বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭ শতাংশ শুল্ক নিয়ে যা বললেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব
Published: 3rd, April 2025 GMT
বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশের নামও। বুধবার ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় বিকেলে হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন করে শুল্কারোপের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ট্রাম্পের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বাংলাদেশি পণ্যের ওপর শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩৭ শতাংশ করা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী আরোপ করা এ শুল্ককে ‘বাণিজ্য যুদ্ধ’ হিসেবে আখ্যায়িত করছে অনেক দেশ। এ নিয়ে কথা বলেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড.
বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শফিকুল আলম তার ফেসবুক আইডিতে একটি স্ট্যাটাস দেন। তাতে তিনি লিখেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক পুনর্বিবেচনা করছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড দ্রুত শুল্ক যুক্তিসঙ্গত করার বিকল্পগুলি চিহ্নিত করছে, যা বিষয়টি সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয়।
পোস্টে শফিকুল আলম আরও লেখেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং আমাদের বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য। ট্রাম্প প্রশাসন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করে আসছি। মার্কিন সরকারের সঙ্গে আমাদের চলমান কাজ শুল্ক সমস্যা সমাধানে সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি বাজার যুক্তরাষ্ট্র, যেখানে বছরে প্রায় ৮.৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়, যার বড় অংশই তৈরি পোশাক শিল্পে। নতুন শুল্ক বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশি পোশাক রপ্তানি ব্যাহত হতে পারে, যা অর্থনীতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। তবে শুধু বাংলাদেশের ওপরই নয়, বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপরও শুল্ক বৃদ্ধি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৬%, পাকিস্তানের ওপর ২৯%, চীনের ওপর ৩৪% এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর ২০% শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এতদিন বাংলাদেশি পণ্যের ওপর মার্কিনিদের গড়ে ১৫ শতাংশ করে শুল্ক ছিল। গতকাল বুধবার বাংলাদেশি পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ৩৭ শতাংশ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র জানায়, মার্কিন পণ্যে বাংলাদেশের আরোপিত শুল্ক ছিল ৭৪ শতাংশ।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’