যুক্তরাষ্ট্রের মর্যাদাপূর্ণ ‘ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অব কারেজ অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ লাভ করায় জুলাই কন্যাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

শনিবার (২৯ মার্চ) রাতে প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানান।

প্রধান উপদেষ্টা জুলাই কন্যাদের বলেন,“এ স্বীকৃতি আপনাদের অসাধারণ সাহস, নেতৃত্ব এবং অটুট প্রতিশ্রুতির এক গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসের ছাত্র নেতৃত্বাধীন আন্দোলনে যা আপনারা প্রদর্শন করেছিলেন।” 

তিনি বলেন, “সেই সংকটময় সময়ে আপনারা সত্যিকারের সাহসের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছিলেন। আন্দোলনের নেতা হিসেবে আপনারা কেবল প্রতিরোধের প্রতীক ছিলেন না, বরং একটি সংকটে নিপতিত জাতির জন্য আশার আলো হিসেবে দাঁড়িয়েছিলেন।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এই পুরস্কারও স্বীকার করেছে যে, দৃঢ় সংকল্প নিয়ে আপনারা সহিংস দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, নিরাপত্তা বাহিনী ও পুরুষ সহযোদ্ধাদের মাঝে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন এবং সম্পূর্ণ ইন্টারনেট বন্ধের মধ্যেও ন্যায়বিচারের লড়াই চালিয়ে যাওয়ার নতুন নতুন উপায় খুঁজে পেয়েছেন। আপনাদের এই শক্তি, দৃঢ়তা এবং সংকল্প বাংলাদেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিশ্বব্যাপী বহু মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে।”

তিনি আরো বলেন, “আপনাদের নিঃস্বার্থ প্রয়াস আমাদের সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে, ন্যায়বিচারের সন্ধান কখনো সহজ নয়, তবে তা সর্বদা মূল্যবান। আপনারা বিশ্বকে দেখিয়েছেন প্রকৃত নেতৃত্ব ও আত্মত্যাগ কেমন হতে পারে। আপনাদের সাহসিকতা বাংলাদেশের জন্য একটি উজ্জ্বল ও ন্যায়সংগত ভবিষ্যতের পথ তৈরি করেছে।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আপনাদের প্রত্যেকের জন্য অত্যন্ত গর্বিত এবং এই সম্মান আপনারা যথার্থভাবেই অর্জন করেছেন, যা আপনাদের অবিচল চেতনার প্রতিফলন। অন্তর্বর্তী সরকার আপনাদের পাশে রয়েছে এবং আমরা একসঙ্গে সেই গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও স্বাধীনতার লক্ষ্যে কাজ চালিয়ে যাবো, যা আপনারা সাহসিকতার সঙ্গে রক্ষা করেছেন। বাংলাদেশের অগ্রগতির পথে আমরা আপনাদের নেতৃত্ব প্রত্যাশা করছি।” 

ঢাকা/হাসান/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আপন দ র আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

যখন টাকা খাওয়া যাবে, তখন শিক্ষক নিয়োগ দেবেন?: ইবি শিবির সভাপতি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেছেন, “ইবিতে উপাচার্য নিয়োগ হওয়ার পরে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়েও উপাচার্য নিয়োগ হয়েছে। তাদের সার্কুলারে যারা প্রভাষক হয়েছিলেন, তারা এখন অধ্যাপক হচ্ছেন। কিন্তু ইবি প্রশাসন শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে শুধু বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ছাড়া কোনো পদক্ষেপ গ্রহণনি।”

তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন বিভাগও আছে, যেখানে শিক্ষক মাত্র দুইজন। শিক্ষক নিয়োগে কেনো এত দেরি হচ্ছে আপনাদের? সুবিধাজনক সময়ে যখন টাকা খাওয়া যাবে, তখন শিক্ষক নিয়োগ দেবেন? এই সমস্ত তালবাহানা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলবে না।”

রবিবার (২ আগস্ট) বিকেল ৩টায় নিরাপদ ক্যাম্পাস, সাজিদ আব্দুল্লাহর মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষার আলোকে ক্যাম্পাস সংস্কারের দাবিতে শাখা ছাত্রশিবির আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। 

মাহমুদুল হাসান বলেন, “ছাত্র সংসদ গঠনে শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন বলার পরেও আইনের দোহাই দিয়ে প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। কিন্তু ইবির পরে প্রতিষ্ঠিত অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ গঠনের পদক্ষেপ নিয়েছে। আপনারা কেনো পারছেন না? এই ভয়ে যে, চেয়ার চলে যাবে? শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করলে তারাই আপনাদের চেয়ারে রাখবে। আর না হয় হাসিনাকে যেভাবে সরিয়েছে, আপনাদেরও সেভাবে সরাবে।”

তিনি বলেন, “জুলাই বিপ্লবের ১ বছরে পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে উল্লেখযোগ্য সংস্কার চেখে পড়েনি। আমরা ভেবেছিলাম জুলাইয়ের পরে আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবতে হবে না, আমরা কথা বলার অধিকার পাব, সনদপত্র তুলতে ভোগান্তি হবে না, চিকিৎসা কেন্দ্র সংস্কার হবে, ক্যাম্পাস ফ্যাসিবাদের কবল থেকে মুক্ত হবে, গুম হওয়া ওয়ালীউল্লাহ-মুকাদ্দাস ভাইকে ফেরত পাব। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রশাসন কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে পারেনি।”

তিনি আরো বলেন, “এর মধ্য দিয়ে প্রশাসন জুলাই বিপ্লবকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। ক্যাম্পাস কতটা অনিরাপদ হলে আমাদের ভাইয়ের লাশ পুকুরে পাওয়া যায়। কিন্তু এর নির্ভরযোগ্য কোনো ফুটেজ বা তথ্য প্রশাসন দিতে পারেনি।”

নিরাপদ ক্যাম্পাস, সাজিদ আব্দুল্লাহর মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষার আলোকে ক্যাম্পাস সংস্কারে মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। অন্যথায় তারা প্রশাসনকে আসসালামু আলাইকুম বলতে বাধ্য হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে সংগঠনটি। পরে মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রধান ফটকে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।

এ সময় তারা ‘যদি না হয় সংস্কার, এই প্রশাসন কি দরকার’, ‘পুকুরে লাশ কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘সাজিদ হত্যার তদন্ত, করতে হবে করতে হবে’, ‘অনলাইন পেমেন্ট চালু কর, ভোগান্তি দূর কর’, ‘কর্মকর্তা জমিদার, লাঞ্চ করতে দিন পার’, ‘ইবিতে ছাত্র সংসদ, চালু কর করতে হবে’, ‘ইকসু নিয়ে টালবাহানা, আর না আর না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

এছাড়া শিক্ষার্থীদের হাতে হল ডাইনিং ও ক্যাফেটেরিয়ার পানি ও খাবারের মান নিশ্চিত করতে হবে, স্বৈরশাসনের সময় বর্ধিত ও অযৌক্তিক ফি কমাতে হবে, গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে, নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করতে হবে, ওয়ালিউল্লাহ ও আল মুকাদ্দাস ভাইয়ের সন্ধান চাই ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।

ঢাকা/তানিম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ