দেশবাসীকে ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান। প্রায় সাত বছর পর লন্ডনে মায়ের সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপন করলেন তারেক রহমান।

গতকাল রোববার তিনি তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে এই শুভেচ্ছাবার্তা জানান। ২৪ এর গণ-অভ্যুত্থানে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম ঈদ উদ্‌যাপনের এই প্রাক্কালে তিনি জাতীয় ঐক্য ও সম্প্রীতির বার্তা দিয়েছেন।

বিএনপির চেয়ারপারসন তাঁর শুভেচ্ছা বার্তায় লেখেন, ‘বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল মুসলিম ভাই-বোনদের প্রতি ঈদ মোবারক। গত ১৭ বছর ধরে নির্যাতিত বাংলাদেশের মানুষ একটি স্বাধীন, গণতান্ত্রিক দেশে ঈদ উদ্‌যাপনের জন্য প্রার্থনা করেছে। ২০২৪ সালে সেই বাংলাদেশ পেয়েছি। এক ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে, দুই হাজারেরও বেশি প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বৈরশাসনের শৃঙ্খল ভেঙে বেরিয়ে এসেছে। প্রায় দুই দশক পর প্রথমবারের মতো আমরা স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশে ঈদ উদ্‌যাপন করছি।’

তিনি শহীদ পরিবার, আহত মুক্তিকামী যোদ্ধা এবং সব সংগ্রামী নাগরিকদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘এই পবিত্র ঈদের দিনে আমাদের প্রথম কর্তব্য হলো সেই সব বীর সন্তানদের স্মরণ করা, যারা আমাদের এই স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। আমি দেশবাসীকে আহ্বান জানাই, আসুন আমরা ঈদের আনন্দ সেই সব শহীদ পরিবারের সঙ্গে ভাগ করে নেই।’

একটি নতুন বাংলাদেশ গঠনের প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘এই ঈদে আমাদের শপথ হোক—আমরা আর কখনোই স্বৈরাচারের জিঞ্জির পরিধান করব না। আমাদের শিশুদের জন্য একটি সুন্দর, সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলব।’ তিনি বিশেষভাবে এতিম শিশু, দুস্থ ও অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।

রাজনৈতিক সম্প্রীতি ও জাতীয় ঐক্যের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘ঈদের এই পবিত্র সময়ে আমাদের সব রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে যেতে হবে। বাংলাদেশ নামক এই মাতৃভূমির উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’

তবে তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী চক্র এখনো সক্রিয় রয়েছে। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে যেন কেউ এই ঈদের সময়কে কাজে লাগিয়ে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে না পারে।’

দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনেরও আহ্বান জানান তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘আমি আমাদের দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাই—ঈদের সময় বিশেষ সতর্কতা বজায় রাখবেন, যেন কেউ জনজীবন ও সম্পদের ক্ষতি করতে না পারে। এই স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ঈদ হোক শান্তি, ঐক্য ও সম্মিলিত আনন্দের। আল্লাহ তাআলা আমাদের এই নেয়ামত দান করুন।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত র ক রহম ন ব এনপ ন ত র ক রহম ন আম দ র সতর ক

এছাড়াও পড়ুন:

মাগুরায় শিশু ধর্ষণ-হত্যা মামলায় সাক্ষ্য ৩ চিকিৎসকের

মাগুরায় আট বছরের শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় চতুর্থ দিনের মতো সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বুধবার জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

এ দিন শিশুকে চিকিৎসা প্রদানকারী তিন চিকিৎসক সাক্ষ্য দেন। তারা হলেন– মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের ডা. সোহাস হালদার, নাকিবা সুলতানা এবং ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের  ডা. ইসরাত জাহান। তারা সবাই শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছিল মর্মে সাক্ষ্য প্রদান করেন।  

এর আগে সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে মামলার ৪ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। বাদীপক্ষের আইনজীবী ও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি মনিরুল ইসলাম মুকুল জানান, বিগত চার কার্যদিবস একটানা সাক্ষ্য গ্রহণ চলেছে। এ নিয়ে মোট ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। মামলায় মোট ৩৭ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হবে। আগামী রোববার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাদে অন্য সব সাক্ষী সাক্ষ্য দেবেন। বুধবার আসামিপক্ষের আইনজীবী স্বাধীনভাবে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। তিনি আদালতে আসামিরা নির্দোষ বলে যুক্তি উপস্থাপন করেন। আসামিরাও নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন। 

বেড়াতে এসে ৬ মার্চ রাতে মাগুরা সদরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুর হিটু শেখের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয় ৮ বছরের শিশুটি। এই ধর্ষণের ঘটনা দেশজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঘুরে ঢাকা সিএমএইচে তাকে ভর্তি করা হয়েছিল। ১৩ মার্চ শিশুটি সেখানে মারা যায়। এ ঘটনায় শিশুটির মা আয়েশা আক্তার বড় মেয়ের শ্বশুর হিটু শেখসহ চারজনকে আসামি করে মাগুরা সদর থানায় মামলা করেন। রিমান্ডে হিটু শেখ ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ