অ্যান্টার্কটিকার কাছে বরফে ঢাকা, জনশূন্য আগ্নেয়গিরিময় দ্বীপগুলোর ওপরও পড়ল ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কের কোপ। ওই সব দ্বীপে বসবাস কেবল পেঙ্গুইনের। তারপরও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট সেসব দ্বীপের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছেন।
অস্ট্রেলিয়ার দূরবর্তী ভূখণ্ড হার্ড দ্বীপ ও ম্যাকডোনাল্ড দ্বীপ পৃথিবীর অন্যতম প্রত্যন্ত অঞ্চল। পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার পার্থ থেকে সেখানে পৌঁছাতে নৌকায় করে দুই সপ্তাহ সময় লাগে। ধারণা করা হয়, একদম জনশূন্য এই দ্বীপে মানুষের শেষ পা পড়েছিল প্রায় এক দশক আগে।

তবু যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউস প্রকাশিত নতুন শুল্কের তালিকায় ‘দেশ’ হিসেবে জায়গা পেয়েছে হার্ড ও ম্যাকডোনাল্ড দ্বীপ।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ আজ বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে বলেন, ‘পৃথিবীর কোনো জায়গা নিরাপদ নয়।’

হার্ড ও ম্যাকডোনাল্ড দ্বীপ ছাড়াও অস্ট্রেলিয়ার মূল ভূখণ্ডের বাইরের আরও কিছু অঞ্চল যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কের তালিকায় আলাদা করে স্থান পেয়েছে। যেগুলোর ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক বসানো হবে।

অস্ট্রেলিয়ার এসব দূরবর্তী ও বিচ্ছিন্ন অঞ্চল সরাসরি স্বায়ত্তশাসিত নয়, তবে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে বিশেষ প্রশাসনিক সম্পর্ক রয়েছে। শুল্ক তালিকায় থাকা অন্যান্য দ্বীপের মধ্যে কোকোস (কিলিং) দ্বীপপুঞ্জ, ক্রিসমাস দ্বীপ ও নরফোক দ্বীপও রয়েছে।

নরফোক দ্বীপটি সিডনি থেকে ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত। সেখানে মাত্র ২ হাজার ১৮৮ জন মানুষের বাস।

২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ৬ লাখ ৫৫ হাজার মার্কিন ডলারের (প্রায় ১০ লাখ ৪০ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার) পণ্য রপ্তানি করেছে নরফোক দ্বীপ। এর মধ্যে ৪ লাখ ১৩ হাজার মার্কিন ডলারের (প্রায় ৬ লাখ ৫৮ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার) চামড়ার জুতা ছিল প্রধান রপ্তানি পণ্য, এ তথ্য দিয়েছে অবজারভেটরি অব ইকোনমিক কমপ্লেক্সিটি।

তবে নরফোক দ্বীপের প্রশাসক জর্জ প্ল্যান্ট এ তথ্যের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘নরফোক দ্বীপ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে কোনো পণ্য রপ্তানি করা অথবা এ দ্বীপে আমদানি করা কোনো পণ্যের ওপর শুল্ক বাধার কথা জানা নেই।’
আজ অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ বলেন, ‘নরফোক দ্বীপের ওপর ২৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ হয়েছে। দ্বীপটির প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, এটি কি সত্যিই যুক্তরাষ্ট্রের বিশাল অর্থনীতির প্রতিযোগী? এতে বোঝা যায়, আসলে পৃথিবীর কোনো জায়গা নিরাপদ নয়।’

হার্ড দ্বীপ ও ম্যাকডোনাল্ড দ্বীপের রপ্তানির তথ্য ধন্দ জাগায়। এসব দ্বীপে একটি মাছ ধরার এলাকা থাকলেও কোনো স্থাপনা বা জনবসতি নেই।

তবু বিশ্বব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্র হার্ড ও ম্যাকডোনাল্ড দ্বীপ থেকে ১৪ লাখ মার্কিন ডলারের (প্রায় ২২ লাখ ৩০ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার) পণ্য আমদানি করেছে, যার প্রায় সবই ছিল ‘যন্ত্রপাতি ও বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম। তবে এসব পণ্য আসলে কী, তা স্পষ্ট নয়।

এর আগের পাঁচ বছরে এই দ্বীপ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি ১৫ হাজার থেকে ৩ লাখ ২৫ হাজার মার্কিন ডলারের মধ্যে ছিল।
এ নিয়ে মন্তব্য জানতে হোয়াইট হাউস, অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং অস্ট্রেলিয়ান অ্যান্টার্কটিক বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিসিএস পরীক্ষার্থীদের জন্য বাস সার্ভিস চালু

৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি বাস সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নিয়েছে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি) শাখা ছাত্রদল। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ঢাকা ও ময়মনসিংহের পরীক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের নির্বিঘ্নে পৌঁছানোর লক্ষ্যে এ বিশেষ যাতায়াত সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে শাখা ছাত্রদলের কর্মী নাফিস ইকবাল পিয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ফেসবুক গ্রুপে এ তথ্য জানিয়ে পোস্ট দেন। একইসঙ্গে শাখা সভাপতি সাগর নাইম ও সাধারণ সম্পাদক সাজিদ ইসলাম দীপুও তাদের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে পোস্ট দিয়ে পরীক্ষার্থীদের এ সুবিধা গ্রহণের আহ্বান জানান।

আরো পড়ুন:

ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনী রোডম্যাপের দাবিতে মানববন্ধন

বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান অর্জন ও বিতরণের জায়গা: ইউজিসি চেয়ারম্যান

ছাত্রদল জানিয়েছে, ক্যাম্পাস থেকে দুটি বাস ছাড়বে। একটি ঢাকা রুটে এবং অপরটি ময়মনসিংহ রুটে যাবে। প্রতিটি বাসে ৫০ জন করে মোট ১০০ জন শিক্ষার্থী এই ফ্রি সার্ভিসের আওতায় যাতায়াত করতে পারবেন। এজন্য শিক্ষার্থীদের অবশ্যই আগাম রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গুগল ফর্মের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করা যাবে। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া কেউ এই সার্ভিসের সুবিধা নিতে পারবেন না।

শিক্ষার্থীদের জন্য এ উদ্যোগ ইতোমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে প্রশংসা কুড়িয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক শিক্ষার্থী পোস্ট দিয়ে ছাত্রদলের এ পদক্ষেপকে ‘শিক্ষার্থীবান্ধব ও সময়োপযোগী উদ্যোগ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

শাখা সভাপতি সাগর নাইম তার পোস্টে বলেন, “প্রতি বছর বিসিএসে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সাফল্যের আলো ছড়িয়ে দেন। আমরা চাই এ সুনাম আরো দূরে ছড়িয়ে পড়ুক, আরো উজ্জ্বল হোক। এ ধারাবাহিক সাফল্যের পথে আপনাদের পাশে থাকতে, ভালোবাসা ও সম্মান জানাতে মাভাবিপ্রবি ছাত্রদল ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি বিশেষ বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা করেছে।”

এ বিষয়ে শাখা সাধারণ সম্পাদক সাজিদ ইসলাম দীপু বলেন, “জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সবসময়ই শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করে থাকে। গত বিসিএসে আমাদের বড় ভাই বিসিএস প্রশাসনে প্রথম হয়েছেন। এটি শুধু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নয়, সারা দেশের জন্যই গর্বের বিষয়। সেই সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখতে এবং শিক্ষার্থীদের কল্যাণে আমরা এবার পরীক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি বাস সার্ভিস চালু করেছি।”

তিনি বলেন, “বিশেষ করে অনেক নারী শিক্ষার্থী আছেন, যারা ক্যাম্পাস থেকে পরীক্ষাকেন্দ্র অনেক দূরে হওয়ায় অংশ নিতে পারেন না। আবার অনেকে যানবাহন না পেয়ে দেরিতে কেন্দ্রে পৌঁছান। আমরা চাইনি কেউ যেন যাতায়াত সমস্যার কারণে বিসিএস পরীক্ষায় পিছিয়ে পড়েন। তাই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ভাইয়ের সহায়তায় আমরা এ বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা করেছি।”

ঢাকা/আবিদ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ