প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, দেশকে স্বগৌরবের জায়গায় ফেরাতে হলে মেধাবী প্রজন্ম গড়ে তোলার বিকল্প নেই। বই পড়ার মাধ্যমে সুস্থ্য ও মেধাবী প্রজন্ম তৈরি করে আগামীর বাংলাদেশকে সরকার স্বগৌরবে দেখতে চায়।

বুধবার সকালে বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার চাখারের মোতালেব-রাবেয়া স্মৃতি পাঠাগার ও কম্পিউটার ল্যাবে প্রাথমিক স্থায়ী মেডিকেল বুথের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

শফিকুল আলম বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েদের বই পড়ার আগ্রহ দিন দিন কমে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে এই পাঠাগার প্রত্যন্ত এলাকার জন্য সত্যিই একটি মহৎ উদ্যোগ। আমরা চাই সবাই বইয়ের মধ্যে আসুক। বইয়ের মধ্যে আসলে একটি সুস্থ-সুপরিকল্পিত প্রজন্ম গড়ে উঠবে। বাংলাদেশকে তার নিজস্ব গৌরবের জায়গায় ফেরাতে হলে মেধাবী প্রজন্ম গড়ে তোলার বিকল্প নেই। সেই মেধাবী প্রজন্ম গড়ে তুলতে হলে দেশের প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে এই ধরনের পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করে তরুণদের পড়াশোনার আগ্রহ বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, মোতালেব-রাবেয়া স্মৃতি পাঠাগারে নতুন নতুন বইয়ের সংখ্যাও বাড়াতে হবে, আর পাঠকের সংখ্যাও বাড়াতে হবে। তাহলেই তরুণ প্রজন্মের মধ্যে জ্ঞানের পরিধি বাড়বে। আগামীতে তারাই আমাদের নতুন ও সুপরিকল্পিত রাষ্ট্র উপহার দিতে পারবে।

স্থায়ী মেডিকেল বুথের বিষয়ে শফিকুল আলম বলেন, এই বুথের মাধ্যমে স্থানীয়রা প্রথমিক চিকিৎসা বিনামূল্যে নিতে পারবেন। এটিও একটি মহৎ উদ্যোগ। কেননা, আমাদের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে এখনো সরকারিভাবে বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি। তাছাড়া হাসপাতাল দূরে হওয়ায় অনেকেই প্রাথমিক চিকিৎসা না পেয়ে বড় ধরনের রোগের সম্মুখীন হচ্ছেন। এই বুথের প্রথমিক চিকিৎসার মাধ্যমে গ্রামবাসী উপকৃত হবেন বলে আমি আশা করছি।

এদিন বিকালে প্রেস সচিব শফিকুল আলম চাখারের চাউলাকাঠি ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের অফিস ও পাঠাগার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।

চাখারের চালিতাবাড়ী-পূর্ব জিড়ারকাঠি (সিপিজে) সোসাইটির উদ্যোগে আয়োজিত পাঠাগারের সভাপতি গোলাম মোর্শেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বানারীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

মোস্তফা।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ