ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেছেন, পারমাণবিক চুক্তি না করলে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে বোমা হামলার হুমকি দিয়েছেন, তেহরান তার জবাবে যুক্তরাষ্ট্রে বড় ধরনের আঘাত হানবে।

ট্রাম্প রবিবার তার হুমকি পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, মার্চের গোড়ার দিকে ইরানের নেতৃত্বের কাছে পাঠানো একটি চিঠিতে বর্ণিত আলোচনা প্রস্তাব গ্রহণ না করলে ইরান বোমা হামলার শিকার হবে। তেহরানকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য দুই মাসের সময় দিয়েছেন তিনি।

ইরানের সরকারি গণমাধ্যম জানিয়েছে, সোমবার সুইস দূতাবাসের কাছে ট্রাম্পের হুমকি সম্পর্কে ইরান সতর্কবার্তা পাঠিয়েছে। কারণ সুইস দূতাবাস মার্কিন স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করে এবং ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করে। সতর্কবার্তায় তেহরান যেকোনো হুমকির ‘সিদ্ধান্তমূলক ও তাৎক্ষণিক’ জবাব দেওয়ার দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করেছে।

খামেনি বলেছেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের শত্রুতা সবসময়ই ছিল। তারা আমাদের উপর আক্রমণের হুমকি দেয়, যা আমরা খুব একটা ধর্তব্য বলে মনে করি না, তবে যদি তারা কোনো দুষ্কর্ম করে তবে তাদের ওপর অবশ্যই শক্তিশালী প্রতিশোধমূলক আঘাত হানতে হবে।”

তিনি বলেন, “যদি তারা বিগত বছরগুলোর মতো দেশের অভ্যন্তরে রাষ্ট্রদ্রোহ সৃষ্টি করার কথা ভাবে, তাহলে ইরানি জনগণ নিজেরাই তাদের মোকাবেলা করবে।”

ইরানি কর্তৃপক্ষ দেশের ভেতরে সাম্প্রতিক অস্থিরতার জন্য পশ্চিমাদের দোষারোপ করে থাকে। এই অস্থিরতা মধ্যে রয়েছে ২০২২-২০২৩ সালে হিজাব নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে আটক তরুণী মাহসা আমিনির হেফাজতে মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ এবং ২০১৯ সালে জ্বালানির দাম বৃদ্ধির বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিক্ষোভ।
 

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ