পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আট দিন ধরে ফল আমদানি বন্ধ থাকায় যশোরে ফলের দাম কেজিতে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়েছে। ঈদের আগে যে আপেল ৩৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়। ফলের অতিরিক্ত দাম বাড়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীরা।

বেনাপোল স্থলবন্দর ও কাস্টমস হাউস সূত্রে জানা গেছে, বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে তিন মাস ধরে আপেল আমদানি বন্ধ আছে। তবে আঙুর, আনার ও কমলা সাত দিন আগেও আমদানি হয়েছে। বেনাপোল বন্দর দিয়ে সর্বশেষ গত ১২ জানুয়ারি ভারত থেকে মাত্র এক ট্রাক আপেল আমদানি হয়। আর ঈদের তিন দিন আগে ২৭ মার্চ ১১ ট্রাক আনার, ১১২ ট্রাক আঙুর ও সাত ট্রাক কমলা আসে। এর মধ্যে এসব ফলের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে।

বৃহস্পতিবার যশোর শহরের দড়াটানা, চৌরাস্তা মোড়, ধর্মতলা ও সোনাপট্টি এলাকার কয়েকটি ফলের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, আপেল ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, আনার ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, আঙুর (কালো) ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, আঙুর (সবুজ) ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, কমলা ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ঈদের আগে আপেল ৩৫০ থেকে ৩৮০ টাকা, আনার ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, আঙুর (কালো) ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা, আঙুর (সবুজ) ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা ও কমলা ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়।

শহরের সোনাপট্টি এলাকার খুচরা ফল বিক্রেতা মনির হোসেন বলেন, রোজার মধ্যে দুই দফায় ফলের দাম বেড়েছে। রোজার শুরুতে আপেল, সবুজ আঙুর ও কমলা ৩২০ থেকে ৩৫০, আনার ও আঙুর (কালো) ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ঈদের কারণে ভারত থেকে ফল আমদানি বন্ধ থাকায় আরেক দফা দাম বেড়েছে। এখন তো কেজিতে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে।

দড়াটানা মোড়ের ফল ব্যবসায়ী ফজলুর রহমান বলেন, ‘আমার ফলের দোকান যশোর জেনারেল হাসপাতালের সামনে। এই এলাকায় আরও অন্তত ৩০টি হাসপাতাল-ক্লিনিক রয়েছে। রোগীদের জন্য ফল বেশি বিক্রি হয়। কিন্তু দাম বেশি হওয়ায় ফল বিক্রি কমে গেছে।’

ভারত থেকে ফল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান গাজী এক্সিমের স্বত্বাধিকারী গাজী শামীম উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, এখন মূলত আঙুরের মৌসুম। ভারত থেকে আঙুর বেশি আসছে। সঙ্গে আনার ও কমলা আসছে অল্প করে। ভারতীয় আপেল আসা বন্ধ হয়ে গেছে। এখন বাজারে যে আপেল পাওয়া যাচ্ছে, তা চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আফ্রিকা ও চায়না থেকে আমদানি করা হচ্ছে। শুল্কায়নসহ প্রতি কেজি সবুজ আঙুর ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা ও কালো আঙুর ৩৫০ থেকে ৩৭০ টাকা, আনার (মিশ্র) ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা মূল্যে আমদানি করা হচ্ছে। দুই দিন পর আমদানি স্বাভাবিক হলে ফলের দাম কমে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

দুজন ক্রেতা অভিযোগ করে বলেন, ঈদের সময় আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে এটা পূর্বঘোষিত বিষয়। আমদানিকারকেরা সেই প্রস্তুতি নিয়েই প্রয়োজনীয় ফল আমদানি করে গুদামে সংরক্ষণ করেন। অতিরিক্ত দামে তো তাঁদের আমদানি করতে হয়নি, তাহলে বাজারে ফলের দাম বাড়বে কেন? অতিরিক্ত দাম নিলেও সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান কোনো দায়িত্ব পালন করছে না। বাজারে সরকারি কোনো অভিযান চালানো হচ্ছে না।

জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা কিশোর কুমার সাহা বলেন, ঈদের জন্য সরকারি কার্যালয় বন্ধ আছে। রোববারের আগে বাজারে নজরদারির সুযোগ নেই। কার্যালয় চালু হলে প্রথমে ফলের বাজারে অভিযান চালানো হবে। আমদানি মূল্যের চেয়ে নির্দিষ্ট মুনাফার বাইরে কেউ বেশি দামে ফল বিক্রি করলে জরিমানা করা হবে। বন্ধের মধ্যে অতিরিক্ত দামে ফল কিনে থাকলে কেউ ক্রয় রসিদসহ অভিযোগ করলে বিক্রেতাকে জরিমানা করার সুযোগ আছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফল আমদ ন ফল র দ ম বন ধ থ ক ৪০০ থ ক ল আমদ ন ৪৫০ ট ক ও কমল

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমার তো একেবারেই গন্ডারের চামড়া’

ভারতীয় বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রীনন্দা শঙ্কর। সৃজিত মুখার্জির ‘এক যে ছিল রাজা’, সুমন ঘোষের ‘বসুপরিবার’-এর মতো সিনেমায় অভিনয় করেছেন এই তারকা। বলা যায়, টলিউডের প্রথম সারির সব নির্মাতার সঙ্গেই কাজ করেছেন এই নৃত্যশিল্পী। 

গত কয়েক বছর ধরে কলকাতা ছেড়ে মুম্বাইয়ে বসবাস করছেন শ্রীনন্দা। সেখানে সংসার, কাজ নিয়ে সময় কাটছে তার। তবে অভিনয়ে নেই। অভিনয় থেকে দূরে থাকার কারণ কী? ফের কী অভিনয়ে ফিরবেন না শ্রীনন্দা?  

ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে আলাপকালে এসব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন শ্রীনন্দা। এ অভিনেত্রী বলেন, “টলিউডে যাদের সঙ্গেই কাজ করেছি, তাদের সঙ্গে এখনো আমার খুব ভালো সম্পর্ক। ভীষণ ভালো অভিজ্ঞতাও বলা চলে। মুশকিল হলো, বাংলা সিনেমায় তেমন বাজেট থাকে না। সত্যিই যদি খুব ভালো সিনেমা হয় বা এমন কোনো পরিচালক আমাকে অফার দেন যেখানে কোনো ভাবেই ‘না’ করব না। আমি নিশ্চয়ই আবার অভিনয়ে ফিরব।”

আরো পড়ুন:

কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি অভিনেত্রী

পরিচালকের আপত্তিকর মন্তব্য নিয়ে মুখ খুললেন শোলাঙ্কি

কিছু কিছু লোকের সঙ্গে কাজ করতে গিয়েও মাঝপথে থেমে গিয়েছেন শ্রীনন্দা। কারণ, তাদের সঙ্গে মানসিকভাবে মেলেনি। তার ভাষায়—“মুম্বাই, কলকাতা বা সাউথ ইন্ডাস্ট্রি যেখানেই হোক না কেন, আমি ভালো মানুষের সঙ্গে কাজ করতে চাই। কেউ এমন চরিত্রে সুযোগ দেন, যেখানে প্রয়োজনে টাকাটা ভুলে গিয়ে শুধু পরিচালকের নাম দেখেই কাজটা করব।”

কিছুটা ইঙ্গিপূর্ণভাবে শ্রীনন্দা বলেন, “কাজের পাশাপাশি আমার সংসারও রয়েছে। কর্মক্ষেত্রে এমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অবশ্যই পেতে হবে, যার জন্য সংসারটা ইগনোর করার কথা ভাবব। অর্থাৎ মনে হবে সংসার ফেলে এই সিনেমাটা আমাকে করতেই হবে। এই বয়েসে একটু কফি খেতে যাবেন? কাজ দেবেন? এগুলো করতে পারব না। সবাই তো চেনেই আমাকে। কাজ দিতে হলে দেবেন।”

সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব শ্রীনন্দা। অনেকে ভেবেছিলেন, এ মাধ্যমে কাজ করে টাকা আয় করে থাকেন। তাদের উদ্দেশে শ্রীনন্দা বলেন, “অনেকেরই ভ্রান্ত ধারণা এটাও আমার পেশা। এখান থেকে অনেক টাকা উপার্জন করা যায়। আমি নিজেও আগে বিষয়টা জানতাম না। পোস্ট করতে করতে বুঝেছি। আমি এখন মুম্বাইয়ে মায়ের সঙ্গে পুরোদমে নাচের স্কুল চালাচ্ছি। এখন মোট ছয়টা ব্রাঞ্চ এবং ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাও নেহাতই কম নয়। সব মিলিয়ে ভালো আছি।”

সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রলের শিকার হন শ্রীনন্দা। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “আমার তো একেবারেই গন্ডারের চামড়া হয়ে গিয়েছে। কয়েকদিন আগে আমাকে একজন বলেছিলেন, ‘রিল মামনি’। আমি আর মা এটা শুনে হেসে গড়িয়ে পড়েছি। মাঝেমধ্যে এসব বেশ মজাও লাগে। তবে যে পরিমাণ ভালোবাসা পাচ্ছি, সেটা খুব মন থেকেই ভক্তরা দিচ্ছেন বলে আমার বিশ্বাস। আমি মনে করি, এটা আমার জীবনে আশীর্বাদ।”

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ