অন্য রকম মা-সন্তানদের অন্য রকম ঈদ
Published: 30th, March 2025 GMT
‘আম্মু, আম্মু...’। সাড়ে চার বছরের জুবায়ের আবেগ জড়ানো কণ্ঠে মাকে ডাকছিল। পাশের ঘর থেকে মা আসতেই দৌড়ে কাছে গেল শিশুটি।
ছোট্ট হাতে মাকে ধরে শিশুটির মুখের একগাল হাসি যেন থামছেই না। অথচ শুধু জুবায়ের নয়, তার বাকি পাঁচ ভাই-বোন ও বেতনভুক মাকে দেখে বোঝার উপায় নেই তারা কেউই রক্তের সম্পর্কে আবদ্ধ নয়। এক দিন, দুই দিন করে এই মায়ার শিকড় এতটাই শক্ত হয় যে তা আজীবন থেকে যায়।
ঈদের প্রস্তুতি কেমন হলো? কীভাবে কাটবে এবারের ঈদ? সেসব জানতে গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর শ্যামলীর এসওএস শিশুপল্লিতে যাওয়া। ‘জোনাকী’ নামের বাড়ির মা, অর্থাৎ জুবায়েরের মায়ের নাম নাদিরা খাতুন। তাঁর সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল, তিনি বারবার তার ছয় সন্তানের গুণের কথা বলছিলেন। কোন মেয়ে রান্না ভালো পারে, কোন ছেলে খেলাধুলায় ভালো— এসব বলাতেই যেন তাঁর রাজ্যের আনন্দ।
জানতে চাইলাম, ঈদের কেনাকাটা শেষ? নাদিরা খাতুন বলেন, ‘হ্যাঁ, কেনা হয়েছে। আসলে এক দিনে সবাইকে নিয়ে তো বের হওয়া যায় না। সময় করে কয়েক দিনে বের হয়েছিলাম।’
সন্তানের পছন্দকে প্রাধান্য দিয়েই পোশাক কিনে দেন এই মা। ছেলেদের পাঞ্জাবি ও শার্ট মার্কেট থেকেই কিনেছেন। ছেলেমেয়েরা প্রযুক্তিসচেতন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন তো ইন্টারনেটের যুগ। আমার বড় মেয়ে অনলাইনেই পোশাক পছন্দ করে রাখে। সেখান থেকেও অর্ডার করি।’
মুঠোফোনে মেহেদির নকশা ঠিক করে রেখেছে এক মেয়ে। এমনকি কোন মেয়ে মায়ের হাতে মেহেদি লাগিয়ে দেবে, সেটা নিয়েও আছে প্রতিযোগিতা। তাই মেহেদির কথা বলেই হেসে ফেলেন নাদিরা খাতুন।
মায়ের সঙ্গে কথা শেষ হওয়ার আগেই ছেলে মো.
আনন্দ করতে এবার কী কী কিনেছ, জিজ্ঞাসা করতেই ইয়ামিন বলে, পাঞ্জাবি, প্যান্ট, গেঞ্জি, জুতা।
এসওএস শিশুপল্লির সন্তানদের পছন্দকে প্রাধান্য দিয়ে পোশাক কিনে দেন মাউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মাঠ নিয়ে শ্রাবণের আফসোস
আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেও বসুন্ধরা কিংসের গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আবাহনীর বিপক্ষে টাইব্রেকারে কিংসের জয়ের নায়ক ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে। শুনেছেন সাখাওয়াত হোসেন জয়
সমকাল: দু’দিনের ফাইনালের অভিজ্ঞতাটা কেমন হলো?
শ্রাবণ: (হাসি) না, এটা খুব কঠিন ছিল। আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছি এক দিন ফাইনাল খেলব, জিতব এবং উদযাপন করব। কিন্তু প্রাকৃতিক কারণে খেলা অনেকক্ষণ বন্ধ ছিল। বাকি ১৫ মিনিট আরেক দিন। এটা একটা নতুন অভিজ্ঞতা। একই চাপ দু’বার নিতে হলো।
সমকাল: এই মাঠের সমস্যার কারণেই কি এমনটা হয়েছে?
শ্রাবণ: অবশ্যই। এত বড় একটা টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা যে মাঠে, সেখানে ফ্লাডলাইট নেই। যদি ফ্লাডলাইটের সুবিধা থাকত, ওই দিনই খেলাটা শেষ করা যেত। আমার মনে হয়, দেশের ফুটবলের কিছু পরিবর্তন করা উচিত। বিশেষ করে আমরা যখন জাতীয় দলের হয়ে বিদেশে খেলতে যাই, তখন দেখি অন্যান্য দেশের মাঠ খুব গতিশীল। আমাদের দেশের মাঠগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ের না। প্রায় সময়ই সমস্যা হয়। আমরা স্লো মাঠে খেলি। বিদেশে গতিশীল মাঠে খেলতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। আমাদের লিগটা যদি আন্তর্জাতিক মানের মাঠে হতো।
সমকাল: পেনাল্টি শুটআউটের সময় কী পরিকল্পনা ছিল আপনার?
শ্রাবণ: আমি আগেও বলেছি যে অনুশীলনের সময় আগের ম্যাচের টাইব্রেকার নিয়ে কাজ করেছি। কে কোন দিকে মারে, সেগুলো ট্রেনিংয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন কোচ। কোচের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি এবং সফল হয়েছি।
সমকাল: এমেকার শট ঠেকানোর পর মার্টিনেজের মতো উদযাপন করেছেন। এটি কি আগে থেকেই পরিকল্পনা ছিল?
শ্রাবণ: না, সেভ দেওয়ার পর মাথায় এলো। তাই এমি মার্টিনেজের মতো উদযাপন করেছি। বলতে পারেন, এটি কোনো পরিকল্পনা ছিল না। তৎক্ষণাৎ মাথায় এলো।
সমকাল: জাতীয় দল আর ক্লাব– দুটোর অভিজ্ঞতা যদি একটু বলতেন।
শ্রাবণ: ক্লাব আর জাতীয় দল– দুটো ভিন্ন বিষয়। ক্লাব হচ্ছে শুধু একটা ক্লাবকে প্রতিনিধিত্ব করা। আর জাতীয় দল তো পুরো বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করা। যারা ক্লাবে ভালো পারফরম্যান্স করে, তাদেরই জাতীয় দলে ডাকে। আর জাতীয় দলে ডাক পাওয়াটা একজন প্লেয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জন।
সমকাল: আপনি একটি সেভ করেছেন। কিন্তু আবাহনীর মিতুল মারমা পারেননি। জাতীয় দলে বেস্ট ইলেভেনে থাকতে পারবেন?
শ্রাবণ: না না, ব্যাপারটা এমন না। ও (মিতুল) সেভ করতে পারেনি আর আমি পারছি– এটি কিন্তু বড় বিষয় না। ও কিন্তু সেমিফাইনালে সেভ করে দলকে ফাইনালে এনেছে। বরং অনুশীলনে কোচ যাঁকে ভালো মনে করেন, তাঁকেই শুরুর একাদশে রাখেন।
সমকাল: একজন গোলরক্ষক হিসেবে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
শ্রাবণ: আমি চাই দেশসেরা গোলরক্ষক হতে। আমার স্বপ্ন আছে, বিদেশে লিগে খেলব।