দীর্ঘ ১৬ বছর পর মুক্ত পরিবেশে এবং ভিন্ন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ঈদ উদযাপন করছেন বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর স্বৈরাচারমুক্ত পরিবেশে স্বস্তির ঈদ উদযাপন করতে পেরে খুশি বিএনপি, এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। দীর্ঘ দিনের হামলা-মামলায় জর্জরিত নেতাকর্মীরা বলছেন, বিগত ১৬ বছর সময়ে যে দুর্বিসহ অত্যাচার-নির্যাতন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার করেছে, তা যেন ভবিষ্যতে কখনো আর ফিরে না আসে।

কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হৃদয় হাসান। কুমারখালী সরকারি কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত এই যুবকের বেশ কয়েকটি ঈদ কেটেছে কারাগারে। তার অপরাধ ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকা।

আরো পড়ুন:

তারেক রহমানের ঈদ শুভেচ্ছা, চাইলেন স্বৈরাচারের বিচারও

‘রাষ্ট্রশক্তি দিয়ে জনগণের শক্তি দমন করা যায় না’

নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের যুবক হৃদয় হাসান জানালেন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কারণে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলা-মামলার কারণে দীর্ঘদিন পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে পারেননি। তার পরিবারেও ছিল না ঈদের আনন্দ। আওয়ামী সরকার পতনের পর এ বছর পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে পারছেন। এই যুবক বলছেন, ভবিষ্যতে কোনো রাজনৈতিক দল যেন ফ্যাসিস্টের ভুমিকায় এদেশে আর ফিরে আসতে না পারে। 

হৃদয় হাসানের মা মোছা.

রেনু বেগম বলেন, ‘‘ছেলে বিরোধী দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে আমরা পরিবারের সদস্যরাও স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারিনি। দীর্ঘ সময়ে বাড়িতে ছিল না ঈদের আনন্দ। সব সময় আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটতো। ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা, যাতে বাড়তি মাত্রা যোগ করেছিল, আওয়ামী দোসরদের নানা হয়রানি।’’

কুষ্টিয়া সদর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘‘শুধু হৃদয় হাসান নয়, বিরোধীদলের ও মতের কোনো নেতাকর্মীরা বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনমলে ঈদ উদযাপন করতে পারেনি। বিগত সময়ে এ সব নেতাকর্মীদের বাড়িতেও ছিল না ঈদের আনন্দ। নানা রকম হয়রানি আর অত্যাচারে অতিষ্ঠ থাকলেও আমরা চাই না, এ রকম দিন সামনে ফিরে আসুক।’’

ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ঈদ উৎসব ন ত কর ম পর ব র র র জন ত ক কর ম র ত পর ব আওয় ম সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

কালিয়াকৈরে বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ, ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে বিক্ষুব্ধদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। রবিবার (১৫ জুন) সকালে উপজেলার সাহেববাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানান, গত ১৪ জুন কালিয়াকৈর উপজেলা, পৌরসভাসহ জেলার আটটি ইউনিটের কমিটি বাতিল করে গাজীপুর জেলা বিএনপি। তৃণমূল নেতাকর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বৈঠক করে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি। পরে শনিবার (১৪) সন্ধ্যায় কালিয়াকৈর উপজেলা ও পৌরসভার কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটিতে উপজেলার বিএনপির আহ্বায়ক করা হয়েছে মৌচাক ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম সিকদার, সদস্য সচিব করা হয়েছে এম আনোয়ার হোসেনকে। কালিয়াকৈর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক করা হয়েছে মামুদ সরকার ও সদস্য সচিব করা হয়েছে মহসিন উজ্জামানকে। 

উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আহমেদ গ্রুপ কমিটি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন । আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে শনিবার (১৪ জুন) রাতেই বিক্ষোভ মিছিল করে নেতাকর্মীরা। জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকীর অনুসারীদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন পারভেজ গ্রুপের কর্মীরা।

একই দাবিতে রবিবার (১৫ জুন) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী পারভেজ আহমেদের পক্ষ নিয়ে আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করে। এ সময়ে নতুন কমিটির পক্ষ থেকে আরেকটি মিছিল বের হলে উভয়ের মধ্যে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া হয়। 

পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে বিক্ষুব্ধদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে এলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। তবে এখনো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আতঙ্কে রয়েছেন এলাকাবাসী।

কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান জানান, সকাল থেকে ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়া হলেও এখনো পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। 
 

ঢাকা/রেজাউল/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ