ঈদের নামাজ শেষে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ১
Published: 31st, March 2025 GMT
নাটোরের লালপুর উপজেলায় ঈদের নামাজ শেষে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষে একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। রোববার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঈদের নামাজ শেষে রামকৃষ্ণপুর ঈদগাহে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা জয় বাংলা স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় বিএনপি ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে তাঁদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে সাব্বির (২৪) নামের বিএনপির এক কর্মী আহত হন। তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পর আওয়ামী লীগের কর্মীরা বিএনপির কর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এতে সুজাত নামের বিএনপির এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী রান্টু ইসলাম বলেন, প্রথমে একদল যুবক রামকৃষ্ণপুর গ্রামে ঈদগাহ মাঠে জয় বাংলা স্লোগান দেন। পরে তাঁরা লালপুর-বাঘা সড়কে একই স্লোগান দেন। এ নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
পুলিশ সুপার আমজাদ হোসাইন বলেন, দুই যুবক ঈদগাহ মাঠে জয় বাংলা স্লোগান দিয়েছেন, এ রকমটা জানতে পেরেছেন। তবে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনাটি মসজিদকে কেন্দ্র করে নাকি গ্রামভিত্তিক হয়ে রাজনৈতিক রূপ নিয়েছে, তা যাচাই-বাছাই করছেন। মারামারিতে সম্পৃক্ত ছিলেন, এমন পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থলে পুলিশ, ডিবি পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর সদস্যরা আছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র স ঘর ষ আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
আরপিওর বিধানের বৈধতার রায় রিভিউর জন্য হলফনামার অনুমতি
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নের সঙ্গে যুক্ত করাসংক্রান্ত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের বিধানের বৈধতা দিয়ে ১৪ বছর আগে রায় দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। এই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদনের জন্য হলফনামার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন দুজন আইনজীবীসহ সাত ব্যক্তি। শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব আজ সোমবার হলফনামা করার অনুমতি দিয়েছেন।
আবেদনকারী সাত ব্যক্তি হলেন ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন, মেজর (অব.) এস এম হারুনুর রশীদ, কাজী জাহেদুল ইসলাম, আইনজীবী এস এম আজমল হোসেন, মেজর (অব.) নিয়াজ আহমেদ জাবের, মেজর (অব.) মো. জিয়াউল আহসান ও সালাহ উদ্দিন।
আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ওমর ফারুক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এ মামলায় আবেদনকারীরা পক্ষ ছিলেন না। যে কারণে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন দায়েরের জন্য হলফনামা করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন তাঁরা। চেম্বার আদালত হলফনামা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছেন। আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষে শিগগিরই রিভিউ আবেদন করা হবে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ১২(৩ক)(ক) বিধান অনুযায়ী নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে যুক্ত করে দিতে হবে। তবে শর্ত থাকে যে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী ইতিপূর্বে জাতীয় সংসদের কোনো নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হয়ে থাকলে ওই তালিকা প্রদানের প্রয়োজন হবে না।
আইনজীবীর তথ্য অনুসারে, ঢাকার একটি আসন থেকে ২০০৭ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাহবুব আহমেদ চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি মনোনয়নপত্র নেন। পরে নির্বাচনের ওই তারিখ পিছিয়ে যায়। অন্যদিকে ২০০৮ সালে আরপিও দফা ১২(৩ক)–তে সংশোধনী আনা হয়। এই বিধান সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদ ও আরপিওর ১২(১) ধারার পরিপন্থী উল্লেখ করে মাহবুব আহমেদ চৌধুরী ২০১০ সালে হাইকোর্ট রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট রুল ডিসচার্জ (খারিজ) করে রায় দেন। দফা (৩ক) সংবিধান পরিপন্থী নয় বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১০ সালে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন রিট আবেদনকারী। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ ২০১১ সালের ২৩ জানুয়ারি লিভ টু আপিল খারিজ করে রায় দেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নের সঙ্গে যুক্ত করাসংক্রান্ত আরপিওর ১২(৩ক)–তে বেআইনি কিছু পাননি বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
ওই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে দুই আইনজীবীসহ সাত ব্যক্তি আবেদন করতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তাঁদের আইনজীবী ওমর ফারুক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে ভোটারের গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে। ভোটার কোন প্রার্থীকে ভোট দেবেন বা দেবেন না, এটি একান্তই তাঁর চিন্তা ও মতপ্রকাশের অধিকার। সিক্রেট ব্যালটে হামলা হলে ভোট বাতিলও হয়। সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে প্রার্থীর যোগ্যতা নির্ধারণ করা আছে। রাজনৈতিক দল হলে ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন লাগবে না, অথচ স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে গেলে লাগবে অর্থাৎ একই মনোনয়নপত্র ঘিরে দ্বৈত বিধান। ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন থাকার ওই বিধানের মাধ্যমে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখার সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা সংবিধান সমর্থন করে না এবং ভোটারের গোপনীয়তারও লঙ্ঘন—এসব যুক্তি তুলে ধরে আবেদনটি করা হয়।