ঈদের ছুটিতে কুমিল্লার শালবন বিহার মানুষের পদচারণে মুখর, বিনোদন পার্কে উপচে পড়া ভিড়
Published: 3rd, April 2025 GMT
পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে কুমিল্লার বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে মানুষের ঢল নেমেছে। কোটবাড়ী এলাকায় অবস্থিত ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন শালবন বিহারে ঈদের দিন থেকেই দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। স্বাভাবিক সময়ে দর্শনার্থীর সংখ্যা ৫০০ থেকে ২ হাজারের মতো থাকলেও ঈদের ছুটিতে এই সংখ্যা ৮ থেকে ১২ হাজার ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
একই অবস্থা ব্যক্তি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত বিনোদনকেন্দ্রগুলোতেও। বৃহস্পতিবার সরেজমিনে ঘুরে শালবন বিহারের পাশাপাশি কুমিল্লায় ব্যক্তি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত সবচেয়ে বড় বিনোদনকেন্দ্র ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্কেও দর্শনার্থীদের ঢল দেখা গেছে। কুমিল্লা নগরের নগর উদ্যান পার্ক বিনা খরচে ঘুরে দেখছেন দর্শনার্থীরা। ঈদের দিন থেকে সেখানে যে পা ফেলার জায়গাও নেই মানুষের ভিড়ে।
কুমিল্লার পর্যটন সংশ্লিষ্টদের মতে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবারের ঈদের ছুটিতে দর্শনার্থীদের পদচারণে মুখর হয়ে উঠেছে বিনোদনকেন্দ্রগুলো। শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষ বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে ভিড় করছেন।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, বিভিন্ন স্থান থেকে আসা দর্শনার্থীদের কোলাহলে মুখর হয়ে উঠেছে শালবন বিহার এলাকা। দর্শনার্থীদের কেউ ঐতিহাসিক এই প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ঘুরে দেখছেন, আবার কেউ ছবি তোলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। আবার অনেক সমবয়সীরা একত্র হয়ে আড্ডায় মেতে উঠছেন। পরিবার-পরিজন, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব সঙ্গে নিয়ে ঈদের আনন্দের জোয়ারে ভাসতে দেখা গেছে সবাইকে।
ওয়াটার পার্কে আনন্দে মেতেছে নানা বয়সী মানুষ। বৃহস্পতিবার দুপুরে কুমিল্লার কোটবাড়ী এলাকায় অবস্থিত ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্কে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ন দনক ন দ র শ লবন ব হ র
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’
গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।
বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’
গণজমায়েতে র্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।