শুল্ক থেকে মুক্তি চাইলে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য তৈরি করুন: ট্রাম্প
Published: 3rd, April 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল বুধবার বিকেলে বিভিন্ন দেশের ওপর নতুন করে ব্যাপক হারে শুল্কারোপ করেছেন। সব বাণিজ্যিক অংশীদার দেশের ওপর ন্যূনতম ১০ শতাংশ শুল্কারোপের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি অনেক দেশের ওপর ব্যাপক হারে পাল্টা শুল্কও বসিয়েছেন।
নতুন মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর এবার সবচেয়ে বড় আকারের শুল্কারোপের ঘোষণা দিলেন ট্রাম্প। নতুন শুল্ক ঘোষণা করার সময় ট্রাম্প বলেন, এই শুল্ক যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক অংশীদারদের কয়েক দশকের অন্যায্য সম্পর্ককে সঠিক পথে আনবে এবং অন্যান্য দেশগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতারণা করা থেকে বিরত রাখবে।
চলতি বছরের শুরুতে চীনের সব পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তার ওপর এবার নতুন করে আরও ৩৪ শতাংশ শুল্কারোপ করা হয়েছে। ভিয়েতনাম থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর বসানো হয়েছে অতিরিক্ত প্রায় ৫০ শতাংশ শুল্ক।
গতকাল হোয়াইট হাউসের বাইরে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘যদি আপনি চান আপনার শুল্কের হার শূন্য হোক, তবে আপনি আপনার পণ্যটি যুক্তরাষ্ট্রেই তৈরি করুন।’
গতকালের ঘোষণায় উল্লেখযোগ্যভাবে মেক্সিকো ও কানাডার নাম অনুপস্থিত ছিল। দেশ দুটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি রয়েছে। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে দেশ দুটির ওপর এই শুল্কের প্রভাব পড়বে না। ট্রাম্পের এই শুল্কনীতি বিশ্বের সব দেশের ওপরই কমবেশি প্রভাব ফেলবে। কানাডা ও মেক্সিকোর ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
এর আগে যদিও এ দুই দেশের পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক আরোপ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে বিদেশে তৈরি গাড়িও আছে। আজ বৃহস্পতিবার রাত থেকে এ শুল্ক কার্যকর হবে। উদাহরণস্বরূপ, কানাডা গাড়ি ও অটোমোবাইল পণ্যের বড় উৎপাদক, যা যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা হয়। এখন থেকে এসব দেশ থেকে আমদানি করা প্রস্তুত গাড়ি ২৫ শতাংশ শুল্কের মুখে পড়বে।
গুরুত্বপূর্ণ যে কয়েকটি দেশ ও অঞ্চলের ওপর সর্বোচ্চ হারে যে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে ইইউ (২০ শতাংশ), চীন (৩৪ শতাংশ), জাপান (২৪ শতাংশ), ভিয়েতনাম (৪৬ শতাংশ), দক্ষিণ কোরিয়া (২৬ শতাংশ), তাইওয়ান (৩২ শতাংশ), ভারত (২৭ শতাংশ), সুইজারল্যান্ড (৩২ শতাংশ), থাইল্যান্ড (৩৭ শতাংশ) ও মালয়েশিয়া (২৪ শতাংশ)।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’