রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর ‘খুব রেগে’ আছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম এনবিসিকে গত রোববার এমনই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে রাশিয়া ও পুতিনকে নিয়ে সুর বদল করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এনবিসির সাংবাদিক ক্রিস্টেন ওয়াকারের ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনে রক্তপাত বন্ধ করার জন্য আমি ও রাশিয়া যদি একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারি, আর যদি মনে করি যে এটা রাশিয়ার ভুলের কারণে হয়েছে, তাহলে রাশিয়া থেকে আসা সব জ্বালানি তেলের ওপর দ্বিতীয় ধাপে শুল্ক আরোপ করব।’

ট্রাম্পের এ ক্ষোভ প্রকাশের পর ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ইউক্রেনের সঙ্গে কৃষ্ণসাগরের যুদ্ধবিরতি নিয়ে কাজ চলছে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও বিরল খনিজ নিয়ে চুক্তিতে আগ্রহী রাশিয়া।

রাশিয়ার রাষ্ট্রমালিকানাধীন সংবাদ সংস্থা তাস জানায়, ক্রেমলিনের মুখপাত্র পেসকভ বলেছেন, কৃষ্ণসাগরে মার্কিন মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির কাজ চলছে। তিনি কৃষ্ণসাগরে নৌ যুদ্ধবিরতির কথা উল্লেখ করছেন, যা গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পৃথক চুক্তিতে রাশিয়া ও ইউক্রেন রাজি হয়েছে।

দিন কয়েক আগে পুতিন বলেছিলেন, ইউক্রেনে জেলেনস্কিকে সরিয়ে একটি সাময়িক প্রশাসনকে ক্ষমতায় আনতে হবে। তারাই যুদ্ধ বন্ধে কাজ করবে এবং দেশটিতে একটি নির্বাচনের আয়োজন করবে। রুশ প্রেসিডেন্টের এই মন্তব্যের বিষয়ে ক্রিস্টেন ওয়াকারকে ট্রাম্প বলেন, তিনি পুতিনের ওপর ‘খুবই রাগান্বিত ও বিরক্ত’ হয়েছেন।

ইউক্রেনের তিন বছরের বেশি সময় ধরে যুদ্ধ চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে বসার পর দ্রুত এই যুদ্ধ বন্ধ করতে চাইছেন ট্রাম্প। ইউক্রেন ও রাশিয়া—দুই পক্ষের সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে দফায় দফায় আলোচনা করেছে তাঁর প্রশাসন। তবে এখনো কোনো অগ্রগতি আসেনি।

এ ছাড়া ইউক্রেনের ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির যে যৌথ প্রস্তাব কিয়েভ ও ওয়াশিংটন দিয়েছিল, তা ফিরিয়ে দিয়েছেন পুতিন। এনবিসিকে ট্রাম্প বলেন, তিনি যে রেগে আছেন, তা পুতিন জানেন। তবে রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তাঁর খুবই ভালো সম্পর্ক রয়েছে। পুতিন যদি সঠিক কাজটা করেন, তাহলে রাগ দ্রুত প্রশমিত হবে।

খনিজ নিয়ে আলোচনা

যুক্তরাষ্ট্রের কিছু কোম্পানি রাশিয়ার কয়েকটি বিরল খনিজ সম্পদ প্রকল্পে যৌথভাবে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। গতকাল সোমবার ক্রেমলিন এ তথ্য জানিয়েছে। তবে তারা সতর্ক করে বলেছে, বিষয়টি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন র

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ