ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আতশবাজির কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে এখন পর্যন্ত দুই শিশুসহ ৭ জন নিহত ও বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন।

সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সুন্দরবন লাগোয়া পাথরপ্রতিমা এলাকায় এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। 

নিহতরা হলেন, প্রভাতী বণিক (৮০), সান্ত্বনা বণিক (২৮), অর্ণব বণিক (৯), অস্মিতা বণিক (৬ মাস), অঙ্কিত বণিক (৬ মাস), অরবিন্দ বণিক (৬৫) ও অনুস্কা বণিক (৬)। এখনো ৪ জন নিখোঁজ আছেন। বিস্ফোরণের পর থেকে তাঁদের কোনো খবর পাওয়া যাচ্ছে না বলে গ্রামবাসীদের দাবি। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাতে বিকট শব্দে পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। একটু পর একটি বাড়িতে আগুন দেখতে পায় স্থানীয়রা। বাসন্তী পূজার জন্য বাড়িটির একটি ঘরে বেআইনিভাবে আতশবাজি তৈরি করা হচ্ছিল। তখনই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।  

এই বিষয়ে পাথরপ্রতিমার বিধায়ক সমীর কুমার জানা বলেন, আতশবাজি তৈরি করার সময় হঠাৎ বিস্ফোরণ ঘটেছে। এতে পুরো বাড়িতে আগুন ধরে যায়। ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ওই বাড়ির ভিতরে আরও কিছু মানুষ আটকে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। ঘটনাস্থলে ঢোলাহাট থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন রয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি বেআইনি আতশবাজির কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এর আগে পূর্ব মেদিনীপুরের খাদিকুলে বেআইনি আতশবাজির কারখানায় বিস্ফোরণের জেরে মৃত্যু হয়েছে একাধিক। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আগ ন কলক ত

এছাড়াও পড়ুন:

দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।

আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।

বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’

এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্‌স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ