সারা দেশে সোমবার (৩১ মার্চ) যথাযথ মর্যাদা ও ধর্মীয় গাম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে উদযাপিত হয়েছে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদ চলে গেলেও দেশজুড়ে এখনো ঈদের আমেজ বিরাজ করছে। ঈদের পরের দুই দিন ১ ও ২ এপ্রিল নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি রয়েছে। ফলে, বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে ভিড় লেগে আছে।
এদিকে, রাজধানীসহ দেশের অনেক স্থানে গরম পড়ছে। এই গরমে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে রাজধানীর বিভিন্ন সুইমিং পুলে বিনোদনপ্রেমীদের ভিড় বেড়েছে। পার্ক ও বিনোদনকেন্দ্রের পাশাপাশি অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে সুইমিং পুলের নীল পানিতে গা ভাসিয়ে ঈদের আনন্দ উপভোগ করছেন। ঈদকে কেন্দ্র করে নানা অফার দিয়েছে বিভিন্ন সুইমিং পুল কর্তৃপক্ষ।
বুধবার (২ এপ্রিল) রাজধানীর দক্ষিণ বনশ্রী ও আফতাবনগর এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সুইমিং পুলের নীল পানির প্রতি আকর্ষণ অনেকেরই আছে। গরম বেড়ে যাওয়ায় আগ্রহ আরো বেড়েছে। ঈদের দিন থেকেই সুইমিং পুলগুলোতে ভিড় বাড়ছে।
ইট-পাথরের নগরীতে প্রশান্তি পাওয়ার জায়গা খুবই কম। এ ব্যস্ত নাগরিক জীবনে কিছুটা স্বস্তি পেতে সব সময় উপলক্ষ খুঁজে বেড়ান নগরবাসী। তাই, ঈদকে কেন্দ্র করে পরিবার-পরিজনদের নিয়ে একটু সময় কাটানোর জন্য সুইমিং পুলমুখী হচ্ছেন নগরবাসী।
ঢাকায় বিনোদনের জন্য গড়ে ওঠা সুইমিং পুলগুলোতে ঈদের ছুটিতে ভিড় লেগেই আছে। সব বয়সী নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোররা ছুটছেন সেখানে। ঈদ উপলক্ষে বিশেষ অফারও দেওয়া হচ্ছে। ঢাকা এবং এর আশেপাশে বেশকিছু ভালো রিসোর্টে সুইমিং পুল আছে। সেখানেও লেগে আছে ভিড়।
সুইমিং পুলগুলোতে দুপুর এবং সন্ধ্যার পর ভিড় বেশি হয়। তাই, নিরিবিলি সাঁতার কাটার আদর্শ সময় হিসেবে অনেকেই সকালবেলাকে বেছে নিচ্ছেন। এতে বেশি সময় ধরে পানিতে থাকার সুযোগ পাওয়া যায়।
বুধবার সকালে নগরীর দক্ষিণ বণশ্রীর এম ব্লকের ৪ নম্বর রোডে অবস্থিত রায়া সুইমিং পুলে সপরিবারে এসেছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী কামরুজ্জামান। ঘণ্টাখানেক পানিতে দাপাদাপি করে বাড়ি ফেরার সময় কথা হয় তার সঙ্গে।
কামরুজ্জামান বলেন, ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে বাচ্চা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে সুইমিং পুলে এসেছি। বাচ্চারা খুব আনন্দ করেছে। পরিবারের অন্য সদস্যরাও মজা পেয়েছে। আমাদের মতোই ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে অনেকেই সুইমিং পুলে সাঁতার কাটতে আসছেন।
কথা হয় রায়া সুইমিং পুলের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা আব্দুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, সপ্তাহে সাত দিনই সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত আমাদের সুইমিং পুল খোলা থাকে। ঈদের দিনও আমরা খোলা রেখেছি। আমাদের এখানে পুরুষ ও নারীদের জন্য পৃথক পুল আছে। সুইমিংয়ের জন্য প্রতি ঘণ্টায় ৩০০ টাকা করে চার্জ নেওয়া হয়। এখানে সাঁতার শেখানোর জন্য প্রশিক্ষণ কোর্স রয়েছে।
আফতাবনগরে অবস্থিত জেকে সুইমিং পুলের ফোন অপারেট নাহিদা জানান, এখানে ছোট-বড় সকলের জন্য সাঁতার কাটার ব্যবস্থা আছে। ঈদের ছুটিতে অনেকেই সপরিবারে সাঁতার কাটতে আসছেন। আমাদের সুইমিং পুল প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রাখা হয়।
রাজধানীর মোহম্মদপুরের বসিলায় জলতরঙ্গ সুইমিং পুল, উত্তরার ১৫ নম্বর সেক্টরে জমজম সুইমিং কমপ্লেক্স এবং খিলক্ষেত আশিয়ান সিটি মেডিকেল কলেজের পাশে হান্নানস সুইমিং পুলে ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে।
ঢাকা/এনটি/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আনন দ উপভ গ পর ব র আম দ র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’
গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।
বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’
গণজমায়েতে র্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।