ঈদের আনন্দকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে তুলতে সাধারণ মানুষ ভিড় করছেন বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। আশপাশের এলাকা ছাড়াও দূর-দূরান্ত থেকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ আসছেন আনন্দময় সময় কাটাতে। ঈদের দিন থেকে, গতকাল মঙ্গলবার ও আজ বুধবার নরসিংদী ড্রিম হলিডে পার্কে রয়েছে দর্শনার্থীদের ব্যাপক উপস্থিতি।

অন্য সময়ের মতো এবারও দর্শনার্থীদের মূল আকর্ষণ ওয়াটার কিংডম ও ক্যাজি রিভার। নেচে গেয়ে হৈ-হুল্লোড়ে মেতে উঠেছে তারা। নগরজীবনের কোলাহল থেকে বেরিয়ে একটু বিনোদন আশায় পরিবার নিয়ে ছুটে এসেছেন অনেকে। ডিজে মিউজিকের তালে তালে ওয়াটার কিংডমে পানির ঢেউয়ে দুলে নেচে গেয়ে আনন্দ ফূর্তি করেন শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণীসহ সব বয়সের মানুষ। চলছে হৈ-হুল্লোড়, দাপাদাপি আর আনন্দ-চিৎকার। নগরীর বাইরের এসে নরসিংদীর ড্রিম হলিডে পার্কে মনের আনন্দে চলছে ঈদ উদযাপন। এ ছাড়া এখানে এলেই দেখা মিলবে বাংলাদেশে এই প্রথম সুনামি আদলে ‘ক্যাজি রিভার’ নামে নতুন রাইডে, এখান দেখা মিলবে পদ্মা সেতুতে চলছে স্কাই ট্রেন।

উৎসবের এই আড্ডায় পরিবার পরিজন অনেকেই চড়ছেন প্যাডেল বোটে, ঘুরে ঘুরে দেখছেন ভূতের রাজ্য। এদিকে হিমালয় পর্বতের সাদৃশ্য ফেনটম হিল দেখে মুগ্ধ হচ্ছে অনেকেই।

এখানকার বেশিরভাগ রাইডগুলোতে শিশুদের অংশগ্রহণ ছিলও চোখে পড়ার মতো। শিশুদের পাশাপাশি রাইডে চড়ছেন বড়রাও। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে বিনোদনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার দিকে কড়া নজর রয়েছে আয়োজকদের। প্রায় ১২০ বিঘা জমির ওপর নির্মিত এ পার্কটিতে বুলেট ট্রেন, ওয়াটার বোট, রোলার কোস্টার, সুইং চেয়ার, স্পিডবোট ও ভূতের রাজ্যসহ ২৫টি রাইডে চড়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন সব বয়সী দর্শনার্থী।

নারায়ণগঞ্জ থেকে ঘুরতে আসা মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানান, পরিবারের স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে ড্রিম হলিডে পার্কে ঘুরতে এসেছি। এখনো এখানে অনেক মানুষের ভিড়। তবে সব মিলিয়ে ভালো লাগছে।

ছোট্ট শিশু অংকিতা বলেন, ঘুরতে এসে অনেক ভালো লাগছে। তবে আমি ভূতের বাড়িতে যাব না, ভূতকে আমি ভয় পাই। ট্রেনে চড়ব, স্পিডবোটে ঘুরব।

মিতু সরকার বলেন, শুনেছি, এ পার্কে অনেক ভিড় হয়; তাই ঈদের আনন্দ করতে এখানে এসেছি। এখনো ভিড় আছে। তবে এখানকার পরিবেশ ও রাইডসগুলো অনেক সুন্দর। এখানে এসে পরিবার-পরিজনকে নিয়ে ঈদ আনন্দ করতে পেরে খুবই ভালো লেগেছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার থেকে আসা রাব্বি মোল্লা বলেন, ঈদের ছুটিতে আনন্দ উপভোগ করার জন্য বন্ধুদের নিয়ে এ পার্কে আসা। দৃষ্টিনন্দন পরিবেশে দিন কাটাতে পেরে ভাল লেগেছে। তবে ঈদ উপলক্ষে এখানে বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থীর উপস্থিতি সব দেখে এবারের ঈদটা অন্য রকম অনুভূতি পেলাম।

ড্রিম হলিডে পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রবীর কুমার সাহা বলেন, দর্শনার্থীদের চাহিদার বিষয় বিবেচনায় রেখে প্রতি বছরই নতুন আকর্ষণ রাখার চেষ্টা করি। এবারও পার্ককে আরও আধুনিকায়ন করেছি। ক্যাজি রিভার সুনামির আদলে ব্যতিক্রমী নতুন রাইড সংযোজন রয়েছে। আমি আশা করি, ড্রিম হলিডে পার্কে কেউ যদি আসে তাহলে আর বিদেশে যেতে হবে না। এখানেই দর্শকরা চাহিদা মতো ঈদ আনন্দ উপভোগ করবেন। বাংলাদেশে এই প্রথম সুনামি আদলে ‘ক্যাজি রিভার’ নামে নতুন রাইড সংযোজন করেছি। পার্কটি আন্তজার্তিক মান ধরে রাখার জন্য কাজ করছি। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত খোলা থাকে ড্রিম হলিডে পার্ক। প্রবেশ মূল্য ৩৫০ টাকা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: নরস দ ড র ম হল ড র আনন দ পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে বইমেলায় বিক্রি কম, এখনো আশায় আছেন প্রকাশকেরা

রাজশাহী বিভাগীয় বইমেলার প্রথম তিন দিনে লোকজনের ভিড় থাকলেও বেচাকেনা তেমন হয়নি। এতে অনেক প্রকাশকের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। তবে আগামী কয়েক দিনে বেচাকেনা বাড়বে বলে আশা করছেন প্রকাশকেরা ও আয়োজক কর্তৃপক্ষ।

গত শুক্রবার রাজশাহী জেলা কালেক্টরেট মাঠে ৯ দিনব্যাপী এই বইমেলার উদ্বোধন করা হয়। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায়, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের উদ্যোগে এবং রাজশাহী বিভাগীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এ মেলা চলবে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত। মেলায় ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ৭০টি বেসরকারি প্রকাশনাসহ মোট ৮১টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন বাদে মেলা চলছে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। আর ছুটির দিনে মেলা শুরু হয় বেলা ১১টায়।

উদ্বোধনের আগের দিন বৃষ্টিতে মেলার মাঠ কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। সেই কর্দমাক্ত পরিবেশেই মেলার উদ্বোধন হয়। দর্শনার্থীদের ভোগান্তি কমাতে পরে প্রতিটি স্টলের সামনে ইট বিছিয়ে দেওয়া হয়। এতে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও বিক্রির খরা কাটেনি বলে জানালেন বিক্রেতারা।

গতকাল রোববার সন্ধ্যায় মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের বিভিন্ন অংশে তখনো পানি জমে আছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত মঞ্চের সামনের প্যান্ডেলেও কাদা। সেখানেই কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ও সাহিত্য নিয়ে আলোচনা চলছিল, তবে দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতি ছিল নগণ্য। স্টলের সামনে ইটের সলিংয়ের তৈরি রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন অনেকে। অনেকে বই দেখছেন।

সূর্যোদয় প্রকাশনীর বিক্রেতা রিপন আলী বলেন, প্রথম দিন তো কাদাপানির মধ্যেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। তখনো মানুষ ছিলেন। এখন ইট বিছানোর পর আরও বেশি মানুষ আসছেন, ভিড়ও করছেন, কিন্তু বই কিনছেন খুব কম।

ঐতিহ্য প্রকাশনীর স্টলে কাদার ওপর চেয়ার পেতে বসে থাকতে দেখা গেল বিক্রয়কর্মী ও চিত্রশিল্পী অর্ণব পাল সন্তুকে। তিনি বলেন, মানুষ আসছেন, ঘুরে দেখছেন, কিন্তু বিক্রি নেই বললেই চলে। মেলার ব্যবস্থাপনা আরও ভালো হতে পারত। আরেক বিক্রেতা আবদুল্লাহ হীল বাকি জানালেন, এমনও স্টল আছে, যেখানে সারা দিনে ২০০ থেকে ৩০০ টাকার বইও বিক্রি হচ্ছে না।

তবে হতাশার ভিড়ে আশার কথাও শোনালেন কেউ কেউ। চট্টগ্রাম থেকে আসা নন্দন বইঘর প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী সুব্রত কান্তি চৌধুরী বলেন, বেচাবিক্রি আজ না হোক কাল হবে। মানুষ যে মেলায় এসে বই হাতে নিয়ে দেখছেন, এটাই বড় পাওয়া। এতে তাঁদের মধ্যে বই কেনার আগ্রহ তৈরি হবে।

মেলায় আসা পাঠকদের মধ্যে অবশ্য ভিন্ন চিত্র। দুই সন্তানের জন্য শিশুতোষ বই কিনে এক অভিভাবক বলেন, বাচ্চাদের হাতে বই তুলে দেওয়ার আনন্দটাই অন্য রকম।
মেলা থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ও তারাশঙ্কর বন্দ্যোপ্যাধ্যায়ের বই কিনেছেন মনির হোসেন। তিনি বলেন, মেলায় একসঙ্গে অনেক বই পাওয়া যায়, যা বই কেনার জন্য দারুণ সুযোগ।

রাজশাহী কালেক্টরেট মাঠে বইমেলা উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছে আলোচনা সভা। গতকাল রোববার সন্ধ্যায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ