ঈদযাত্রা মানেই ট্রেনে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় এবং শিডিউল বিপর্যয়। প্রতিবছর এমন দৃশ্য দেখে অভ্যস্ত সবাই। তবে, এবার তার ব্যতিক্রম হচ্ছে। শনিবার (২৯ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর কমলাপুর স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে নেই অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ। নির্দিষ্ট সময়েই ট্রেনগুলো ছেড়ে যাচ্ছে গন্তব্যের উদ্দেশে। 

কমলাপুর রেল স্টেশনের ম্যানেজার শাহাদত হোসেন রাইজিংবিডিকে বলেছেন, শনিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২১টি ট্রেন ছেড়ে গেছে। এর মধ্যে আন্তঃনগর ও লোকাল ট্রেনে রয়েছে। কোনো ট্রেন স্টেশন ছাড়তে বিলম্ব করেনি। তবে, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীদের চাপ বাড়ছে। আশা করছি, পরবর্তী দিনগুলোতেও ট্রেনযাত্রা স্বস্তিদায়ক হবে।

রেল সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগের বছরগুলোতে ঈদের সময় ট্রেন ছাড়তে বিলম্ব হতো। এবার তেমন সমস্যা হচ্ছে না। যাত্রীরা যেন ট্রেনের ছাদে উঠতে না পারেন, সে বিষয়ে সতর্ক অবস্থানে আছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর আগে কখনো ট্রেনে এত স্বস্তির যাত্রা দেখা যায়নি। সব ট্রেন সময়মতো চলাচল করায় স্টেশনে যাত্রীদের অতিরিক্ত ভিড় বা চাপ নেই।

চট্টলা এক্সপ্রেসের যাত্রী রাইসুল ইসলাম বলেন, আগের খারাপ অভিজ্ঞতার কারণে এবার নির্দিষ্ট সময়ের এক ঘণ্টা আগে স্টেশনে এসেছি। এসে দেখছি, এবার ব্যতিক্রম। খুব ভাল লাগছে।

অগ্নিবীণা এক্সপ্রেসেরর যাত্রী মমতাজ বেগম বলেন, এবার পরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ঈদ করব। এ কারণে আগেই ট্রেনের টিকিট কেটেছিলাম। স্বস্তির বিষয় হলো— কমলাপুর স্টেশনে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে না। সিট পেয়েছি। স্বস্তিকর ট্রেনযাত্রা হবে বলে আশা করছি।

ঢাকা/এমআর/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কমল প র

এছাড়াও পড়ুন:

দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।

আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।

বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’

এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্‌স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ