এই জুলাই পর্যন্তই তাঁর সঙ্গে চুক্তি আছে রিয়াল মাদ্রিদের। ক্লাব বিশ্বকাপের পর কার্লো আনচেলত্তির সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করা হবে কিনা, তা এখন নিশ্চিত নয়। তবে এরই মধ্যে একটি গুঞ্জন বেশ ডালপালা মেলেছে। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী কোচ লিওনেল স্কালোনিকে নাকি কোচ হিসেবে চাইছে রিয়াল মাদ্রিদ কর্তৃপক্ষ। ইউরোপের দলবদলের জনপ্রিয় সাইট ‘ফিসহাজেস’-এর খবর অন্তত এমনই।
হ্যাঁ, এটি জেনেই যে স্কালোনি ২০২৬ বিশ্বকাপ পর্যন্ত আর্জেন্টিনার কোচের দায়িত্ব পালন করবেন। তাঁর সেই দায়িত্ব শেষেই নাকি স্কালোনিকে চাইছে রিয়াল মাদ্রিদ। হয়তো মাঝের এই একটি মৌসুম আনচেলত্তির সঙ্গেই চুক্তি নবায়ন করতে পারে। নয়তো রিয়ালের ঘরের ছেলে হিসেবে পরিচিত জাভি আলানসোর সঙ্গেও চুক্তি করতে পারে। কিন্তু ভবিষ্যতে স্কালোনিকেই চাই রিয়ালের।
কেন স্কালোনিকে পছন্দ রিয়ালের? তাঁর কিছু যুক্তিও তুলে ধরেছে ওই ওয়েব পোর্টালে। কোচিং কৌশলে নিজের দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া হাইপ্রোফাইল দলকে ম্যানেজ করার ব্যাপারেও সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছেন। সেই সঙ্গে ড্রেসিংরুমে তারকা সামলানোর মতো ব্যাপারও তিনি ঠান্ডা মাথায় করতে পারেন। স্কালোনির এসব গুণের কারণেই নাকি রিয়াল মাদ্রিদের পরিচালনা বোর্ডের অনেকে বছর ছেচল্লিশের এই কোচকে নজরে রেখেছেন। তা ছাড়া গত বিশ্বকাপের পরপর স্কালোনিও ইঙ্গিত দিয়েছিলেন জাতীয় দলের কোচিং ছেড়ে ইউরোপিয়ান কোনো ক্লাব ফুটবলের দায়িত্ব নিয়ে তিনি নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে চান।
এর ওপর আনচেলত্তির সঙ্গেও তিন দফা চুক্তি করার পর তাঁকে ঘিরেও আগ্রহ কমেছে রিয়াল মাদ্রিদের। বছর পঁয়ষট্টির এই ইতালিয়ান কোচ আবার স্প্যানিশ আদালতে কর ফাঁকির অভিযোগ নিয়ে মামলা-মোকদ্দমায় জড়িয়েছেন। গতকালই তাঁকে মাদ্রিদের প্রাদেশিক আদালতে গিয়ে ৪০ মিনিটের শুনানিতে হাজিরা দিতে হয়েছে। স্পেনের কর কার্যালয় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে। বছর দশেক আগে তিনি যখন মাদ্রিদের কোচ ছিলেন, তখন ইমেজ স্বত্ব হিসেবে ১০ লাখ ইউরোর বেশি আয়ের ওপর কর ফাঁকি দিয়েছিলেন।
২০১৪-১৫ সালে ট্যাক্স রিটার্নে শুধু ক্লাবের বেতনের কথাই উল্লেখ করেছিলেন; চেপে গিয়েছিলেন ইমেজ স্বত্ব থেকে আয়ের কথা। সে কারণে গত মার্চে স্প্যানিশ আদালত তাঁকে ৪ বছর ৯ মাসের কারাদণ্ড ও ৩২ লাখ ইউরো জরিমানা করেন। যদিও গতকাল আদালতে দাঁড়িয়ে নিজের ভুল স্বীকার করে নেন আনচেলত্তি। ‘আমি ভেবেছিলাম, এটি স্বাভাবিক। কারণ, সে সময় সব খেলোয়াড় ও কোচ একই কাজ করেছিলেন।’
অতীতে মেসি-রোনালদোর মতো তারকার বিরুদ্ধেও এমন অভিযোগ এনেছিল স্প্যানিশ কর বিভাগ। যদিও তারা আদালতের বাইরে জরিমানা দিয়ে তা মিটিয়ে নিয়েছিলেন। তবে আনচেলত্তির এই আদালতে জড়িয়ে পড়ার ব্যাপারটি আর টেনে নিতে চাইছে না রিয়াল মাদ্রিদ কর্তৃপক্ষ। তাই আগামী মৌসুমের জন্য নতুন কোচিং স্টাফ খুঁজছে তারা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আর জ ন ট ন ব শ বক প
এছাড়াও পড়ুন:
ঘাড়ব্যথার কারণগুলো কী কী, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা জেনে রাখুন
অনেক কারণে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য—
১. সারভাইক্যাল স্পন্ডেলোসিস
২. সারভাইক্যাল স্পন্ডেলোসিস
৩. সারভাইক্যাল রিবস
৪. সারভাইক্যাল ক্যানেল স্টেনোসিস বা স্পাইনাল ক্যানাল সরু হওয়া
৫. সারভাইক্যাল ডিস্ক প্রলেপস বা হারনিয়েশন যেখানে হারনিয়াটেড ডিস্ক নার্ভের ওপর চাপ প্রয়োগ করে
৬. মাংসপেশি, হাড়, জোড়া, লিগামেন্ট, ডিস্ক (দুই কশেরুকার মাঝখানে থাকে) ও স্নায়ুর রোগ বা ইনজুরি
৭. অস্বাভাবিক পজিশনে নিদ্রা
৮. উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদ্রোগ
৯. হাড় ও তরুণাস্থির প্রদাহ এবং ক্ষয়
১০. অস্টিওপরোসিস বা হাড়ের ক্ষয় ও ভঙ্গুরতা রোগ
১১. হাড় নরম ও বাঁকা হওয়া
১২. রিউমাটয়েড-আর্থ্রাইটিস ও সেরো নেগেটিভ আর্থ্রাইটিস
১৩. সারভাইক্যাল অস্টিও-আর্থ্রাইটিস
১৪. ফাইব্রোমায়ালজিয়া
১৫. সামনে ঝুঁকে বা পাশে কাত হয়ে ভারী কিছু তুলতে চেষ্টা করা
১৬. হাড়ের ইনফেকশন
১৭. ডিস্কাইটিস (ডিস্কের প্রদাহ)
১৮. পেশাগত কারণে দীর্ঘক্ষণ ঘাড় নিচু বা উঁচু করে রাখলে ইত্যাদি।
উপসর্গ
ঘাড়ব্যথা কাঁধ, বাহু, হাত ও আঙুল পর্যন্ত ছড়াতে পারে।
কাঁধ, বাহু, হাত ও আঙুলে অস্বাভাবিক অনুভূতি বা অবশ ভাব।
বাহু, হাত ও আঙুল দুর্বল হতে পারে।
সব সময় ঘাড় ধরে বা জমে আছে মনে হয়।
ঘাড়ের মুভমেন্ট করলে, ঘাড় নিচু করে ভারী কিছু তোলার পর তীব্র ব্যথা।
হাঁচি, কাশি দিলে বা সামনে ঝুঁকলে ব্যথা বেড়ে যায়।
ব্যথা মাথার পেছন থেকে শুরু হয়ে মাথার সামনে আসতে পারে।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা
ঘাড়ব্যথার কারণ নির্ণয় করার জন্য প্রয়োজনীয় ল্যাবরেটরি পরীক্ষা হতে পারে—রক্তের বিভিন্ন পরীক্ষা, ঘাড়ের এক্স-রে, এমআরআই বা সিটি স্ক্যান।
চিকিৎসা
চিকিৎসা এর কারণগুলোর ওপর নির্ভর করে।
কনজারভেটিভ চিকিৎসা: ১. ব্যথা বা প্রদাহনাশক ওষুধ ২.ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা। বিভিন্ন ধরনের ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা যেমন ম্যানুয়াল বা ম্যানুপুলেশন থেরাপি, থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রোমেডিকেল ইকুইপমেন্ট যেমন ইন্টারফ্যারেনশিয়াল থেরাপি, অতি লোহিত রশ্মি, মাইক্রোওয়েভ ডায়াথারমি, আল্ট্রাসাউন্ড থেরাপি, শর্টওয়েভ ডায়াথার্মি ও ইন্টারমিটেন্ট ট্র্যাকশন ইত্যাদির মাধ্যমে চিকিৎসা করা যায়।
সার্জিক্যাল চিকিৎসা: মেডিকেল চিকিৎসায় ভালো না হলে, ব্যথা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকলে, স্নায়ু সমস্যা দেখা দিলে, বাহু, হাত ও আঙুলে দুর্বলতা এবং অবশ ভাব দেখা দিলে এবং প্রস্রাব বা পায়খানার নিয়ন্ত্রণ না থাকলে দ্রুত সার্জিক্যাল চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।
ঘাড়ব্যথা প্রতিরোধে করণীয়
১. সামনের দিকে ঝুঁকে দীর্ঘক্ষণ কাজ করবেন না।
২. মাথার ওপর কোনো ওজন নেবেন না।
৩. প্রয়োজনীয় বিশ্রাম নিতে হবে।
৪. শক্ত বিছানায় ঘুমাবেন।
৫. শোবার সময় একটা মধ্যম সাইজের বালিশ ব্যবহার করবেন, যার অর্ধেকটুকু মাথা ও অর্ধেকটুকু ঘাড়ের নিচে দেবেন।
৬. তীব্র ব্যথা কমে গেলেও ঘাড় নিচু বা উঁচু করা, মোচড়ানো (টুইসটিং) বন্ধ করা।
৭. সেলুনে কখনোই ঘাড় মটকাবেন না।
৯. কাত হয়ে শুয়ে পড়বেন না বা টেলিভিশন দেখবেন না।
১০. কম্পিউটারে কাজ করার সময় মনিটর চোখের লেভেলে রাখবেন।
১১. গরম প্যাড, গরম পানির বোতল দিয়ে গরম সেঁক দেবেন।
১২. ঘাড়ের পেশি নমনীয় ও শক্তিশালী হওয়ার ব্যায়াম করতে হবে।
এম ইয়াছিন আলী, চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ঢাকা
আরও পড়ুনকাঁধের ব্যথা বা কাঁধ জমে যাওয়ার কারণ ও করণীয়১৭ এপ্রিল ২০২৫