চলছে ঈদ আনন্দমেলা, অভিভাবকেরাও খুশি, শিশুরাও খুশি
Published: 1st, April 2025 GMT
রাজধানীর মিরপুর-১০ এলাকার বাসিন্দা গৃহিণী রাফিকা সুলতানা। আজ দুপুরে ছয় বছরের ছেলে নিহানুজ্জামানকে নিয়ে এসেছেন শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র প্রাঙ্গণে। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সেখানে চলছে বিশেষ ‘ঈদ আনন্দমেলা’ ।
প্রায় দেড় ঘণ্টা মেলা ঘুরে গৃহিণী রাফিকা সুলতানা উচ্ছ্বাসের কথা জানালেন। তিনি বলেন, ঈদের বন্ধে সময় কাটাতে এখানে এসে খুবই ভালো লাগছে। মেলায় ঢুকতে টিকিট নেই, ভিড় কম; বাচ্চাদের খেলার জায়গাও রয়েছে। সব মিলিয়ে আমিও খুশি, ছেলেও খুশি।
রাফিকা সুলতানা যখন এ কথা বলছিলেন, তখন মেলা প্রাঙ্গণে আরও ১৫-১৬টি শিশু খেলাধুলা করছিল। একটু দূরে তাদের অভিভাবকেরাও দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁরাও জানালেন, বাসার ছোটদের এখানে ঘুরতে নিয়ে এসে ভালোই সময় কাটছে তাঁদের। একই সঙ্গে পছন্দের কিছু পণ্য কেনারও সুযোগ পাচ্ছেন।
দুই দিনব্যাপী ঈদ আনন্দমেলার আজ শেষ দিন। গতকাল সোমবার সকালে মেলা শুরু হয়েছে। চলবে আজ সন্ধ্যার পর পর্যন্ত। গতকাল মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের উপস্থিতিও ছিল অনেক বেশি। ফলে সন্ধ্যার পর একপর্যায়ে ওই এলাকায় যানজট হয়।
মেলায় বিভিন্ন খাতের এসএমই উদ্যোক্তার ২০০টির বেশি স্টল আছে। স্টল বরাদ্দের ক্ষেত্রে খাদ্য, অলংকার, খেলনা প্রভৃতি পণ্যকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া শিশুদের বিনোদনের জন্য মেলা প্রাঙ্গণে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পাপেট, নাগরদোলা ও খেলার সামগ্রী।
মেলার আয়োজক ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। সংস্থাটি জানিয়েছে, ঈদ কেন্দ্র করে সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে রাজধানীতে এ ধরনের মেলা এই প্রথম আয়োজন করা হয়েছে।
আজ দুপুর ১২টার দিকে সরেজমিন দেখা যায়, মেলা দেখতে কয়েক শ মানুষ এসেছেন। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগ গতকাল টেলিভিশন বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মেলার বিষয়ে খবর জেনেছেন।
কেউ কেউ পরিচিতদের মাধ্যমে খবর জেনে মেলায় এসেছেন। কিছু মানুষ এমনি এমনি এসেছেন, নিছক ঘোরাঘুরি করতে; কিন্তু যে যেভাবেই মেলায় আসুন না কেন, সবাই আনন্দের কথা জানিয়েছেন।
গাজীপুর জেলা থেকে ঢাকায় আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে এসেছেন স্কুলশিক্ষক সুমি আক্তার। আজ দুপুরে তিনি ছোট ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে মেলায় আসেন। প্রথম আলোকে সুমি আক্তার বলেন, ‘গতকাল বাসায় মেলার খবর দেখেছে ছেলে-মেয়ে। এর পর থেকে মেলায় আসার জন্য ওরা অধীর হয়ে ছিল। সে জন্য আজ ওদের নিয়ে এসেছি।’
বিক্রেতাদের মূল কাজ নেটওয়ার্কিংডিএনসিসির আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ মেলায় দুই শতাধিক স্টল আছে। যদিও কিছু স্টল খালি দেখা গেছে।
যাঁরা এসেছেন, তাঁরা পণ্য বিক্রির চেয়ে নেটওয়ার্কিং বা যোগাযোগ বৃদ্ধিতে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।
যেমন ‘হাতে বোনা নকশা’ নামের এক ফেসবুকভিত্তিক উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান মেলায় হাতে কাজ করা পোশাক, কাঁথা, বালিশের কাভার প্রভৃতি পণ্য নিয়ে এসেছেন।
এই প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা আইরিন গোমেজ বলেন, ঈদের মধ্যে বেচাকেনা মূল লক্ষ্য নয়। অন্যান্য উদ্যোক্তা আসছেন এবং ক্রেতারাও আসছেন। ফলে ঈদের আনন্দ উদ্যোক্তাদের মধ্যে ভাগাভাগি হচ্ছে, ক্রেতাদের সঙ্গেও নেটওয়ার্কিং হচ্ছে।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গতকাল ঈদের দিন দুপুরের পর মেলায় ভালোই ভিড় ছিল। সে তুলনায় আজ সকাল থেকে ভিড় কমই দেখা গেছে। বিক্রেতাদের আশা, বিকেল থেকে মানুষের ভিড় বাড়বে।
মন বুটেক্স অ্যান্ড ভ্যারাইটিজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী শাহরিন তাসনিম বলেন, ‘গতকাল ঈদের দিন হিসেবে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছিল। আশা করছি আজও ভালো বিক্রি হবে। ঈদের পরদিন সকালবেলা অনেকেই আত্মীয়স্বজনের বাসায় যান, তাই সকাল থেকে মানুষের উপস্থিতি কিছুটা কম। বিকেল হতে হতে মানুষের আগমন অনেকটা বাড়বে বলে আশা করছি।’
মেলায় বেচাকেনা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন লুসি'স ক্রিয়েশন নামের হাতে গয়না ও ব্যাগ তৈরির প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা লুসি অন্তি রায়। তিনি বলেন, গতকাল সারা দিনই মোটামুটি ভিড় ছিল। বিক্রি হয়েছে ২০ হাজার টাকার বেশি পণ্য। ঈদের সময় এক দিনের হিসাবে এটি ভালোই বিক্রি। আশা করছি আজ বিক্রির পরিমাণ আরও বাড়বে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
টাঙ্গাইলের সড়কে ঝরল ২ প্রাণ
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ট্রাকের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার দুইজন নিহত হয়েছেন। সোমবার (৩ নভেম্বর) ভোরের দিকে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ঘারিন্দা আন্ডারপাস এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হন তারা।
নিহতরা হলেন- টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার আকুয়া এলাকার কাছিম উদ্দিনের ছেলে সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক সাহেব আলী (৪৫) এবং একই উপজেলার ভোক্তা এলাকার নূর মোহাম্মদ শেখের ছেলে যাত্রী আব্দুল আলীম (৬০)।
আরো পড়ুন:
মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা, তরুণের মৃত্যু
চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে যুবক নিহত
পুলিশ জানায়, ঢাকাগামী সার্ভিস লেনে একটি ট্রাক সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। ঘটনাস্থলেই যাত্রী আলীম মারা যান। গুরুতর আহত চালক সাহেব আলীমকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
এলেঙ্গা হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কামরুল হাসান বলেন, “নিহতদের মরদেহ টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে মরদেহগুলো হস্তান্তর করা হবে।”
ঢাকা/কাওছার/মাসুদ