিয়োগ করা এবং নীতিগত সংস্কার আনা এসব পদক্ষেপ অর্থনৈতিক ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে সরকার পরিবর্তন শুধু তাদের দেশের বিষয় নয়, এটি পুরো বিশ্বের অর্থনীতিতে বড় প্রভাব ফেলে। প্রতিটি প্রশাসন এমন কিছু নীতি আনে, যা হয়তো বিশ্বের আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে, আবার কখনও তা বিপর্যয়ও তৈরি করতে পারে। অর্থনৈতিক সংকট এড়াতে সব দেশের উচিত সতর্ক থাকা এবং পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে চলা। এর জন্য আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি বাড়ানো; বিকল্প আর্থিক কেন্দ্র গড়ে তোলা; নিজস্ব টেকসই শিল্প খাত তৈরির পদক্ষেপ অস্থির সময়গুলোতে সুরক্ষা হিসেবে কাজ করতে পারে। বিশ্বকে একটি বহুমুখী, সহযোগিতাপূর্ণ অর্থনীতি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে, যাতে শুধু একটি দেশের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে সবাই মিলে সামনে এগোনো যায়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আইস স ব আর থ ক

এছাড়াও পড়ুন:

অক্ষয়ের সিনেমার আয় ৩৩২ কোটি টাকা ছাড়িয়ে

বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় কমেডি সিনেমা ফ্র্যাঞ্চাইজি হাউজফুল। এর আগে এ ফ্র্যাঞ্চাইজির চারটি সিনেমা মুক্তি পায়। গত ৬ জুন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটির পঞ্চম কিস্তি। অক্ষয় কুমারকে নিয়ে এটি নির্মাণ করেছেন তরুণ মনসুখানি।

বিশ্বের ৭ হাজার পর্দায় মুক্তি পেয়েছে ‘হাউজফুল ৫’। চলতি বছর এখন পর্যন্ত মুক্তিপ্রাপ্ত বলিউড সিনেমার মধ্যে প্রথম দিনে তৃতীয় সর্বোচ্চ আয় করেছে ‘হাউজফুল ৫’ (২১ বা ২৪ কোটি রুপি)। এ তালিকার প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ‘ছাবা’ (২৯ কোটি রুপি) ও ‘সিকান্দার’ (২৫ কোটি রুপি)।

স্যাকনিল্কের তথ্য অনুসারে, মুক্তির প্রথম দিনে ‘হাউজফুল ৫’ ভারতে আয় করেছে ২৪ কোটি রুপি (নিট), দ্বিতীয় দিনে ৩১ কোটি রুপি (নিট), তৃতীয় দিনে ৩২.৫ কোটি (নিট), চতুর্থ দিনে ১৩ কোটি রুপি (নিট), পঞ্চম দিনে ১১.২৫ কোটি রুপি (নিট), ৬ষ্ঠ দিনে ৮.৫ কোটি রুপি (নিট), সপ্তম দিনে ৭ কোটি রুপি (নিট)। অষ্টম দিনে ৬ কোটি রুপি (নিট), নবম দিনে ৯.৫ কোটি রুপি (নিট), দশম দিনে ১১.৫ কোটি রুপি (নিট)। 

আরো পড়ুন:

আমি গর্বিত আমি একজন মুসলিম: আমির খান

জোড়া লাগল অর্জুন-মালাইকার ভাঙা প্রেম!

ভারতে যার মোট আয় দাঁড়িয়েছে ১৮৪.২৫ কোটি রুপি (গ্রস)। বিদেশে আয় করেছে ৫০.৭৫ কোটি রুপি। বিশ্বব্যাপী সিনেমাটি মোট আয় করেছে ২৩৫ কোটি রুপি (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৩২ কোটি ৭৩ লাখ টাকার বেশি)।    

বরাবরের মতো অক্ষয় কুমারকে ‘হাউজফুল ফাইভ’ সিনেমায় মজার চরিত্রে পেয়েছেন দর্শকরা। এ ছাড়াও সিনেমাটিতে অভিনয় করবেন অভিষেক বচ্চন, রিতেশ দেশমুখ, সঞ্জয় দত্ত, জ্যাকলিন, নার্গিস ফাখরি, ফারদিন খান, নানা পাটেকর, জ্যাকি শ্রফ, চাঙ্কি পান্ডে, সোনম বাওয়াজ, চিত্রাঙ্গদা সিং প্রমুখ। সিনেমাটি নির্মাণে ২৪০ কোটি রুপি ব্যয় করেছেন সাজিদ নাদিয়াদওয়ালা। 

উল্লেখ্য, ২০১০ সালে মুক্তি পায় হাউজফুল ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রথম সিনেমা ‘হাউজফুল’। ২০১২ সালে মুক্তি পায় ‘হাউজফুল টু’। ২০১৬ সালে মুক্তি পায় ‘হাউজফুল থ্রি’। ২০১৯ সালে মুক্তি পায় ‘হাউজফুল ফোর’।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ