বেয়াইনকে কুপ্রস্তাব বেয়াইয়ের, অতঃপর...
Published: 29th, March 2025 GMT
যশোরে মেয়ের শ্বশুর (বেয়াই) কুপ্রস্তাব দেওয়ায় তার চোখে আঘাত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বেয়াইন। শনিবার (২৯ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার বাহাদুর জেস গার্ডেন পার্কের পেছনের এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম সিরাজুল ইসলাম। তিনি যশোর শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকার মৃত রবিউল ইসলামের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দুপুরে সিরাজুল ছেলের শ্বশুরবাড়িতে যান। হঠাৎ স্থানীয়রা সেই বাড়িতে মারামারি ও কান্নার শব্দ শুনতে পান। পরে তারা গিয়ে দেখেন, বেয়াই-বেয়াইন মারপিট করছেন। এ সময় সিরাজুলের এক চোখ ক্ষতবিক্ষত দেখতে পাওয়া যায়। পরে স্থানীয়রা তাদের থামান। গুরুতর আহতাবস্থায় সিরাজুলকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার পরে সিরাজুলের বেয়াইন থানায় আত্মসমর্পণ করেছেন।
হাসপাতালে ভর্তি সিরাজুল বেয়াইনের অভিযোগ নাকচ করে বলেছেন, ‘‘পূর্ব শত্রুতার জেরে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।’’
অন্যদিকে, বেয়াইন অভিযোগ করে বলেন, ‘‘সিরাজুল দীর্ঘদিন ধরে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে হামলা চালিয়েছে। এ সময় আত্মরক্ষার চেষ্টা করি। তখন সিরাজুলের চোখে লাগে।’’
যশোর কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল হাসনাত বলেন, ‘‘মারামারির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। সিরাজুল চোখে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। তাকে খুলনায় পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।’’
ঢাকা/রিটন/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সন্দ্বীপ চ্যানেলে মাঝপথে জ্বালানি শেষ স্পিডবোটের, ২৭ যাত্রী নিয়ে ভেসে ছিল আড়াই ঘণ্টা
সন্দ্বীপ চ্যানেলে দুর্ঘটনায় পড়া একটি স্পিডবোট আড়াই ঘণ্টা সাগরে ভেসে থাকার পর কূলে পৌঁছেছে। বোটটিতে ৩ শিশু, ২ নারীসহ মোট ২৭ জন যাত্রী ছিলেন।
আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা বোটটি বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সীতাকুণ্ড উপজেলার ছোট কুমিরা উপকূলে পৌঁছায়। বোট পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানটি হলো সন্দ্বীপ মেরিন সার্ভিস।
বোটের কয়েকজন যাত্রী প্রথম আলোকে জানান, কুমিরা ঘাটের কাছাকাছি আসতেই বোটটির গতি কমে যায়। এরপর প্রবল ঢেউ ও স্রোতের মুখে বারবার পানিতে আছড়ে পড়তে থাকে। চালক তখন যাত্রীদের জানান, বোটের জ্বালানি শেষ হয়ে গেছে। এর মধ্যে বোটের সামনের অংশে পানি ঢুকতে দেখা যায়। আতঙ্কিত যাত্রীরা তখন চিৎকার করতে থাকেন। পরে বোটটি ভাসতে ভাসতে কূলে পৌঁছায়।
বোটে থাকা যাত্রী ফুয়াদ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বোটের তলা ফেটে পানি ঢুকছে আর আমরা এক কিলোমিটার দূরে উত্তাল সাগরে ভাসছি। একপর্যায়ে মনে হচ্ছিল বেঁচে ফিরতে পারব না, এমনকি সমুদ্রে ঝাঁপ দেওয়ার কথাও ভাবছিলাম। কিন্তু ভাগ্য ভালো, শেষ পর্যন্ত কূলে পৌঁছাতে পেরেছি।’
বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সবাই নিরাপদে কূলে নামতে সক্ষম হন বলে জানান ফুয়াদ।
বিকেলেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্পিডবোট ডুবে যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে। এতে প্রাণহানির আশঙ্কায় অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং বিষয়টির কারণ জানতে বিভিন্ন মন্তব্য করেন।
জানতে চাইলে বোট পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান সন্দ্বীপ মেরিন সার্ভিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘বোটের জ্বালানি শেষ হয়নি। তীব্র স্রোতের কারণে বোটটি কুমিরা ঘাট থেকে উত্তরে সরে গিয়ে তীরের কংক্রিট ব্লকে ধাক্কা খায়। এতে বোটের নিচের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু যাত্রীরা সবাই নিরাপদে কূলে পৌঁছাতে সক্ষম হন।’
বৈরী আবহাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও বোট চালানোর বিষয়ে জানতে চাইলে নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের সার্ভিস বন্ধ ছিল। তবে বিদেশগামী কয়েকজন যাত্রীর অনুরোধে এই একটি ট্রিপ চালু করতে হয়েছে।’
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপপরিচালক মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে এই সময়ে বোট চলাচলের অনুমতি ছিল না। তিনি বলেন, মাঝ সাগরে জ্বালানি শেষ হওয়ার যে কথা বলা হচ্ছে, তার দায় চালক ও মালিকের। ইতিমধ্যে স্বত্বাধিকারীদের কাছে কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে। চালকের লাইসেন্স স্থগিত করে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।