মিয়ানমারের ভয়াবহ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীর তিনটি উড়োজাহাজে করে আরও ১৫ টন ত্রাণসামগ্রী পাঠানো হয়েছে। আজ মঙ্গলবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ত্রাণসামগ্রীর সঙ্গে আজ একটি উদ্ধারকারী দল, জরুরি ওষুধসামগ্রীসহ একটি চিকিৎসক দল গেছে।

আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে গত ২৮ মার্চ মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে সংঘটিত ভয়াবহ ভূমিকম্পে মিয়ানমারের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সহায়তার অংশ হিসেবে সশস্ত্র বাহিনীর মাধ্যমে জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণসামগ্রী এবং উদ্ধার ও চিকিৎসাসহায়তা দল পাঠানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম ধাপে গত ৩০ মার্চ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর দুটি পরিবহন বিমানের মাধ্যমে সাড়ে ১৬ টন জরুরি ত্রাণসহায়তা সফলভাবে মিয়ানমারে পাঠানো হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি এবং বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর দুটি পরিবহন বিমানের মাধ্যমে উদ্ধার সরঞ্জামসহ একটি উদ্ধারকারী দল এবং জরুরি ওষুধসামগ্রীসহ একটি চিকিৎসক দল এবং আরও ১৫ টন ত্রাণসামগ্রী মিয়ানমারের নেপিডোর উদ্দেশে যাত্রা করেছে।

আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ৫৫ সদস্যবিশিষ্ট বাংলাদেশ সহায়তাকারী দল সেনাবাহিনীর কর্নেল মো.

শামীম ইফতেখারের নেতৃত্বে মিয়ানমারের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধার অভিযান ও জরুরি চিকিৎসাসেবা পরিচালনা করবে। ৩৪ সদস্যবিশিষ্ট উদ্ধারকারী দলের মধ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২১ জন, নৌবাহিনীর ২ জন, বিমানবাহিনীর ১ জন এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ১০ সদস্য রয়েছেন। এ ছাড়া ২১ সদস্যবিশিষ্ট চিকিৎসা সহায়তা দলের মধ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১০, নৌবাহিনীর ১, বিমানবাহিনীর ২ এবং অসামরিক ৮ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও নার্স রয়েছেন।

উদ্ধারকারী ও চিকিৎসাসহায়তা প্রদানকারী দলের পাশাপাশি আজ পাঠানো ১৫ টন ত্রাণসহায়তার মধ্যে রয়েছে শুকনা খাবার, বিশুদ্ধ পানি, তাঁবু, হাইজিন প্রোডাক্ট, ওষুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় অন্যান্য সামগ্রী।

মিয়ানমারের ক্রান্তিকালে বাংলাদেশ সরকারের এই মানবিক উদ্যোগে সশস্ত্র বাহিনীর পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও কার্যালয় পূর্ণ সহযোগিতা দিয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে সশস্ত্র বাহিনী বিশেষভাবে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।

আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রতিবেশী রাষ্ট্র মিয়ানমারের এই সংকটকালে বাংলাদেশ সরকারের এই মানবিক উদ্যোগ বাংলাদেশের সুপ্রতিবেশীসুলভ আচরণের পরিচায়ক। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী বিশ্বাস করে, বাংলাদেশ সরকারের পাঠানো এই মানবিক সহায়তা মিয়ানমারে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের দুর্ভোগ কমিয়ে আনা এবং দুই প্রতিবেশী দেশের সরকার ও জনগণের পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল দ শ সরক র র সশস ত র ব হ ন ভ ম কম প সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

ক্যাম্পাসে বিনা মূল্যে রাউটার ও ৫০০ টাকায় ১৫ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট দেবে বিটিসিএল, পাবেন যেভাবে

সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৫০০ টাকায় ১৫ এমবিপিএস (মেগাবিট পার সেকেন্ড) ইন্টারনেট দেবে; সঙ্গে বিনা মূল্যে রাউটার দেবে তারা।

প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব গতকাল মঙ্গলবার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে বিটিসিএলের ইন্টারনেট–সেবার বিষয়ে একটি পোস্ট দেন।

সেখানে বিটিসিএলের নতুন প্যাকেজটি তুলে ধরেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ও হোস্টেলে শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের জন্য বিশেষ প্যাকেজ দেবে বিটিসিএল।

জিপন নামে বিটিসিএলের প্যাকেজের আওতায় ক্যাম্পাস–১৫ নামের একটি ইন্টারনেট প্যাকেজ চালু করা হচ্ছে। এতে ১৫ এমবিপিএস গতিতে মাসিক ৫০০ টাকায় ক্যাম্পাসে ইন্টারনেট দেওয়া হবে। সেবাটি শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য প্রযোজ্য হবে।

বিটিসিএল টেলিফোন সেবা পরিচালনাকারী সরকারি সংস্থা। ২০০৮ সালের আগে এটি বাংলাদেশ টেলিগ্রাফ অ্যান্ড টেলিফোন বোর্ড (বিটিটিবি) নামে পরিচিত ছিল। পরে একটি কোম্পানিতে পরিণত করা হয়, নাম হয় বিটিসিএল।

বিটিসিএল এখন টেলিফোন, ইন্টারনেট, ডোমেইন, ব্যান্ডউইডথ সঞ্চালন ইত্যাদি সেবা দেয়। অবশ্য তাদের ইন্টারনেট–সেবার গ্রাহক অনেক কম। বেসরকারি ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বা আইএসপিদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে বিটিসিএল।

জিপন ইন্টারনেট প্যাকেজের আওতায় তারা ১ লাখ ১৩ হাজার ১৭৬ গ্রাহককে সেবা দেয়।

নতুন প্যাকেজ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিটিসিএলের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, নেটওয়ার্ক থাকা সাপেক্ষে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য বিটিসিএল ৫০০ টাকায় ১৫ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট দেবে। তাদের সেবা পেতে টেলিসেবা অ্যাপ বা মাইবিটিসিএল সাইটে গিয়ে নিবন্ধন (রেজিস্ট্রেশন) করে প্রয়োজনীয় নথিপত্র দিতে হবে। সাধারণত তিন দিনের মধ্যেই সংযোগ দেওয়া হয়।

সংযোগ দেওয়ার পর কোনো সমস্যা দেখা দিলে, সে ক্ষেত্রে তাদের হটলাইন ১৬৪০২ নম্বরে অথবা অ্যাপের মাধ্যমে অভিযোগ জানাতে হয়। ২৪ ঘণ্টা সেবা পাওয়ার বিষয়টি তাদের জনবল ও সক্ষমতার ওপর নির্ভর করে।

বিটিসিএল টেলিফোন লাইন ও আইএসপিদের মতো তারের মাধ্যমে ইন্টারনেট–সেবা দেয়। গ্রাহক চাইলে দুভাবেই ইন্টারনেট সংযোগ নিতে পারবেন।

বিটিসিএল জানায়, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকেই তারা ৫০০ টাকায় ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট–সেবা দিয়ে আসছে। ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য বলছে, ///////////১৫ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট দিতে তারা নিত ১৫ টাকা। ২০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট–সেবার মূল্য ১ হাজার ৫০ টাকা।////////////

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব ফেসবুক পোস্টে জানান, ইন্টারনেট ও টেলিফোনের সংযোগ নিলে মাসিক চার্জের সঙ্গে অতিরিক্ত ১০০ টাকা যোগ হবে। টেলিফোন কল চার্জের ক্ষেত্রে বিটিসিএলের ‘অফিশিয়াল চার্জ’ প্রযোজ্য হবে। এই সেবা শুধু প্রিপেইড সেবা হিসেবে পাওয়া যাবে এবং অফার সীমিত সময়ের জন্য। এলাকাভিত্তিক সংযোগ ফি প্রযোজ্য।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব ফেসবুক পোস্টে বিটিসিএলের আরও সেবার ব্যাপারে জানান। তিনি বলেন, বিটিসিএল তাদের ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) শ্রেণিতে কেনা ব্যান্ডউইডথের অতিরিক্ত ৪৫ শতাংশ বেনাপোলে ও ৪০ শতাংশ প্রণোদনা হিসেবে সারা দেশে দেবে।

আইএসপি শ্রেণিতে অতিরিক্ত ৪০ শতাংশ, সরকারি বা করপোরেট শ্রেণিতে ইন্টারনেট গ্রাহকদের অতিরিক্ত ৪০ শতাংশ, শিক্ষা শ্রেণিতে অতিরিক্ত ৪০ শতাংশ ও ডেটা সেন্টার শ্রেণিতে অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ ব্যান্ডউইডথ প্রণোদনা হিসেবে দেবে বিটিসিএল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আগ বাড়িয়ে উসকানিমূলক পদক্ষেপ নেবে না পাকিস্তান: ইসহাক দার
  • ক্যাম্পাসে বিনা মূল্যে রাউটার ও ৫০০ টাকায় ১৫ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট দেবে বিটিসিএল, পাবেন যেভাবে
  • পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে সংঘর্ষ, ৩ দিনে নিহত ৭১
  • পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে সংঘর্ষ, নিহত ৭১