এক মাস সিয়াম সাধনার পর এলো খুশির ঈদ। সারা দেশে উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। তবে ঈদের দিনেও অনেকে যাচ্ছেন বাড়িতে।  
 
ছুটি কিংবা কাজের প্রয়োজনে আগে যারা ঢাকা ছাড়তে পারেননি তারা সোমবার (৩১ মার্চ) ঈদের দিন সকাল থেকে ঢাকা ছাড়ছেন। 

ঢাকার গুলিস্তান ও ফুলবাড়িয়া টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকেই বিভিন্ন পেশার মানুষ ঈদ উপলক্ষে নিজ নিজ এলাকায় যাচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, আনসার,  নরসুন্দর, রিকশা-ভ্যান-পিকআপচালক, ব্যবাসায়ী, ফুটপাতের দোকানিদের অনেকেই আজ গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছেন। যারা ব্যস্ততার জন্য যেতে পারেননি ও ঈদের আগে একটু বাড়তি আয়ের জন্য যাননি তারাই মূলত আজ যাচ্ছেন। 

ইমাদ কাউন্টারের ম্যানেজার মিঠু বলেন, “আজ সকাল ৭টা থেকে বাস ছেড়ে যাচ্ছে। অন্য বছরের তুলনায় এবার ঈদে দিন বেশি যাত্রী বাড়ি যাচ্ছে। তবে ঈদুল ফিতরের চেয়ে ঈদুল আজহাতে ঈদের দিন বেশি মানুষ বাড়িতে যান।” 
 
তাজ আনন্দ পরিবহনে বরিশালের গৌরনদী যাচ্ছেন সামসুর ইসলাম। তিনি বলেন, “ঢাকার বাইতুল মোকাররমে ফুটপাতে ব্যবসা করি। চাঁদ রাতে বেচা-কেনা ভাল হয়। সকালে দোকান বন্ধ করে এখন বাড়ি যাচ্ছি।”

তিনি বলেন, “বাড়িতে মা-বাবা, ছেলে-মেয়ে আছে। ঈদের দিন গ্রামের বাড়ির না গেলে তারা কষ্ট পাবেন। তাই  আজ যাচ্ছি।” 

ঈদে বাড়তি ভাড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “প্রতিবছর ঈদ আসলে বাড়িত ভাড়া আদায় করা হয়। এ বছরও একই অবস্থা। যখন সরকারের বিভিন্ন সংস্থা অভিযানে আসে তখন ভাড়া কমে। চলে গেলে আবারো বাড়িত ভাড়া নেয়। আজকে লোকাল বাস তাজ আনন্দে ৫০০ টাকার ভাড়া ৮০০ টাকা নিয়েছে। এগুলো দেখার কেউ নেই।”

পল্টনে একটি সেলুনের প্রোপাইটার শান্ত খান জানান, তার বাড়ি মাদারীপুরের মোস্তফাপুর। চাঁদ রাতে বেশি আয় হয়েছে। আজ সকালে কর্মচারীদের বিদায় দিয়ে তিনি বাড়ি যাচ্ছেন।

আনন্দ পরিবহনের ম্যানেজার তোয়াব আলী বলেন, “ঈদের দিনও  আমাদের বিভিন্ন রুটে বাস চলবে। যারা বিভিন্ন ব্যস্ততায় গ্রামে যেতে পারেননি, তারা আজ গ্রামে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে পারেন। আজও প্রচুর যাত্রী রয়েছে।”   

খুলনাগামী যাত্রী সাইদুল ইসলাম বলেন, “ঈদের আগেই বাড়ি যেতে চেয়েছিলাম কিন্তু মালিক বিদেশ ছিলেন। তাই ছুটি নিতে পারিনি। মালিক রবিবার দেশে এসে ছুটি দিয়েছেন। কিন্তু রাতে ঝুঁকি না নিয়ে আজ বাড়ি যাচ্ছি।” 

বশির নামের আরেক যাত্রী বলেন, “এবার আর্থিক সমস্যায় আছি। তাই ঈদ ঢাকায় করার চিন্তা ছিল। কিন্তু বাচ্চারা কান্নাকাটি করছে দাদাবাড়ি ঈদ করার জন্য। বাড়তি ভাড়া হলেও  টিকিট পেয়েছি। এখন সঠিকভাবে যেতে পারলেই হয়।”

ঢাকা/এএএম/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঈদ র দ ন আনন দ

এছাড়াও পড়ুন:

মামদানির উত্থান থেকে শিক্ষা নিচ্ছেন ইউরোপের বামপন্থীরা

নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির উত্থান ইউরোপের বামপন্থী রাজনীতিকদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে আগামী বছর স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগেই মঙ্গলবার ৪ নভেম্বর নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইউরোপের নেতারা চোখ রাখছেন মামদানির ওপর।

মামদানির নির্বাচনী প্রচার দেখতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের দলীয় কৌশলবিদেরা আগেই আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে নিউইয়র্কে এসেছেন। তাঁদের লক্ষ্য, মামদানিকে কাছ থেকে দেখে তাঁর রাজনীতির কৌশল শেখা। কারণ, মামদানি একেবারে সাধারণ অবস্থান থেকে উঠে এসে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহরের নেতৃত্বের দৌড়ে শীর্ষে পৌঁছেছেন। ইউরোপের রাজনীতিকেরা শিখতে চান, মামদানির তৃণমূলভিত্তিক প্রচারণা নিউইয়র্কে যেমন সফল হয়েছে, সেটি তাঁদের অঞ্চলেও কার্যকর হবে কি না।

ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বামপন্থীদের জোট দ্য লেফট গ্রুপের ফরাসি সহসভাপতি মানোঁ ওব্রি গত সপ্তাহে নিউইয়র্কে মামদানির প্রচারে অংশ নেন। ওব্রি ও তাঁর দল ফ্রান্স আনবাউড মামদানিকে পরিবর্তনের প্রতীক হিসেবে দেখছেন। তাঁরা মামদানির মডেল অনুসরণ করে ফ্রান্সজুড়ে ২০২৬ সালের পৌরসভা নির্বাচনে বড় প্রভাব ফেলতে চান।

জার্মানির পুঁজিবাদবিরোধী দল দ্য লেফট নিউইয়র্কে চার কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছে। তাঁরা মামদানির প্রচারকৌশলের প্রধান মরিস ক্যাটজসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দলটির সংসদীয় কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক লিজা ফ্লাউম বলেন, মামদানির মতো কৌশল অনুসরণ করে অতীতে তাঁদের দল ভালো করেছে। জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোর বিষয়টি তাঁদের কাছে বেশি গুরুত্ব পেয়েছিল। এর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে দরজায় দরজায় গিয়ে প্রচারের কৌশল নিয়েছিল তাঁদের দল। ফ্লাউম আশা করেন, বার্লিনে আগামী সেপ্টেম্বরের আইনসভা নির্বাচনে দ্য লেফট মামদানির বর্তমান প্রচারণাকে মডেল হিসেবে ব্যবহার করবে।

এদিকে মেয়র নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকা মামদানি বিদেশে তাঁর প্রচারকৌশল নিয়ে মাতামাতির বিষয়টিকে এখন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এ প্রসঙ্গে মামদানি বলেন, আপাতত তাঁর মনোযোগ পুরোপুরি স্থানীয় রাজনীতিতে।

ফ্রান্স ও জার্মানির মতোই যুক্তরাজ্যের রাজনীতিকেরা মামদানির প্রচারকৌশল দেখে মুগ্ধ। মামদানির ছোট ছোট ভিডিওতে ব্যক্তিত্ব ও আকর্ষণকে কাজে লাগিয়ে জীবনযাত্রার খরচের বিষয়টি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আবার তাঁকে একই সঙ্গে আপনজন হিসেবেও উপস্থাপন করা হয়েছে।

আরও পড়ুননিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচন: সর্বশেষ চার জরিপেও এগিয়ে জোহরান মামদানি৭ ঘণ্টা আগে

ফ্রান্স আনবাউডের সংসদ সদস্য দানিয়েল ওবোনো বলেন, ‘মামদানির দলীয় নির্বাচনে জয়টাই একটা বড় রাজনৈতিক ঘটনা। শুধু তিনি কী নিয়ে লড়েছেন, তা–ই নয়, বরং কীভাবে লড়েছেন, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর যোগাযোগের কৌশল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহারসহ অনেক কিছুই আমাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’

যুক্তরাজ্যের গ্রিন পার্টির নেতা মোথিন আলি বলেন, বামপন্থীদের এখন শেখা দরকার, কীভাবে মামদানির মতো করে সংক্ষিপ্ত অথচ প্রভাবশালী বার্তা পৌঁছে দিতে হয়। যুক্তরাজ্যের সাবেক লেবার নেতা এবং বর্তমানে ইয়োর পার্টির নেতৃত্বে থাকা জেরেমি করবিনও এক এক্স পোস্টে মামদানির প্রচারে সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেছেন।

আরও পড়ুননিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক আগাম ভোট, তরুণেরা কেন আগাম ভোট দিচ্ছেন৯ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ