শুরুতেই যে কারণে বড়সড় ধাক্কা খায় ‘সিকান্দার’
Published: 3rd, April 2025 GMT
কয়েক বছর ধরে সালমান খান অভিনীত সিনেমার বাজার পড়তির দিকে। মাঝখানে একই অবস্থা হয়েছিল শাহরুখ খানের। ২০২৩ সালে টানা তিন সুপারহিট সিনেমা দিয়ে প্রবলভাবে ফিরেছেন তিনি। সালমানের ক্ষেত্রে সেটি হয়নি। অবস্থা এতটাই খারাপ, সালমানের পেছনে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করতেও সাহস পাচ্ছেন না প্রযোজকেরা। এ কারণে নাকি অ্যাটলির সঙ্গে সালমানের সিনেমা আপাতত স্থগিত হয়েছে।
সে যা-ই হোক, এবার আসা যাক ‘সিকান্দার’ প্রসঙ্গে। ঈদ উপলক্ষে গত ৩০ মার্চ মুক্তি পেয়েছে সালমান খানের ‘সিকান্দার’। বিগ বাজেটের এ সিনেমা নিয়ে তুমুল উত্তেজনা বলিউড ভাইজানের ভক্তদের মধ্যে। অগ্রিম বুকিংয়ের ক্ষেত্রেও নজির গড়েছিল সিনেমাটি। স্বাভাবিকভাবেই মেগা ওপেনিংয়ের অপেক্ষায় ছিল টিম সিকান্দার। কিন্তু মুক্তির আগেই বড়সড় ধাক্কা খেল সিকান্দার টিম।
জানা গেছে, শনিবার গভীর রাতে সিনেমাটি অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে। একটি-দুটি নয়, ৬০০টি ওয়েবসাইটে সিনেমাটি ফাঁস হয়েছে। টেলিগ্রামের একাধিক গ্রুপে ঘুরে বেড়াচ্ছে সিকান্দারের ডাউনলোড লিঙ্ক। বিষয়টি নিয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান নাদিয়াদওয়ালা গ্র্যান্ডসন এন্টারটেইনমেন্ট।
সিকান্দার পরিচালনা করেছেন এ আর মুরুগাদোস। তাঁর পরিচালনায় এটি প্রথম কাজ সালমানের। আরেক প্রথম, এতে রাশমিকা মান্দানা প্রথমবারের মতো হয়েছেন সালমানের নায়িকা। চলুন এবারে জেনে নিই সিনেমায় কী আছে?
‘টাইগার ৩’ সিনেমার প্রায় দু’বছর পর ফের ভাইজানকে বড়পর্দায় দেখার আগ্রহ ছিল তুঙ্গে। সালমানের সিনেমায় আবার উপরি পাওনা ছিল রাশমিকা মন্দানার উপস্থিতি। প্রথমবার তাদের অনস্ক্রিন রোমান্সের জন্য উদগ্রীব ছিলেন অনুরাগীরা। পরিচালক এ আর মুরুগাদোস এক্কেবারে চেনা অ্যাকশন ছকে শুরু ছবি করেছেন।
আকাশপথে মন্ত্রীর ছেলে প্রতীক বব্বরকে ‘সবক’ শেখানোর দৃশ্য দিয়ে পর্দায় আসেন সালমান। তারপরই আগমন রাজকোটের ‘রানী’ রাশমিকার। তিনি রাজকোটের শেষ রাজা সঞ্জয় রাজকোটের স্ত্রী। গল্পের এক এবং একমাত্র টুইস্ট রানীর মৃত্যু। এখান থেকে ঘুরে যায় গল্পের মোড়। রানী মৃত্য়ুর আগে ফুসফুস, হার্ট এবং চক্ষু দান করে গিয়েছিল। পত্নী বিয়োগের পর স্ত্রীকে ‘ফিরে পেতে’ সেই মানুষগুলোর সন্ধানে বেরিয়ে পড়ে ভেঙে পড়া ‘রাজা সাহেব’। তাতেই নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় তাকে। গল্পের শেষে সিকান্দার শুধু রাজকোটের রাজা না, মানুষের মনেরও রাজা হয়ে ওঠে।
সিকান্দার ছবির জমকালো ট্রেলার লঞ্চের সময়, সালমান খান আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেছিলেন, উৎসব হোক বা না হোক, তাঁর অনুগত ভক্তরা সবসময় নিশ্চিত করেন যে তাঁর ছবি ১০০ কোটির ব্যবসা ছাড়িয়ে যাবে এবং এবার এটি ২০০ কোটি টাকার ব্যবসা ছাড়িয়ে যাবে। তিনি এলেন। দেখলেন। মন জয়ও করলেন। শুধুই সালমান খান হিসেবে। কারণ তাঁর ছবির গল্প ভক্তদের মন জয় করতে ব্যর্থ। স্টারডম, পর্দায় লার্জার দ্যান লাইফ, মারকাটারি অ্যাকশন দেখতে দর্শকরা নিঃসন্দেহে ভালোবাসেন। কিন্তু ওই যে, আসল নায়ক তো ছবির গল্পই। সেখানে দুর্বল ‘সিকান্দার’।
শুধু সিনেমার কাহিনি নয়, দুর্বল ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক এবং আরও অনেক কিছু নিয়ে দর্শক খুব হতাশ। সোশ্যাল মিডিয়া হতাশ ভক্তদের প্রতিক্রিয়ায় ভরে উঠেছে, যারা দাবি করছেন যে সিকান্দারে কোনো আকর্ষণীয় গল্প নেই।
কেউ কেউ এটিকে সালমানের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে খারাপ ছবিও বলছেন। যদিও সালমান খানের তারকা শক্তি সবসময় দর্শকদের আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে, এবার মনে হচ্ছে তাঁর সবচেয়ে অনুগত ভক্তরাও সিকান্দার ছবিতে তাঁর অভিনয়কে সমর্থন করতে হিমশিম খাচ্ছেন। অনেকেই তাঁর অভিনয়ের সমালোচনা করেছেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
প্রথমবার বিগ ব্যাশে বাবর আজম
বিশ্ব ক্রিকেটে ব্যাট হাতে বহুবার তোলপাড় করা বাবর আজম এবার অস্ট্রেলিয়ার জমজমাট বিগ ব্যাশ লিগে (বিবিএল) পা রাখতে যাচ্ছেন। দীর্ঘদিন গুঞ্জনের পর অবশেষে এই পাকিস্তানি তারকাকে নিজেদের স্কোয়াডে টেনে নিয়েছে সিডনি সিক্সার্স। নতুন মৌসুমে (২০২৫) তাকে দেখা যাবে গোলাপি জার্সিতে।
এটাই বাবরের প্রথমবারের মতো বিগ ব্যাশে খেলার অভিজ্ঞতা হতে যাচ্ছে। সিডনি সিক্সার্সের সঙ্গে তার এই চুক্তিটি হয়েছে প্রি-সাইনিং অপশনের মাধ্যমে, যেখানে প্রতিটি দল আন্তর্জাতিক ড্রাফট শুরুর আগেই একজন বিদেশি ক্রিকেটারকে দলে নিতে পারে। ১৯ জুন শুরু হতে যাওয়া আন্তর্জাতিক ড্রাফটের আগেই সিক্সার্স বাবরের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি সম্পন্ন করে।
দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাবরের মতো বিশ্বমানের অভিজ্ঞ একজন টপ অর্ডার ব্যাটারকে পাওয়ার অর্থই হলো দলে গভীরতা ও ভারসাম্য বাড়ানো। এই তারকার সঙ্গে একই দলে থাকছেন স্টিভ স্মিথ, শন অ্যাবটের মতো অভিজ্ঞ অজি খেলোয়াড়রা, যা দলের শক্তিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে।
গত মৌসুমে একমাত্র সিডনি সিক্সার্সই ছিল এমন দল, যারা কোনো বিদেশি তারকাকে আগেভাগে দলে নেয়নি। এবার তারা সেই ঘাটতি পূরণ করল বাবরের মতো একজন ক্রিকেট সেনসেশনকে নিয়ে।
তবে বাবরের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে অনেকবার। পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি দলে তার জায়গা এখন অনিশ্চিত, ব্যাটেও অনুজ্জ্বল সময় কাটছে। তবু, অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে নতুন এই চ্যালেঞ্জ বাবরের জন্য এক নতুন দরজা খুলে দিতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।
চুক্তির পর নিজের প্রতিক্রিয়ায় বাবর জানান, “এটা আমার জন্য দারুণ এক সুযোগ। বিগ ব্যাশ বিশ্বের অন্যতম সেরা টি-টোয়েন্টি লিগ এবং সিডনি সিক্সার্স একটি সফল ফ্র্যাঞ্চাইজি। এই দলে খেলার সুযোগ পেয়ে আমি গর্বিত। আমি চাই দলের জয়ে অবদান রাখতে, ভক্তদের ভালোবাসা কুড়াতে এবং এই অভিজ্ঞতা আমার পরিবারের সঙ্গে ভাগ করে নিতে।”
অস্ট্রেলিয়ায় বাবরের প্রথম আগমনকে ঘিরে ইতোমধ্যেই পাকিস্তানি ভক্তদের মধ্যে উচ্ছ্বাসের জোয়ার বইছে। অনেকেই বলছেন, হয়তো এটাই সেই ‘নতুন শুরু’, যেটা বাবরের ক্যারিয়ার আবার উজ্জ্বল করে তুলতে পারে।
ঢাকা/আমিনুল