ভারতের আসাম রাজ্যের বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার ও প্রবীণ বিজেপি নেতা নুমাল মোমিন বাংলাদেশকে দুই ভাগ করে ফেলার হুমকি দিয়েছেন। তিনি এক অংশে মুসলমানদের এবং অপর অংশে হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মের মানুষদের রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। মঙ্গলবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেছেন।

নুমাল মোমিন বলেছেন, “আমি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে মনে করিয়ে দিতে চাই যে, ভারত ১৯৭১ সালে একবার পাকিস্তানকে ভেঙে ফেলেছিল - পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান - (বর্তমানে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ)। ভারত আবারো এই পাকিস্তান ও বাংলাদেশকে ভেঙে ফেলতে পারে।”

তিনি বলেন, “আমার মতামত হলো বাংলাদেশকে দুই ভাগে ভাগ করা উচিত, এক ভাগে বাংলাদেশি মুসলিমদের থাকা উচিত এবং অন্য ভাগে হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, জৈন, শিখদের বসবাস করা উচিত। তাই, মুহাম্মদ ইউনূসকে ভারতের বিরুদ্ধে মন্তব্য করার সময় খুব সতর্ক থাকা উচিত। আমরা চাই না যে, এর ফলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিঘ্নিত হোক। তবে আমাদের সতর্ক করা উচিত যে, উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের বিরুদ্ধে তাদের খেলা উচিত নয়। তাদের উত্তর-পূর্বের মানুষদের বিরুদ্ধে খেলা উচিত নয়। কারণ এই উত্তর-পূর্ব আমাদের জাতির একটি অংশ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের উন্নয়নে বিশেষ আগ্রহ দেখাচ্ছেন। উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের পক্ষ থেকে এটি একটি সতর্কীবার্তা যে, মুহাম্মদ ইউনূসকে এই ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকা উচিত।”

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ