Samakal:
2025-11-03@16:50:44 GMT

রিয়ালের নজরে স্কালোনি

Published: 3rd, April 2025 GMT

রিয়ালের নজরে স্কালোনি

এই জুলাই পর্যন্তই তাঁর সঙ্গে চুক্তি আছে রিয়াল মাদ্রিদের। ক্লাব বিশ্বকাপের পর কার্লো আনচেলত্তির সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করা হবে কিনা, তা এখন নিশ্চিত নয়। তবে এরই মধ্যে একটি গুঞ্জন বেশ ডালপালা মেলেছে। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী কোচ লিওনেল স্কালোনিকে নাকি কোচ হিসেবে চাইছে রিয়াল মাদ্রিদ কর্তৃপক্ষ। ইউরোপের দলবদলের জনপ্রিয় সাইট ‘ফিসহাজেস’-এর খবর অন্তত এমনই। 

হ্যাঁ, এটি জেনেই যে স্কালোনি ২০২৬ বিশ্বকাপ পর্যন্ত আর্জেন্টিনার কোচের দায়িত্ব পালন করবেন। তাঁর সেই দায়িত্ব শেষেই নাকি স্কালোনিকে চাইছে রিয়াল মাদ্রিদ। হয়তো মাঝের এই একটি মৌসুম আনচেলত্তির সঙ্গেই চুক্তি নবায়ন করতে পারে। নয়তো রিয়ালের ঘরের ছেলে হিসেবে পরিচিত জাভি আলানসোর সঙ্গেও চুক্তি করতে পারে। কিন্তু ভবিষ্যতে স্কালোনিকেই চাই রিয়ালের।

কেন স্কালোনিকে পছন্দ রিয়ালের? তাঁর কিছু যুক্তিও তুলে ধরেছে ওই ওয়েব পোর্টালে। কোচিং কৌশলে নিজের দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া হাইপ্রোফাইল দলকে ম্যানেজ করার ব্যাপারেও সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছেন। সেই সঙ্গে ড্রেসিংরুমে তারকা সামলানোর মতো ব্যাপারও তিনি ঠান্ডা মাথায় করতে পারেন। স্কালোনির এসব গুণের কারণেই নাকি রিয়াল মাদ্রিদের পরিচালনা বোর্ডের অনেকে বছর ছেচল্লিশের এই কোচকে নজরে রেখেছেন। তা ছাড়া গত বিশ্বকাপের পরপর স্কালোনিও ইঙ্গিত দিয়েছিলেন জাতীয় দলের কোচিং ছেড়ে ইউরোপিয়ান কোনো ক্লাব ফুটবলের দায়িত্ব নিয়ে তিনি নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে চান। 

এর ওপর আনচেলত্তির সঙ্গেও তিন দফা চুক্তি করার পর তাঁকে ঘিরেও আগ্রহ কমেছে রিয়াল মাদ্রিদের। বছর পঁয়ষট্টির এই ইতালিয়ান কোচ আবার স্প্যানিশ আদালতে কর ফাঁকির অভিযোগ নিয়ে মামলা-মোকদ্দমায় জড়িয়েছেন। গতকালই তাঁকে মাদ্রিদের প্রাদেশিক আদালতে গিয়ে ৪০ মিনিটের শুনানিতে হাজিরা দিতে হয়েছে। স্পেনের কর কার্যালয় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে। বছর দশেক আগে তিনি যখন মাদ্রিদের কোচ ছিলেন, তখন ইমেজ স্বত্ব হিসেবে ১০ লাখ ইউরোর বেশি আয়ের ওপর কর ফাঁকি দিয়েছিলেন। 

২০১৪-১৫ সালে ট্যাক্স রিটার্নে শুধু ক্লাবের বেতনের কথাই উল্লেখ করেছিলেন; চেপে গিয়েছিলেন ইমেজ স্বত্ব থেকে আয়ের কথা। সে কারণে গত মার্চে স্প্যানিশ আদালত তাঁকে ৪ বছর ৯ মাসের কারাদণ্ড ও ৩২ লাখ ইউরো জরিমানা করেন। যদিও গতকাল আদালতে দাঁড়িয়ে নিজের ভুল স্বীকার করে নেন আনচেলত্তি। ‘আমি ভেবেছিলাম, এটি স্বাভাবিক। কারণ, সে সময় সব খেলোয়াড় ও কোচ একই কাজ করেছিলেন।’ 

অতীতে মেসি-রোনালদোর মতো তারকার বিরুদ্ধেও এমন অভিযোগ এনেছিল স্প্যানিশ কর বিভাগ। যদিও তারা আদালতের বাইরে জরিমানা দিয়ে তা মিটিয়ে নিয়েছিলেন। তবে আনচেলত্তির এই আদালতে জড়িয়ে পড়ার ব্যাপারটি আর টেনে নিতে চাইছে না রিয়াল মাদ্রিদ কর্তৃপক্ষ। তাই আগামী মৌসুমের জন্য নতুন কোচিং স্টাফ খুঁজছে তারা। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আর জ ন ট ন ব শ বক প

এছাড়াও পড়ুন:

নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলোর সমন্বয় ছাড়া আর্থিক খাতের সংস্কার টেকসই হবে না

নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় ছাড়া আর্থিক খাতের সংস্কার টেকসই হবে না। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) নিয়মিত সভা করে বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। দীর্ঘমেয়াদি পুঁজির জোগান ও ব্যাংকের মূলধন কীভাবে বাড়ানো যায়, সে বিষয়ে রূপরেখা তৈরি করে বাস্তবায়ন করতে হবে। মূলধন জোগান দেওয়া ছাড়া শুধু সংকটে পড়া ব্যাংক নয়, ভালো ব্যাংকগুলোকেও ভুগতে হতে পারে।

‘বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে আস্থা পুনরুদ্ধার: মূলধন এখন কেন সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় এমন অভিমত উঠে আসে। পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে এই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী, ব্যাংকার, পুঁজিবাজারের অংশীজনেরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সঞ্চালনা করেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এম মাসরুর রিয়াজ।

বক্তারা বলেন, ব্যাংকে পর্যাপ্ত মূলধন হলো আর্থিক স্থিতিশীলতার ভিত্তি, যা আমানতকারীদের সুরক্ষা দেয়, তারল্য বজায় রাখে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা টিকিয়ে রাখে।

এম মাসরুর রিয়াজ বলেন, ‘আমাদের জাতীয় বিনিয়োগ কৌশল নেই। ফলে বিনিয়োগ বাড়াতে যেসব বাধা রয়েছে, সেগুলোর সমাধান হচ্ছে না। বিনিয়োগ বাড়াতে নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলোও বিভিন্ন বাধা তৈরি করে রেখেছে। এসব দূর করা জরুরি। ব্যাংক থেকে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ বন্ধ করে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ তুলতে হবে। ব্যাংকের মূলধন বাড়াতে আন্তর্জাতিক চর্চা অনুযায়ী নতুন পথের সন্ধান করতে হবে।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের (এমটিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, আর্থিক স্থিতিশীলতা ও আস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য মূলধন বাড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দুর্বল পরিচালন ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে ব্যাংক খাতে ঝুঁকি বেড়ে গেছে। গত বছরের ৫ আগস্টের পর প্রকৃত চিত্র বের হয়ে আসছে। আগে যে ভুল হয়েছে, তা শোধরাতে হবে। এ জন্য নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় খুবই জরুরি। তবে সব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।

প্রাইম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হাসান ও. রশিদ বলেন, ব্যাংকের শেয়ারধারণে ২ শতাংশ কোনো ইস্যু নয়। সমস্যা হলো সুশাসন ছিল না। একটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে এক পরিবার থেকে একজনের বেশি পরিচালক না দিলেই হয়। খেলাপি ঋণ আদায়ে আইনি কাঠামো শক্তিশালী করা দরকার। ব্যাংকের মূলধন বাড়াতে আর বন্ড নয়, শেয়ারবাজার থেকে টাকা তুলতে হবে। এ জন্য নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলোকে এক টেবিলে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে।

আল–আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক আবদুল ওয়াদুদ বলেন, নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলোর মধ্যে যে শীতল যুদ্ধ চলে, তার অবসান হওয়া দরকার। এনআই অ্যাক্টে মামলা হলে শুনানির তারিখ পেতে এক বছর পর্যন্ত সময় লেগে যাচ্ছে। এতে খেলাপি ঋণ আদায়ে সমস্যা হচ্ছে। ব্যাংকের মূলধনে বাড়াতে দেশের পাশাপাশি বিদেশি তহবিলের দিকেও নজর দিতে হবে। বিদেশ থেকে এখনো কম খরচে তহবিল পাওয়া সম্ভব। এ জন্য সরকারকে ভূমিকা রাখতে হবে।

সিটি ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আগে অনেক ভালো নিয়মকানুন ছিল। আমরা ধীরে ধীরে তা থেকে সরে এসেছি। সুদের হারে ৬/৯–এর মতো তত্ত্ব চালু করে আমরা সারা বিশ্বকে শিখিয়েছি। এর প্রতিদান এখন আমরা পাচ্ছি। এ জন্য আন্তর্জাতিক চর্চা মেনে চলতে হবে। যেসব ব্যাংকে মূলধন জোগান দিয়েও ঠিক করা যাবে না, সেগুলোতে টাকা ঢালা ঠিক হবে না। যেসব ব্যাংক ঠিক হওয়া সম্ভব সেগুলোর এবং ভালো ব্যাংকগুলোর মূলধন বাড়াতে হবে।’ নিয়ন্ত্রক সংস্থার বাধার কারণ দেশে নতুন আর্থিক পণ্য চালু করা যায় না বলে জানান তিনি।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, মূলধন বাড়াতে সরকারের গ্যারান্টি–নির্ভর বন্ড চালু করতে হবে। তবে দেশের মানুষের বন্ডে বিনিয়োগের অভিজ্ঞতা ভালো না। ১৯৯৫ সালে চালু হওয়া বন্ডের টাকা এখনো ফেরত পাওয়া যায়নি। ব্যাংকগুলোর বন্ড এখন ক্লাব নির্ভর হয়ে গেছে। এক ব্যাংকের বন্ড অন্য ব্যাংক কিনছে। বন্ডে বিনিয়োগে ৩০ শতাংশ উদ্যোক্তাদের কিনতে বলা হয়েছে, এর মাধ্যমে তাদের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

হোদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোম্পানির সিনিয়র পার্টনার এ এফ নেছারউদ্দিন বলেন, ব্যাংক খাতে এই দুরবস্থার জন্য প্রধানত দায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক একীভূতকরণই যথেষ্ট নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদে টেকসই হওয়াটা নিশ্চিত করতে সময়োপযোগী সংস্কার, স্বচ্ছ প্রতিবেদন প্রকাশ, স্বতন্ত্র মূল্যায়ন এবং একটি বিশ্বাসযোগ্য মূলধন পুনর্গঠন কাঠামো দরকার।

সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের ব্যবস্থাপনা অংশীদার সৈয়দ আফজাল হাসান উদ্দিন বলেন, ধীর আইনি প্রক্রিয়া বিনিয়োগকারীদের আস্থা ক্ষুণ্ন করছে। খেলাপি ঋণ পুনরুদ্ধার এবং বাংলাদেশের আর্থিক ব্যবস্থায় বিনিয়োগকারীদের শক্তিশালী আস্থা নিশ্চিত করার জন্য কার্যকরী বাণিজ্যিক আদালত দরকার। যারা অর্থ তছরুপ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে দেওয়ানি মামলা দেওয়া হচ্ছে। অথচ তাদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার ও খেলাপির মামলা দিয়ে শেয়ার বাজেয়াপ্ত করলে কিছুটা ফলাফল পাওয়া যেত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ